Monday, December 1, 2025

ভারতের পাশে বালোচ-পাশতুন! ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পর ভিতর থেকেই টালমাটাল পাকিস্তান

Share

ভারতের পাশে বালোচ-পাশতুন!

পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার বদলা নিতে পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরে (পিওকে) ন’টি জঙ্গি ঘাঁটিতে আঘাত হেনেছে ভারত। ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে এই প্রতিঘাতে প্রচণ্ড চাপের মুখে পড়েছে ইসলামাবাদ। শুধু সীমান্তে নয়, পাকিস্তানের ভিতরেই শুরু হয়েছে ধস। বালোচিস্তান ও খাইবার-পাখতুনখোয়ার বিদ্রোহীদের প্রকাশ্যে ভারতের পাশে দাঁড়ানোর হুমকি পাকিস্তান সরকারের গায়ে কাঁটা দিচ্ছে।

পাকিস্তান যদিও চীনের মতো শক্তিধর মিত্রের সহায়তা পাচ্ছে, তবু দেশের অভ্যন্তরীণ বিভাজন তাদের জন্য বড় মাথাব্যথা হয়ে উঠছে। খাইবার-পাখতুনখোয়ার এক ইসলামি ধর্মগুরু কোরান হাতে নিয়ে বলছেন, “যুদ্ধ বাঁধলে আমরা ভারতের পাশে দাঁড়াব। পাকিস্তানের জন্য আমাদের ঘরছাড়া হতে হয়েছে, ছেলেমেয়েরা অনাহারে দিন কাটাচ্ছে। তবু কি আমরা ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ বলব?”

১৯৪৭ সাল থেকেই খাইবার-পাখতুনখোয়ার পাকিস্তানে অন্তর্ভুক্তি নিয়ে মতভেদ রয়েছে। পাশতুন জনগোষ্ঠীর উপর পাকিস্তানি সেনার দীর্ঘ দিনের দমন-পীড়ন, অপহরণ, গণহত্যা ও অবহেলার ইতিহাস রয়েছে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ তাঁদের শরণার্থী তকমা দিয়ে দেশছাড়া করতে চাইলে প্রতিবাদে ফেটে পড়ে তালিবান সরকারও। এর জেরে তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান (TTP) রাওয়ালপিন্ডির বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধ ঘোষণা করেছে।

পাশাপাশি, বালোচিস্তানেও উত্তাল পরিস্থিতি। দীর্ঘ দিন ধরে স্বাধীনতার দাবিতে লড়াই চালাচ্ছে বালোচ লিবারেশন আর্মি (BLA)। ভারতীয় সেনার হামলার আগের দিনই পাক সেনার উপর হামলা চালিয়ে সাত-আট জন সৈন্যকে হত্যা করে তারা। প্রাকৃতিক সম্পদের বৈষম্যমূলক বণ্টন, অর্থনৈতিক বঞ্চনা এবং আইএসআইয়ের নিপীড়ন বালোচদের ক্ষোভ আরও বাড়িয়েছে।

চলতি বছরে জাফর এক্সপ্রেস অপহরণ এবং সরকারি দফতর দখলের ঘটনাগুলিই প্রমাণ করছে—বালোচরা আর চুপ করে থাকবে না। বিশ্লেষকদের মতে, ভারত-পাক যুদ্ধ শুরু হলে এই বিদ্রোহ ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। কারণ, পাকিস্তানের পরমাণু অস্ত্রভাণ্ডারের বড় অংশই রয়েছে বালোচিস্তানে, যা কৌশলগত ভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

শুধু বালোচ ও পাশতুন নয়, সিন্ধু প্রদেশেও চলছে আলাদা হওয়ার দাবি। মোদী সরকারের সিন্ধু জলচুক্তি স্থগিত করার সিদ্ধান্তে জলসংকটের মুখে পড়েছে তারা। ফলে পাক পাঞ্জাবি নেতৃত্বের প্রতি তাদের ঘৃণা আরও বেড়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, ভারতের সঙ্গে যুদ্ধ বাঁধলে এই ফাটল চওড়া হয়ে যেতে পারে।

৭ মে রাতের অভিযানে ভারতীয় সেনা বহাওয়ালপুর, মুরিদ, সিয়ালকোট, মুজফ্‌ফরাবাদ, গুলপুর, ভীমবের, চাক আমরু, বাগ এবং কোটলির মতো এলাকায় জঙ্গি ঘাঁটিতে হামলা চালায়। গোয়েন্দা সূত্র ও অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভারতীয় সেনার তিন বাহিনী একসঙ্গে আঘাত হানে।

বিশ্লেষকদের মত, বাহ্যিক যুদ্ধের পাশাপাশি এই অভ্যন্তরীণ বিদ্রোহই পাকিস্তানের পক্ষে বড় বিপদ হয়ে দাঁড়াবে। ভারতে নয়, পাকিস্তানের ভিতর থেকেই যেন ভাঙনের সুর শোনা যাচ্ছে।

ভারত-পাকিস্তান সংঘাতে মিথ্যাচারের তৎপরতা: ভুয়ো খবরকে হাতিয়ার করছে পাকিস্তান

Read more

Local News