Monday, December 1, 2025

বেআইনি অনুপ্রবেশের অভিযোগে বাংলাদেশি যুবক গ্রেফতার, ছাতা সারাই করেই চলছিল দিন

Share

ছাতা সারাই করেই চলছিল দিন

কলকাতার হরিদেবপুরে মঙ্গলবার গ্রেফতার হলেন এক বাংলাদেশি যুবক। অভিযোগ, বেআইনি ভাবে ভারতে ঢুকে গত সাত মাস ধরে তিনি বাড়ি বাড়ি ঘুরে ছাতা সারাই করছিলেন। তাঁর কাছে কোনো বৈধ নথি বা পাসপোর্ট পাওয়া যায়নি। পুলিশ জানিয়েছে, ওই যুবক বাংলাদেশের গোপালগঞ্জের বাসিন্দা।


স্থানীয়দের ফোনে তৎপরতা

হরিদেবপুরের বড়বাগান এলাকায় মঙ্গলবার এক বাসিন্দা ১০০ নম্বরে ফোন করে জানান, এলাকায় সন্দেহজনকভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছেন এক বাংলাদেশি যুবক। অভিযোগ জানানোর পরই হরিদেবপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। অভিযোগকারী কার্তিক রায় লিখিতভাবে জানান, ওই যুবক কয়েক দিন ধরেই এলাকায় ঘোরাফেরা করছেন। অভিযোগ পেয়ে শুরু হয় পুলিশি তল্লাশি।


পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ফাঁস তথ্য

পুলিশ ওই সন্দেহভাজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। জেরায় তিনি নিজের নাম জানান মহম্মদ দাউদ দরিয়া, বাংলাদেশের গোপালগঞ্জ জেলার বাসিন্দা। কিন্তু নিজের পরিচয় প্রমাণ করতে কোনো পাসপোর্ট, ভিসা বা বৈধ নথি দেখাতে পারেননি তিনি। তদন্তে জানা যায়, সাত মাস আগে বেআইনি ভাবে ভারতে প্রবেশ করেছিলেন তিনি। তারপর থেকেই বাড়ি বাড়ি ঘুরে ছাতা সারাইয়ের কাজ করেই দিন কাটাচ্ছিলেন।


সন্তোষজনক উত্তর না মেলায় গ্রেফতার

পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে তাঁর উত্তরে কোনো স্পষ্টতা না থাকায় সন্দেহ আরও গভীর হয়। তাঁকে বিদেশি আইনের অধীনে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশের দাবি, ওই যুবক দীর্ঘদিন ধরে কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন, কিন্তু কখনও কোনো সরকারি নজরে আসেননি। শেষমেশ স্থানীয় বাসিন্দাদের সতর্কতার জন্যই ধরা পড়েন তিনি।


তদন্তে নতুন প্রশ্ন

পুলিশ সূত্রে খবর, কী ভাবে তিনি ভারতে প্রবেশ করেছিলেন, কেউ তাঁকে সাহায্য করেছিল কি না, বা এর পিছনে কোনো বড় চক্র আছে কি না—তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, “এটা একেবারে সাধারণ অপরাধও হতে পারে, আবার এর পিছনে বড় কোনো নেটওয়ার্কও থাকতে পারে। তাই আমরা সতর্কতার সঙ্গে বিষয়টি তদন্ত করছি।”


নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ

স্থানীয়দের অভিযোগ, এলাকার অচেনা মানুষজন নিয়ে আগে থেকেই দুশ্চিন্তা ছিল। তাঁদের অনেকেই জানান, এলাকায় হঠাৎ করে নতুন মুখ দেখা গেলেই তারা সন্দেহ প্রকাশ করতেন। কার্তিক রায় বলেন, “আমরা দেখছিলাম ও ছেলে প্রতিদিন ঘুরছে। কিন্তু কোনো নথি দেখাতে পারছে না। তাই পুলিশের কাছে জানিয়েছিলাম।”


পুলিশের বার্তা

এই ঘটনার পরে পুলিশ বাসিন্দাদের সতর্ক করে দিয়েছে। তারা বলেছে, যদি এলাকায় সন্দেহজনক কেউ থাকে বা কারও নথি নিয়ে প্রশ্ন ওঠে, সঙ্গে সঙ্গে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। পুলিশের এক কর্তা জানান, “আমরা সব তথ্য যাচাই করছি। ফরেনার্স অ্যাক্ট অনুযায়ী তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। তদন্ত শেষ হলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”


এই ঘটনা ফের একবার নিরাপত্তা ব্যবস্থার ফাঁকফোকর নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। যদিও পুলিশ দ্রুত পদক্ষেপ করে সন্দেহজনক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে, তবু এই ঘটনা প্রমাণ করে, নজরদারি আরও কড়া করা দরকার। আপাতত ওই যুবক পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন, এবং জেরা চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ।

ওড়িশায় ব্যবসায়ীর বাড়িতে ইডির তল্লাশি, ১৩৯৬ কোটির প্রতারণা মামলায় উদ্ধার কোটি টাকার সম্পদ

Read more

Local News