গ্রুপ সি ও ডি কর্মীদের ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্তে হাই কোর্টের অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ!
চাকরি হারানো গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি কর্মীদের মাসিক ভাতা দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত রাজ্য সরকার নিয়েছিল, তার ওপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করল কলকাতা হাই কোর্ট। বিচারপতি অমৃতা সিংহ শুক্রবার স্পষ্ট জানিয়ে দেন, আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বা পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত রাজ্য সরকার এই ভাতা প্রদান করতে পারবে না।
হাই কোর্ট জানিয়েছে, আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে রাজ্যকে হলফনামা জমা দিতে হবে এবং তার পরবর্তী ১৫ দিনের মধ্যে মামলাকারীরা তাঁদের পাল্টা হলফনামা জমা দেবেন। সেই প্রক্রিয়ার ভিত্তিতেই আদালত পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে।
কী ছিল রাজ্যের সিদ্ধান্ত?
গত মে মাসে রাজ্য সরকার ঘোষণা করেছিল, চাকরি হারানো গ্রুপ সি কর্মীদের মাসে ₹২৫,০০০ এবং গ্রুপ ডি কর্মীদের ₹২০,০০০ ভাতা দেওয়া হবে। মূলত ২০১৬ সালের এসএসসি প্যানেল থেকে নির্বাচিত প্রায় ২৬ হাজার কর্মীর চাকরি সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে বাতিল হয়ে যাওয়ার পরেই রাজ্য এই সিদ্ধান্ত নেয়।
কেন মামলা?
এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে হাই কোর্টে মামলা করেন কিছু আবেদনকারী। তাঁদের আইনজীবীরা যুক্তি দেন, সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী এই নিয়োগ অবৈধ, ফলে রাজ্যের এই ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্তও রায়ের পরিপন্থী। তাছাড়া, কী যুক্তিতে ২৫ ও ২০ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, তার কোনও নির্দিষ্ট ব্যাখ্যা নেই— এই প্রশ্নই উঠে আসে আগের শুনানিতে।
বিচারপতি সিংহ নিজেও প্রশ্ন তোলেন,
“এই অঙ্ক নির্ধারণের ভিত্তি কী? সুপ্রিম কোর্টের রায় পরবর্তী আলোচনার পর কী করে এত দ্রুত এই সিদ্ধান্ত?”
অন্য দিকে, রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত মামলার গ্রহণযোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, “কে মামলা করবে, তা রাজ্য স্থির করে দিতে পারে না।”
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও প্রতিক্রিয়া
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই রায়ে রাজ্য সরকার আপাতত একাধিক কোটি টাকার অতিরিক্ত আর্থিক দায় থেকে রেহাই পেল। একই সঙ্গে, আদালতের হস্তক্ষেপের কারণে এখন গ্রুপ সি ও ডি কর্মীদের সামনে ‘রাজ্য সদিচ্ছুক কিন্তু আদালত অনুমতি দিচ্ছে না’— এই বার্তাও তুলে ধরতে পারবে রাজ্যের শাসকদল।
বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই পরিস্থিতিকে রাজনৈতিক বার্তা হিসেবেও ব্যবহার করা হতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
পরবর্তী পদক্ষেপ কী?
এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ২৬ সেপ্টেম্বরের পর। তত দিন পর্যন্ত রাজ্য ভাতা চালু রাখতে পারবে না। মামলাকারীদের যুক্তি ও রাজ্যের প্রতিরক্ষা— উভয়ের প্রেক্ষিতে তখন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবে আদালত।
বিমানের প্রতি ভয় বাড়ছে? দুর্ঘটনার পরে যাত্রীদের মনে ঘনীভূত ‘ফ্লাইট অ্যাংজাইটি’

