মহাকুম্ভের ‘মোনালিসা’র খ্যাতি নিয়ে বিরক্তি!
প্রয়াগরাজে চলমান মহাকুম্ভ ২০২৫-এ মনোযোগ কেড়ে নিয়েছেন ইন্দোরের এক মেয়ে, মোনালিসা। তাঁর অদ্ভুত সুন্দর চেহারা, গভীর চোখ, অনন্য কথা বলার ভঙ্গি এবং মুক্তোর মালা বিক্রির জন্য তিনি রাতারাতি ইন্টারনেট সেনসেশনে পরিণত হয়েছেন। কিন্তু এই খ্যাতি তাঁর জীবনে সমস্যা সৃষ্টি করছে বলেই তিনি জানিয়েছেন।
খ্যাতি পেয়েও খুশি নন মোনালিসা
ইন্দোরের মেয়ে মোনালিসা, যিনি মহাকুম্ভ মেলায় মুক্তোর মালা বিক্রি করেন, এক ভাইরাল ভিডিওর মাধ্যমে পরিচিতি পান। ভিডিওতে তাঁকে দেখা যায় এক জাপানি মহিলার সঙ্গে কথোপকথন করতে, যেখানে দু’জন তাঁদের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিচ্ছিলেন। কিন্তু এই খ্যাতি যেন তাঁর জন্য আশীর্বাদ না হয়ে অভিশাপে পরিণত হয়েছে। কারণ, দিনে বহু মানুষ তাঁর সঙ্গে ছবি তোলার জন্য ভিড় জমাচ্ছেন। এতে তাঁর ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, আর সেই কারণে তিনি বিরক্ত।
‘মালা বিক্রি তো করতে দাও!’
এক ভাইরাল ভিডিওতে মোনালিসা অভিযোগ করেছেন, ‘‘সারাদিন মানুষ শুধু ছবি তুলতে আসে। ছবি তুলতে তুলতে আমার মালা বিক্রির সময়ই মেলে না।’’ তাঁর চেহারা, আবেগপূর্ণ চোখ আর বিশেষ কথা বলার ধরণ তাঁকে ভিড়ের মাঝে আলাদা করে তুলেছে। তবে এত খ্যাতি সত্ত্বেও, তিনি চান শান্তিতে নিজের কাজ করতে।
মোনালিসা আরও জানান, তিনি মুক্তোর মালা বিক্রি করতে এসেছেন, কিন্তু সারাদিন ছবি তোলার কারণে তাঁর আয় কমছে। তাঁর কথায়, ‘‘সবাই আমাকে দেখতে আসে, ছবি তোলে, কিন্তু কেউ মালা কেনে না। এতে আমার ক্ষতি হচ্ছে।’’
নেটিজেনদের প্রতিক্রিয়া
মোনালিসার ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর থেকে ইন্টারনেটে নানান প্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে। কেউ তাঁর সৌন্দর্যের প্রশংসা করেছেন, আবার কেউ তাঁকে বিরক্ত করার জন্য জনতার সমালোচনা করেছেন। একজন লিখেছেন, ‘‘আপনারা কি বুঝতে পারছেন না, এটা হয়রানি? মেয়েটি কাজ করতে এসেছে, তাকে শান্তি দিন।’’ অন্য একজন মন্তব্য করেছেন, ‘‘মহাকুম্ভ হল একটি আধ্যাত্মিক অনুষ্ঠান, আর আপনারা একটি ক্যামেরা নিয়ে মেয়েটির পেছনে পড়ে আছেন। এটি খুবই অপমানজনক।’’
অনেকে তাঁর সুরক্ষার বিষয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। একজন মন্তব্য করেন, ‘‘এই অতিরিক্ত মনোযোগ তাঁর জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। তাঁর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা উচিত।’’
খ্যাতির দোষ ও গুণ
খ্যাতি পাওয়ার পেছনে যেমন আনন্দ থাকে, তেমনি তা সমস্যাও তৈরি করতে পারে। মোনালিসার ক্ষেত্রে এটি স্পষ্ট যে, তিনি এক সাধারণ ব্যবসায়ী, যিনি তাঁর মুক্তোর মালা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতে চান। কিন্তু হঠাৎ এই খ্যাতি তাঁর কাজের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মোনালিসার মতো অনেকেই আছেন, যারা অজান্তেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হন। কিন্তু সেই খ্যাতির ফলে তাঁদের ব্যক্তিগত এবং পেশাগত জীবনে প্রভাব পড়ে। মহাকুম্ভের মতো আধ্যাত্মিক অনুষ্ঠানে একজন ব্যবসায়ী যদি নিজের পণ্য বিক্রি করতে না পারেন, তবে তা অবশ্যই চিন্তার বিষয়।
শেষ কথা
মোনালিসার কথা আমাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেয়। খ্যাতি যতই আকর্ষণীয় হোক, কারও ব্যক্তিগত পরিসরে অযথা হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়। মানুষের প্রতি সম্মান এবং তাঁদের কাজ করার সুযোগ দেওয়া অত্যন্ত জরুরি। মহাকুম্ভের মতো পবিত্র অনুষ্ঠানে, যেখানে আধ্যাত্মিকতার মাধ্যমে শান্তি খোঁজার চেষ্টা করা হয়, সেখানে একজন সাধারণ ব্যবসায়ীর কাজের প্রতি এ ধরনের মনোযোগ তাঁকে শুধুই অস্বস্তি দেয়।
তাই মোনালিসার মতো মানুষদের শান্তিতে কাজ করতে দেওয়া উচিত, যাতে তাঁরা তাঁদের জীবিকা নির্বাহ করতে পারেন এবং খ্যাতি তাঁদের জীবনে সমস্যা না হয়ে আশীর্বাদ হয়ে ওঠে।
জন্ম রাশিয়ায়, উচ্চতা সাত ফুট, ভক্তদের কাছে তিনি পরশুরাম! মহাকুম্ভে আলোচনায় ‘মাসকুলার বাবা’