Monday, December 1, 2025

‘ভিক্ষার ঝুলি’ হাতে পাকিস্তান! বাজেটের আগেই দেনার পাহাড়ে স্বীকারোক্তি শাহবাজ় সরকারের

Share

‘ভিক্ষার ঝুলি’ হাতে পাকিস্তান!!

নতুন বাজেট পেশের প্রাক্কালে পাকিস্তানের আর্থিক দুর্দশার যে চিত্র উঠে এল, তা এক কথায় উদ্বেগজনক। দেনায় ডুবে থাকা ইসলামাবাদ সরকারের ঘাড়ে এখন ৭৬ লক্ষ কোটি পাকিস্তানি রুপির ঋণের বোঝা! সোমবার পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী মুহাম্মদ ঔরঙ্গজ়েব প্রকাশ করলেন দেশটির ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষের প্রথম ৯ মাসের আর্থিক সমীক্ষা রিপোর্ট, যেখানে এই বিপুল ঋণের অঙ্ক তুলে ধরেছেন নিজেই। আর এই স্বীকারোক্তির সময় তিনি অবশ্য দাবি করেছেন—অবস্থা কিছুটা হলেও উন্নতির দিকে।

পাকিস্তানে নতুন অর্থবর্ষ শুরু হয় জুলাই মাসে। তাই জুনের মাঝামাঝি বাজেট পেশ করার প্রস্তুতি চলে। ঠিক তার আগেই প্রকাশিত এই সমীক্ষা জানাচ্ছে, দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক উৎস মিলিয়ে পাকিস্তান সরকারের ঋণ এখন ৭৬ লক্ষ কোটি রুপি ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে শুধুমাত্র দেশীয় ব্যাঙ্কগুলোর কাছ থেকে নেওয়া ঋণ ৫১ লক্ষ ৫০ হাজার কোটি রুপি, আর বাকি প্রায় ২৪ লক্ষ ৫০ হাজার কোটি রুপি এসেছে বিদেশি উৎস থেকে।

যদিও এই ঋণের ভার মাথায় নিয়েও পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী জানান, ২০২৩ সালে যেখানে দেশের জিডিপি ০.২ শতাংশ হ্রাস পেয়েছিল, সেখানে ২০২৪ সালে তা কিছুটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এই বছর জিডিপি বৃদ্ধি ২.৫ শতাংশে পৌঁছেছে বলে দাবি তাঁর। এবং লক্ষ্য, ২০২৫ সালে সেই হার বাড়িয়ে ২.৭ শতাংশে নিয়ে যাওয়া। একইসঙ্গে তিনি জানান, দেশের বৈদেশিক মুদ্রাভান্ডারও আগের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে।

এই আর্থিক সমীক্ষা এমন সময়ে প্রকাশিত হচ্ছে, যখন মঙ্গলবার পাকিস্তানের পার্লামেন্টে ২০২৫-২৬ অর্থবর্ষের বাজেট পেশ করার কথা রয়েছে শাহবাজ় শরিফের নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের। বাজেট পেশের পর পার্লামেন্টে একদিন বিরতি নিয়ে শুক্রবার থেকে শুরু হবে বাজেট নিয়ে আলোচনা। এই বাজেট ঘিরে কূটনৈতিক ও আন্তর্জাতিক মহলের কৌতূহলও কম নয়। কারণ, ভারতের সঙ্গে সাম্প্রতিক সংঘর্ষ এবং আর্থিক টানাপোড়েনের প্রেক্ষাপটে বাজেট কেমন বার্তা দেবে, তা নিয়েই জল্পনা।

সম্প্রতি শাহবাজ় শরিফ একটি বক্তৃতায় বলেছেন, পাকিস্তানকে যেন আর ‘ভিক্ষার ঝুলি’ নিয়ে ঘুরতে না হয়। তাঁর এই মন্তব্যে দেশের আর্থিক দুরবস্থাই যেন আরও একবার স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে গিয়ে শরিফ বলেন, এমনকি পাকিস্তানের ‘সর্বাধিক ঘনিষ্ঠ বন্ধু’রাও এখন আর এই ভিখারির ভূমিকা সমর্থন করে না। সেই বক্তৃতায় তিনি চিনকে ‘সর্বকালের বন্ধু’, সৌদি আরবকে ‘বিশ্বাসযোগ্য সাথি’, এবং তুরস্ক, কাতার, আরব আমিরশাহিকে পাকিস্তানের পাশে থাকা দেশ হিসেবে তুলে ধরেন।

তবে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক যতই দৃঢ় হোক না কেন, আর্থিক পুনরুদ্ধারের জন্য বাস্তব পদক্ষেপ এবং স্বচ্ছ অর্থনৈতিক কৌশল ছাড়া পাকিস্তানের সামনে সুরাহার রাস্তা আপাতত দেখা যাচ্ছে না।

৪০ বছর পরে ফের এক ভারতীয় মহাকাশে! শুভাংশুকে নিয়ে উৎক্ষেপণের প্রস্তুতিতে তুঙ্গে ‘ড্রাগন

Read more

Local News