বুমরার একার লড়াই
ভারতীয় পেসার যশপ্রীত বুমরা যেন একাই দলটিকে টেনে নিয়ে চলেছেন। অ্যাডিলেড টেস্টে চোট নিয়ে বল করার পর থেকেই তাঁর ওপর চাপ নিয়ে কথা বলছিলেন বিশেষজ্ঞরা। এবার ব্রিসবেনে, বর্ডার-গাভাস্কার ট্রফির প্রথম টেস্টে, আবারও তিনি প্রমাণ করলেন কেন তিনি দলের সেরা বোলার। ৬টি উইকেট তুলে নিয়ে বুমরা দেখিয়েছেন তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব, কিন্তু তাতেও রানের পাহাড়ে চেপে বসেছে অস্ট্রেলিয়া। প্রথম ইনিংসে অজিরা তুলেছে ৪৪৫ রান।
বুমরার চেষ্টার পরেও দলের দুর্বলতা
বুমরা যেমন নিজের সেরাটা দিয়েছেন, বাকিরা যেন তাঁর ছায়াতেই ঢাকা পড়ে গেছেন। স্টিভ স্মিথ ও ট্র্যাভিস হেডের শতরান, সঙ্গে অ্যালেক্স ক্যারির লড়াকু ৭০ রানের ইনিংস, মিলে অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস হয়ে উঠল দাপুটে। বুমরার ৬ উইকেট সত্ত্বেও ভারতীয় বোলিং আক্রমণকে মনে হয়েছে নখদন্তহীন।
কেন শামির অভাব এতটা প্রকট?
ভারতীয় বোলিংয়ে মহম্মদ শামির অনুপস্থিতি যেন বারবার চোখে পড়ছে। শামির অভিজ্ঞতা ও ধারাবাহিকতা এই মুহূর্তে দলের জন্য অত্যন্ত জরুরি। বিশেষজ্ঞরা বারবার বলছেন, শামিকে অস্ট্রেলিয়ায় এনে বোলিং লাইনআপকে শক্তিশালী করা উচিত। তবে, বাকিদের পারফরম্যান্সে সেই তাগিদ আরও প্রকট হয়ে উঠছে।
স্মিথ-হেড-ক্যারির দাপট
অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসের ভিত গড়ে দেন স্টিভ স্মিথ ও ট্র্যাভিস হেড। দু’জনেই শতরান করে ভারতের বোলারদের উপর আধিপত্য বিস্তার করেন। তাদের আউট করার পরও ভারতের জন্য সমস্যা শেষ হয়নি। উইকেটের অন্য প্রান্তে অ্যালেক্স ক্যারি ৭০ রানের লড়াকু ইনিংস খেলে রান তুলতে থাকেন। বুমরা ছাড়া অন্য কোনও বোলারই কার্যকর প্রভাব ফেলতে পারেননি।
রানের চাপ এবং কোহলির পরীক্ষা
৪৪৫ রানের বড় স্কোর তাড়া করা সহজ কাজ নয়। ভারতীয় ব্যাটিংয়ের সামনে এবার কঠিন চ্যালেঞ্জ। বিরাট কোহলির নেতৃত্বে দলকে এই চাপ কাটিয়ে উঠতে হবে। রোহিত শর্মা, শুভমান গিল, বিরাট কোহলি, এবং চেতেশ্বর পুজারার মতো ব্যাটারদের বড় ইনিংস খেলা আবশ্যক। যদি ভারত প্রথম ইনিংসে বড় রান না তুলতে পারে, তবে ম্যাচে ঘুরে দাঁড়ানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে।
পিচ এবং আবহাওয়ার প্রভাব
ব্রিসবেনের গাব্বার পিচ সবসময় পেসারদের সাহায্য করে। দ্বিতীয় ইনিংসেও এখান থেকে সাহায্য পাওয়া যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু ভারতের ব্যাটারদের নিজেদের প্রমাণ করার জন্য এটিই সেরা মঞ্চ।
অজিদের আত্মবিশ্বাস এবং ভারতের সংকট
অস্ট্রেলিয়া এই ইনিংস থেকে স্পষ্টতই আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে নিয়েছে। তাদের বোলিং আক্রমণ, বিশেষত প্যাট কামিন্স, মিচেল স্টার্ক এবং জশ হ্যাজলউডের নেতৃত্বে, ইতিমধ্যেই ভারতের ওপর চাপ সৃষ্টি করার জন্য প্রস্তুত। অন্যদিকে, ভারতীয় শিবিরে বুমরার পারফরম্যান্স ছাড়া আর কোনও বড় সাফল্য নেই।
কীভাবে ঘুরে দাঁড়াবে ভারত?
ভারতের জন্য এখন প্রয়োজন একটি সম্মিলিত প্রচেষ্টা। বোলিং এবং ব্যাটিং উভয় ক্ষেত্রেই উন্নতি প্রয়োজন। প্রথম ইনিংসে রানের পাহাড়ে চাপ পড়লেও, যদি ব্যাটিং লাইনআপ দায়িত্বশীল ভূমিকা নেয়, তবে ম্যাচে ফেরার সুযোগ এখনও রয়েছে।
বর্ডার-গাভাস্কার ট্রফির এই গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে ভারতের ব্যাটারদের ওপর। বুমরা একার লড়াই চালিয়ে গেলেও, দলের বাকিদেরও দায়িত্ব নিতে হবে। কোহলির দলের জন্য এখন পরীক্ষার সময়।
