ভোটার কার্ড বিতর্কের মাঝে কমিশনের কড়া বার্তা!
ভোটার কার্ড সংক্রান্ত বিতর্কে সরগরম দেশের রাজনৈতিক মহল। একাধিক দল অভিযোগ তুলেছে, একাধিক ভোটার আইডিতে একই EPIC নম্বর থাকার মতো গুরুতর অনিয়ম হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে নির্বাচন কমিশন (EC) সারা দেশের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক (CEO) এবং জেলা নির্বাচনী আধিকারিকদের (DEO) রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে আলোচনার নির্দেশ দিয়েছে। দলগুলোর অভিযোগ শোনা এবং তার ভিত্তিতে আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার।
ভোটার কার্ড বিতর্কে কেন উত্তেজনা?
সম্প্রতি ভোটার তালিকায় ভুয়ো নাম, একাধিক কার্ড, এবং একই EPIC নম্বর থাকা নিয়ে দেশজুড়ে অভিযোগ উঠেছে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরি কেন্দ্রীয় সরকার ও বিজেপির বিরুদ্ধে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় গড়াপেটার অভিযোগ তুলেছেন। এই বিতর্কের মাঝেই নির্বাচন কমিশন জানায়, EPIC নম্বর একই হলেও সংশ্লিষ্ট ভোটারের বিধানসভা ও বুথ আলাদা হতে পারে—তাই এতে অনিয়ম নেই। কিন্তু বিরোধী দলগুলোর দাবি, এই ভুলের দায় স্বীকার করা উচিত কমিশনের।
নির্বাচন কমিশনের জরুরি বৈঠক
মঙ্গলবার দিল্লিতে India International Institute of Democracy and Election Management (IIIDEM)-এর দফতরে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার প্রথমবারের মতো রাজ্যের CEO এবং DEO-দের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানেই তিনি কড়া ভাষায় নির্দেশ দেন—
- প্রত্যেক রাজনৈতিক দলের অভিযোগ শোনা ও সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া।
- নিয়মিত আলোচনা চালিয়ে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করা।
- ৩১ মার্চের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেওয়া।
কমিশন স্পষ্ট জানিয়েছে, দেশের ১৮ বছরের বেশি বয়সী প্রত্যেক নাগরিক যাতে নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে হবে। একইসঙ্গে, নির্বাচন পরিচালনায় কোনো আধিকারিক যেন রাজনৈতিক চাপের মুখে না পড়েন, তা-ও খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ভোটকেন্দ্রের সুবিধা বাড়ানোর নির্দেশ
ভোটারদের সুবিধার জন্য আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিতে বলেছেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার—
✅ প্রতি বুথে ৮০০ থেকে ১,২০০ ভোটারের সীমা রাখা।
✅ ভোটারদের বাসস্থানের ২ কিমির মধ্যে বুথ স্থাপন করা।
✅ নির্বাচন পরিচালনার ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা বজায় রাখা।
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট: কৌশলী পদক্ষেপ নাকি ক্ষত মেরামত?
এই নির্দেশের পিছনে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, কমিশন ভোটের স্বচ্ছতা রক্ষার পাশাপাশি বিরোধী দলগুলোর ক্ষোভ প্রশমনের কৌশলও নিচ্ছে। ভোটার কার্ড বিতর্কে তৃণমূল-সহ বেশ কয়েকটি দল কমিশনের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছে, যা লোকসভা নির্বাচনের আগে বড় ইস্যু হয়ে উঠতে পারে।
শেষ কথা
ভোটার কার্ড বিতর্কের জেরে রাজনৈতিক উত্তেজনা চরমে। কমিশনের সর্বশেষ পদক্ষেপকে অনেকেই নির্বাচন পরিচালনার বিশ্বাসযোগ্যতা ফেরানোর চেষ্টা হিসেবে দেখছেন। তবে ৩১ মার্চের রিপোর্টের পরেই বোঝা যাবে, আদৌ এই আলোচনায় কোনো সমাধান মিলবে নাকি বিতর্ক আরও গভীর হবে।
ইউক্রেনকে আর সামরিক সাহায্য নয়! ট্রাম্পের কড়া বার্তা, চাপে জেলেনস্কি