বেআইনি ও হেলে পড়া বাড়ির সঙ্কটে
কলকাতা শহরের বেআইনি নির্মাণ এবং হেলে পড়া বাড়ি নিয়ে দীর্ঘদিনের সমস্যার সমাধানে বোরোভিত্তিক নজরদারির উপর জোর দিচ্ছে কলকাতা পুরসভা। সাম্প্রতিক সময়ে শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে একের পর এক বাড়ি হেলে পড়ার অভিযোগ জমা পড়েছে। এই সঙ্কট মোকাবিলায় কলকাতা পুরসভার বিল্ডিং বিভাগকে কড়া নির্দেশ দিয়েছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
বর্তমানে কলকাতা শহরে ১৬টি বোরোর অধীনে ১৪৪টি ওয়ার্ড রয়েছে। কেন্দ্রীয়ভাবে এই ওয়ার্ডগুলিতে নজরদারি কার্যত অসম্ভব। তাই বোরোভিত্তিক দায়িত্ব বণ্টন করে প্রতিটি বোরো কমিটিকে সক্রিয় করা হয়েছে। এর মূল উদ্দেশ্য হল বেআইনি নির্মাণ ও বিপজ্জনক বাড়ির বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া।
পূর্ববর্তী ঘটনাগুলির অভিজ্ঞতা থেকেই এই উদ্যোগ। ২০২৪ সালে গার্ডেনরিচে বেআইনি নির্মীয়মাণ বহুতল ভেঙে পড়ার ফলে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল। সেই সময়ে বোরো-১৫-র দায়িত্বপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ার ও জনপ্রতিনিধিদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার পুর প্রশাসন আরও কড়া হয়েছে।
বেআইনি নির্মাণ রোধে নতুন উদ্যোগ
বিল্ডিং বিভাগের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, সারা বছরই পুরসভার ইঞ্জিনিয়াররা ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে সমীক্ষা চালান। তবে সাম্প্রতিক অভিযোগের ভিত্তিতে এই কাজের গতি বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে বাঘাযতীন, ট্যাংরা, এন্টালি, কসবা এবং ভবানীপুরের মতো এলাকাগুলিতে নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।
বাঘাযতীনে হেলে পড়া বহুতলের ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে নতুন নির্দেশ জারি করা হয়েছে। কোনও বাড়ি মেরামতের ক্ষেত্রে এখন থেকে পুরসভার অনুমতি বাধ্যতামূলক। অনুমতি ছাড়া বাড়ি মেরামতের প্রচেষ্টার ফলেই বাঘাযতীনের বহুতলটি বিপজ্জনকভাবে হেলে পড়ে। ভবিষ্যতে এমন ঘটনা রোধে বোরো আধিকারিকদের আরও সক্রিয় ভূমিকা নিতে বলা হয়েছে।
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট
২০২৬ সালে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনের ছয় মাস পরেই কলকাতা পুরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের আগে বেআইনি নির্মাণ ও হেলে পড়া বাড়ির মতো সমস্যা পুরসভার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করতে পারে। তাই মেয়র সমস্ত বিভাগকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
এই নতুন উদ্যোগ কার্যকর হলে শহরের বেআইনি নির্মাণ এবং বিপজ্জনক বাড়ি নিয়ে সৃষ্ট সঙ্কটের অনেকাংশেই সমাধান হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
কারখানার আড়ালে মাদকচক্র গুজরাতে, ১০৭ কোটি টাকার মাদক বাজেয়াপ্ত করল এটিএস