মনচেস্টারে ভারতকে ভরসা দিচ্ছেন রিষভ পন্ত!
মনচেস্টারের চতুর্থ টেস্টে ভারতীয় দলের জন্য অন্যতম বড় প্রশ্ন ছিল—রিষভ পন্ত কি শেষ দিনে ব্যাট করতে পারবেন? ম্যাচের চতুর্থ দিন পর্যন্ত ভারত প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে, কিন্তু জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছাতে হলে শেষ দিনে প্রয়োজন হবে অসাধারণ মানসিকতা ও দৃঢ়তা। এমন সময়েই দলের সবচেয়ে সাহসী ব্যাটসম্যান রিষভ পন্ত ইনজুরি নিয়েও মাঠে নামার জন্য তৈরি আছেন।
ম্যাচের শুরুতেই ইংল্যান্ডের এক পেসার ক্রিস ওকসের বল তার ডান পায়ের পাতায় জোরে আঘাত করে। ব্যথায় কুঁকড়ে যাওয়া পন্ত তখনই ‘রিটায়ার্ড হার্ট’ হন। জানা যায়, পায়ের পাতায় ফ্র্যাকচারের সম্ভাবনা রয়েছে। এরপর আর উইকেটকিপিংয়ে দেখা যায়নি তাকে—দায়িত্ব নেন ধ্রুব জুরেল। কিন্তু চুপচাপ বসে থাকেননি রিষভ। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট হাতে মাঠে নামেন, গুরুত্বপূর্ণ ৫০ রান করেন এবং জানান দেন যে তিনি লড়তে প্রস্তুত।
ভারতের ব্যাটিং কোচ সিতাংশু কোটক চতুর্থ দিনের খেলা শেষে বলেন, “রিষভ আগামীকাল ব্যাট করবে বলেই আশা করছি। ওর ইচ্ছাশক্তি আর দলের প্রতি দায়বদ্ধতা অসাধারণ।” তার কথায় আরও উঠে আসে, পরিস্থিতি অনুযায়ী খেলোয়াড়দের ব্যবহার করতে হয়। তাই দিন পাঁচের সকালে ম্যাচের অবস্থার উপর নির্ভর করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে কে কখন নামবেন।
ভারতীয় দল এখনো ইংল্যান্ডের থেকে পিছিয়ে। শেষ দিন জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছাতে হলে ভারতকে খেলতে হবে প্রতিটি বল হিসেব করে। এমন অবস্থায় পন্তের মত একজন ব্যাটসম্যান দলের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তার আগ্রাসী ব্যাটিং, দ্রুত রান তোলার দক্ষতা এবং চাপের মুখে আত্মবিশ্বাস ভারতের চেষ্টাকে বাস্তবতা দিতে পারে।
কোটক আরও বলেন, “আমরা ধাপে ধাপে পরিকল্পনা করছি—প্রথম সেশন টিকতে হবে, তারপর মধ্যাহ্নভোজের আগ পর্যন্ত রান তুলতে হবে। উইকেট বেশ ভালো আচরণ করছে, যদিও মাঝে মাঝে কিছু বল নিচু থাকছে। আমাদের সেটার সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে।”
পন্তের ইনজুরি নিয়ে দলের চিকিৎসকরা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে ব্যাটিংয়ের সময় তিনি যে সাহস দেখিয়েছেন, তাতে পরিষ্কার—তিনি শুধু প্রতিভাবান নন, এক জন যোদ্ধাও। ভারতীয় ক্রিকেটে এমন সাহসী মানসিকতা বহু সময় দলকে জয়ের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিয়েছে।
শেষ দিনে ভারতের লক্ষ্য দুটি—প্রথমত, ইংল্যান্ডের বড় লিড টপকে যাওয়া, দ্বিতীয়ত, ম্যাচে এমন একটা জায়গায় পৌঁছানো যেখানে হার এড়ানো যায়। এই দুটোর মাঝেই দাঁড়িয়ে আছেন পন্ত। তাঁর ব্যাট চললে শুধু রানই নয়, দলের মনোবলও অনেকটা বাড়বে।
এই ম্যাচ ভারতের জন্য হয়তো ইতিহাস হয়ে উঠবে না। তবে একজন ক্রিকেটারের সংকল্প, জেদ ও দেশের প্রতি দায়বদ্ধতার গল্প নিশ্চয়ই হয়ে থাকবে রিষভ পন্তের নামেই।

