‘ভাড়াটে প্রেমিক’-এর কেরিয়ার!
প্রেম করা শুধুই আবেগের ব্যাপার? জাপানের এক যুবকের জীবনের দিকে তাকালে মনে হবে, এটা হতে পারে একটি পুরো পেশা— আর তাতেই রমরমিয়ে আয় হচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা!
৩১ বছর বয়সি তাকুয়া ইকোমা জাপানের এক অভিজাত শহরে থাকেন। চমৎকার পোশাক, ঝকঝকে শরীরচর্চা, বিলাসবহুল জীবনযাপন— সবই রয়েছে তাঁর জীবনে, কিন্তু এর পিছনে নেই কোনও চাকরি বা ব্যবসা। আসলে, তাঁর আসল পরিচয়— তিনি একজন ‘ভাড়াটে প্রেমিক’। আর এই ব্যতিক্রমী পেশাতেই তিনি প্রতি মাসে উপার্জন করেন প্রায় ছয় লক্ষ টাকা।
প্রেমিকের পরিচয়ের আড়ালে গৃহকর্মীর কাজ
তাকুয়ার কাজ শুধু প্রেমিক হিসেবে সুন্দর সময় কাটানো নয়। যাঁরা তাঁকে ‘ভাড়া’ করেন, তাঁদের সঙ্গে ডেট, গল্প, খাওয়াদাওয়া, শপিং, এমনকি মন খারাপের সময় পাশে থাকাটাও তাঁর দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে। অনেক সময় ঘরকন্নার দায়িত্বও নিতে হয়— বাসন মাজা, ঘর ঝাঁট দেওয়া, এমনকি বাথরুম পরিষ্কার করাও বাদ যায় না!
যদি কোনও তরুণীর পোষা প্রাণী থাকে, তাকুয়াকে সেই পোষ্যকে সময়মতো বাইরে নিয়ে হাঁটতেও হয়। তিন ঘণ্টা টানা গৃহকাজের বিনিময়ে তিনি পান ১ লক্ষ ৬০ হাজার ইয়েন, যা ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৯৫ হাজার টাকার সমান।
১৫ জন প্রেমিকা, এক তরুণ!
তাকুয়ার দাবি, এক সময় তিনি একসঙ্গে ১৫ জন ধনকুবের তরুণীর প্রেমিক হিসেবে সময় কাটাতেন। তাঁর কথায়, “বাইরে থেকে সবাই ভাবে আমার জীবনটা দারুণ, কিন্তু একসঙ্গে এত জনের মন রাখাটা খুবই কঠিন ও ক্লান্তিকর।”
তাকুয়া এই কাজ শুরু করেন মাত্র ১৮ বছর বয়সে। ধীরে ধীরে তাঁর চাহিদা বাড়ে, এবং তিনি নিজেই নিজের শর্ত ঠিক করে নেন— যেমন, একসঙ্গে একাধিক তরুণীর সঙ্গে সময় কাটানো, সবার প্রয়োজন মতো সময় ভাগ করে দেওয়া ইত্যাদি।
কোভিডের ধাক্কা এবং প্রস্তাবের গল্প
২০১৯ সালে স্থানীয় এক টেলিভিশন চ্যানেলে সাক্ষাৎকারে তাকুয়া বলেছিলেন, “মাসে মাত্র আট দিন কাজ করে ১০ লক্ষ ইয়েন (প্রায় ৫.৯ লক্ষ টাকা) আয় করেছিলাম।” তবে কোভিড অতিমারির সময় তাঁর কাজের পরিমাণ কমে যায়। এমন সময় এক তরুণী তাকুয়াকে পুরো এক মাস একান্তে নিজের সঙ্গে থাকার শর্তে কয়েক লক্ষ ইয়েন পারিশ্রমিক দেওয়ার প্রস্তাব দেন। কিন্তু তাকুয়া সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন— কারণ তাঁর মতে, “আমি সবার প্রতি সময় দিতে চাই।”
প্রেমিকের চরিত্রে পেশাদারিত্ব
তাকুয়ার এই ব্যতিক্রমী পেশা হয়তো অনেকের কাছে অদ্ভুত বা হাস্যকর মনে হতে পারে। কিন্তু তাঁর জন্য এটা শুধু জীবিকার মাধ্যম নয়— এটা দায়িত্ব, পেশাদারিত্ব এবং এক ধরণের সামাজিক সেবাও বটে, অন্তত তাঁর নিজের ভাষায়।
ভারত-পাকিস্তান সংঘাতে মিথ্যাচারের তৎপরতা: ভুয়ো খবরকে হাতিয়ার করছে পাকিস্তান

