বুমরাহ বাঁচালেন ভারত
হেডিংলেতে চলতি টেস্টের তৃতীয় দিনে ভারতের ভরসার নাম একটাই— জসপ্রীত বুমরাহ। তাঁর ৫ উইকেটের সৌজন্যে প্রথম ইনিংসে মাত্র ৬ রানের লিড পেলেও, সেটা ভারতের আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনার পক্ষে যথেষ্ট। তবে যেভাবে ক্যাচ ফস্কে গেল, তাতে প্রশ্ন উঠছে ফিল্ডিংয়ের গুণমান নিয়ে— বিশেষ করে যশস্বী জয়সওয়ালের চার-চারটে গুরুত্বপূর্ণ ক্যাচ ফস্কানোর ঘটনায়।
বুমরাহর বল, ক্যাচ ফস্কে গেল!
ইংল্যান্ডের ইনিংসের সময় ভারতের ফিল্ডাররা মোট ছয়টি ক্যাচ ফেলেছেন। তার মধ্যে যশস্বী একাই ফেলেছেন চারটি। বেন ডাকেট (৬২), ওলি পোপ (১০৬) এবং হ্যারি ব্রুক (৯৯)-এর মতো গুরুত্বপূর্ণ ব্যাটারদের ক্যাচ ছুটেছে বারবার। ব্রুক তো বুমরাহর বলে শূন্য রানে আউট হয়েও বেঁচে গিয়েছিলেন নো বলের কারণে। পরে আরও দুটি ক্যাচ পড়ে তাঁর। যদি এই সুযোগগুলো নেওয়া যেত, ভারত হয়তো প্রথম ইনিংসে অনেক বড় লিড পেত।
স্লিপে কে কোথায়?
বছরের পর বছর ধরে ভারতের স্লিপ কর্ডনে দেখা গিয়েছে বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা, চেতেশ্বর পুজারা বা রাহানেকে। এখন সেখানে দাঁড়াচ্ছেন রাহুল, গিল, যশস্বী ও সাই সুদর্শনের মতো অপেক্ষাকৃত অনভিজ্ঞ খেলোয়াড়েরা। এর ফলে সহজ ক্যাচও বারবার হাতছাড়া হচ্ছে। ফিল্ডিং কোচ টি দিলীপের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ— দ্রুত এই সমস্যা মেটানো না গেলে বড় ম্যাচে ভুগতে হবে ভারতকে।
বোলিংয়ে ভরসা শুধু বুমরাহ
এই ম্যাচে স্পষ্ট, বুমরাহ ছাড়া ভারতের পেস আক্রমণ কার্যত দাঁড়াতেই পারছে না। প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ ২০ ওভারে দিয়েছেন ১২৮ রান, সিরাজ ২৭ ওভারে ১২২। তাঁদের বলে চাপ তৈরি হয়নি। অন্য প্রান্ত থেকে রান ওঠায় বুমরাহর উইকেট নেওয়ারও যথেষ্ট প্রভাব পড়েনি। তবু তিনি ২৪.৪ ওভারে ৫ উইকেট তুলে নিয়ে নিজের সেরা ফর্মে আছেন বলেই প্রমাণ দিয়েছেন। এটা তাঁর বিদেশের মাটিতে ১২তম ৫ উইকেট— কপিল দেবের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
গিলের নেতৃত্বে খামতি?
তৃতীয় দিনে সবচেয়ে আলোচিত সিদ্ধান্তগুলির একটি ছিল শার্দূল ঠাকুরকে মাত্র ৬ ওভার করানো। তিনি নতুন বলে উইকেট নেওয়ার ক্ষমতা রাখেন, অলরাউন্ডার হিসেবেও গুরুত্বপূর্ণ। অথচ, সিরাজ-প্রসিদ্ধ বারবার ব্যর্থ হলেও অধিনায়ক গিল তাঁকেই বল দেননি। বিশেষজ্ঞদের মতে, যদি বলই না দিতেন, তা হলে শার্দূলের বদলে অতিরিক্ত ব্যাটার নীতীশ রেড্ডিকে খেলানো যেত। সুনীল গাভাস্কার থেকে দীনেশ কার্তিক— সকলেই গিলের এই সিদ্ধান্তে অসন্তুষ্ট।
ব্যাটিংয়ে রাহুল, ব্যর্থ যশস্বী
দ্বিতীয় ইনিংসে ভারত শুরু করে মাত্র ৬ রানের লিড নিয়ে। যশস্বী খোঁচা দিয়ে ফেরেন মাত্র ১ রানে। মনে হচ্ছিল, হয়তো আগের চারটা ক্যাচ ফস্কানোর মানসিক চাপেই তিনি বিচলিত ছিলেন। সাই সুদর্শন প্রথম ইনিংসের শূন্যের পর দ্বিতীয় ইনিংসে ৩০ রান করেন, তবে আবার একই ভুল— অফ স্টাম্পের বাইরে শর্ট বল খেলতে গিয়ে আউট।
এই মুহূর্তে সবচেয়ে ভরসার জায়গা লোকেশ রাহুল। প্রথম ইনিংসেও শুরুটা ভাল করেছিলেন, দ্বিতীয় ইনিংসে ৪৭ রানে অপরাজিত আছেন। তার সঙ্গে অপরাজিত শুভমন গিল (৬)। দিনের শেষে বৃষ্টির কারণে খেলা বন্ধ হয়ে যায়। ভারতের রান ৯০/২, এগিয়ে ৯৬ রানে।
আগামী দিনগুলিতে ভারতকে জিততে হলে বুমরাহর পাশাপাশি ফিল্ডিংয়ের উন্নতি, আরও সুচিন্তিত অধিনায়কত্ব এবং অভিজ্ঞ ব্যাটারদের দায়িত্ব নিতে হবে।
“আলোচনা না পেরে যুদ্ধ!” — আমেরিকার ইরান আক্রমণে ফের ভাইরাল ট্রাম্পের পুরনো ওবামা-আক্রমণ

