বেতন নিয়ে টানাপড়েন!
শীর্ষ আদালতের রায়ে বাতিল হওয়া প্যানেলের সদস্য হলেও, বেতন পোর্টালে এখনও তাঁদের নাম রয়েছে। ফলে প্রায় ২৬ হাজার চাকরিহারার মনে প্রশ্ন— চলতি মাসের বেতন তাঁরা পাবেন তো?
হ্যাঁ, স্কুল শিক্ষা দফতরের বেতন সংক্রান্ত পোর্টাল খুলে গেছে। তাতে যাঁদের চাকরি বাতিল হয়েছে, এমন সবাইকে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু পোর্টালে নাম থাকা মানেই বেতন নিশ্চিত— এমনটা নয়। বরং রাজ্য সরকার এখন দ্বিধার মধ্যে। কারণ সুপ্রিম কোর্ট ২০১৬ সালের পুরো শিক্ষক নিয়োগ প্যানেলই বাতিল করে দিয়েছে।
শিক্ষা দফতরের একাংশের বক্তব্য, যেহেতু প্যানেল সম্পূর্ণ বাতিল হয়েছে, তাই চাকরিহারাদের বেতন দেওয়া আদালত অবমাননার আওতায় পড়তে পারে। সেই কারণেই বিষয়টি নিয়ে নেওয়া হচ্ছে আইনি পরামর্শ।
সূত্রের খবর, আগামী ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত বেতন পোর্টাল খোলা থাকবে। তার আগেই বেতন দেওয়া যাবে কি না, সেই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে চায় দফতর। পাশাপাশি, এই মাসে বর্ধিত ৪% মহার্ঘ ভাতা (DA) দেওয়া হবে কি না, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
তবে এ নিয়ে দফতরের মধ্যেই রয়েছে মতপার্থক্য। অনেকেই মনে করছেন, রাজ্য সরকার যেহেতু শীর্ষ আদালতের রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করতে চলেছে এবং তার জন্য ৩০ দিনের সময়ও রয়েছে, তাই এই সময়সীমার মধ্যে বেতন দিলে সেটা আদালত অবমাননা হিসেবে গণ্য হবে না। অর্থাৎ, পুরো বিষয়টিই এখনও আইনি প্রক্রিয়ার মধ্যে চলমান।
তবে এর মধ্যেও কিছু চাকরিহারার অবস্থান একেবারে স্পষ্ট— তাঁরা বেতন চান না!
যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চের আহ্বায়ক মেহবুব মণ্ডল জানিয়ে দিয়েছেন, “আমরা চাই না এমন পরিস্থিতিতে সরকার আমাদের বেতন দিক। পরে যদি সেই টাকা ফেরত দিতে হয়, তাহলে সেটাই আরও বড় বিপদ হয়ে দাঁড়াবে।”
এই বক্তব্য থেকেই বোঝা যাচ্ছে, ভেতরে ভেতরে কতটা দোটানায় রয়েছেন চাকরি হারানো এই হাজার হাজার প্রার্থী।
একদিকে আশা— সরকার হয়তো পাশে দাঁড়াবে। অন্যদিকে আতঙ্ক— বেতন নিলে পরে সেই টাকা ফেরত দিতে বাধ্য না হতে হয়! এমন পরিস্থিতিতে প্রশাসনের তরফ থেকে দ্রুত এবং স্পষ্ট সিদ্ধান্ত না এলে, উদ্বেগের মেঘ ঘনাবে আরও।
চাকরি গেল, সম্মান গেল, এখন কি যাবে বেতনও?
এই প্রশ্নটাই ঘুরছে হাজার হাজার পরিবারের মনে।
আর সবাই তাকিয়ে— রাজ্য সরকারের পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে।
তালা ভাঙার পাল্টা তালা! কসবা থেকে হুগলি—চাকরিহারাদের ক্ষোভে কাঁপছে রাজ্য