অমিতাভের হৃদয়ে অসম্ভব শূন্যতা, বন্ধুত্বের অমর জুটির শেষ অধ্যায়
বন্ধুত্বের যে গান এক সময় রুপোলি পর্দায় অমর হয়ে উঠেছিল— “ইয়ে দোস্তি হম নেহি তোরেঙ্গে”— সেই অবিচ্ছেদ্য সুর হঠাৎ থেমে গেল সোমবার। চলে গেলেন বলিউড কিংবদন্তি ধর্মেন্দ্র। আর তাঁর প্রয়াণে বিধ্বস্ত ‘জয়’ অমিতাভ বচ্চন। বন্ধুর বিদায়ে শোকভারাক্রান্ত হয়ে মাঝরাতে লিখলেন—
“এক অদ্ভুত শূন্যতা… চারপাশের বাতাস যেন কমে গিয়েছে।”
বন্ধুর ডাকে ছুটে যাওয়া
ধর্মেন্দ্রর মৃত্যুসংবাদ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ছেলে অভিষেককে নিয়ে হাসপাতালে পৌঁছেছিলেন অমিতাভ। শেষবারের মতো কাছ থেকে দেখলেন তাঁর ‘বীরুকে’। চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলেন বন্ধু-বিয়োগের মুহূর্তে, যেন অসহায় চোখে জীবনের নিষ্ঠুর পরিণতি দেখছিলেন তিনি।
ধর্মেন্দ্রর নিথর দেহের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন অমিতাভ নীরবে—
বন্ধু, সহঅভিনেতা, সহযোদ্ধা— সিনেমার পর্দায় যেমন ভালোবাসা লেগে ছিল, সেই ভালোবাসা বাস্তবেও কত গাঢ় ছিল, তা যেন আরও একবার উপলব্ধি করলেন মানুষটি।
‘শোলে’-র অমর জুটির ৫০ বছরের বন্ধন
ঠিক এ বছরই ‘শোলে’-র ৫০ বছর পূর্ণ হয়েছে। আর এই বছরেই হঠাৎ বন্ধ হয়ে গেল জুটির এক অর্ধেকের পথচলা।
‘জয়’ আর ‘বীরু’র বন্ধুত্ব সমগ্র ভারতীয় সিনেমার কাছে বন্ধুত্বের প্রতীক।
যেখানে তাঁরা একসঙ্গে মঞ্চে উঠতেন, আলিঙ্গন করতেন উচ্ছ্বাসভরে—সেই দৃশ্যগুলো আজ স্মৃতি।
অমিতাভ লিখেছেন—
“অজস্র কোলাহলের মাঝে এক গভীর নিস্তব্ধতা তৈরি করে গেলেন তিনি।”
বন্ধুর মতো মানুষ আর নেই
রাতে সমাজমাধ্যমে এক দীর্ঘ আবেগঘন পোস্টে অমিতাভ স্মরণ করলেন ধর্মেন্দ্রর অপরূপ মনুষত্ব।
তিনি লিখলেন—
- ধর্মেন্দ্র কেবল অভিনয়ের শক্তি নন, মানুষ হিসেবেও ছিলেন অপার উষ্ণতার উৎস।
- পঞ্জাবের মাটির গন্ধ, সারল্য, প্রাণবন্ত হাসি— সব কিছুই তাঁকে এক আলাদা মহিমা দিত।
- তাঁর হাসি ছিল শিশুর মতো, অথচ পর্দায় তিনি ছিলেন পরাক্রমী নায়ক।
অমিতাভ অনুভব করেছেন, বলিউড আর ফিরে পাবে না সেই ‘মাটির গন্ধ’।
আত্মীয়তার সেই বিশাল হৃদয় আর থাকবে না তাঁদের মাঝে।
অমর বন্ধুত্বের অবসান
বন্ধুত্বের ব্রত,他们 সিনেমায় করেছিলেন বহু আগে—
“এই দোস্তি হম নেহি তোরেঙ্গে…”
সেই প্রতিশ্রুতির মর্যাদা রেখেছিলেন বাস্তবেও।
বন্ধু চলে যাওয়ায়, অমিতাভের মনে যে বিপুল শূন্যতা জন্মেছে, তা শব্দে প্রকাশ করা যেন অসম্ভব।
তিনি লিখলেন—
“এই শূন্যতা পূরণ হওয়ার নয়।”
ধর্মেন্দ্রর প্রয়াণে শুধু বলিউড নয়, ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসও আজ এক বিশাল অধ্যায় হারাল।
কিন্তু ধুলোর নদীর ওপারে, যেখানে বন্ধুত্ব হারায় না কখনও— সেখানেই হয়তো আবার দেখা হবে ‘জয়-বীরুর’।

