কেষ্ট মণ্ডলের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা
বীরভূমের তৃণমূল কংগ্রেসে কোর কমিটির সাপ্তাহিক বৈঠক দীর্ঘ সময় ধরে স্থগিত ছিল, তবে অনুব্রত মণ্ডল জেলা তৃণমূলের নেতৃত্বে ফের আসার পর সঠিক সময়ে এই বৈঠক শুরু করতে চায় দল। ১৬ নভেম্বর কোর কমিটির বৈঠকের ডাক দেওয়া হয়েছে, যা দলের নেতাকর্মীদের কাছে এক গুরুত্বপূর্ণ বার্তা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রতি বীরভূমে এসে কোর কমিটি চালু রাখার পক্ষে নিজের মতামত ব্যক্ত করেছেন। তাঁর মতে, কোর কমিটি বীরভূমে দলের রাজনীতির মূল কাঠামো হিসেবে কার্যকরী ভূমিকা পালন করেছে এবং এই কমিটিই দলকে বীরভূমের দুটো লোকসভা আসনে জয়ী হতে সাহায্য করেছে। তিনি আরও বলেন, ‘‘আমার ব্যক্তিগত মতামত, কোর কমিটি থাকা উচিত, কারণ এই কমিটিই দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ’’।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কোর কমিটির ভবিষ্যৎ নিয়ে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন এবং কেষ্ট মণ্ডলের কোর কমিটির ভূমিকা নিয়ে বলেন, ‘‘উনি কোর কমিটিকে পরিচালনা করবেন’’। এর পরিপ্রেক্ষিতে বীরভূমে তৃণমূলের রাজনীতি নতুন রূপ পেতে যাচ্ছে, যেখানে কেষ্ট মণ্ডলের ভূমিকা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে।
কেষ্ট মণ্ডলের ভূমিকা
অনুব্রত মণ্ডল, যিনি গরু পাচার মামলায় গ্রেফতার হয়ে দীর্ঘদিন জেলবন্দি ছিলেন, জামিনে মুক্তি পাওয়ার পরই ফের বীরভূমে তার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড শুরু করেছেন। তবে, তার মুক্তির পর কোর কমিটির ভবিষ্যৎ এবং কার্যকারিতা নিয়ে তৃণমূলের ভেতরে নানা আলোচনা চলছিল। দলের উচ্চপদস্থ নেত্রীর নির্দেশনায় কোর কমিটি গঠিত হয়েছিল, যার প্রধান লক্ষ্য ছিল অনুব্রত মণ্ডলের অনুপস্থিতিতে বীরভূমে তৃণমূলের সংগঠন পরিচালনা করা।
তবে, অনুব্রতের ফেরার পর এই কমিটির কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। কিছুদিন আগে পর্যন্ত কোর কমিটির বৈঠক স্থগিত ছিল, তবে এখন তা ফের শুরু হওয়ার লক্ষ্যে তৃণমূলের উচ্চপদস্থ নেতৃত্ব সক্রিয় হয়েছে। কোর কমিটির আহ্বায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী বৈঠকের কথা কোর কমিটির সদস্যদের জানিয়ে দিয়েছেন এবং বৈঠকটি ১৬ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে বলে জানানো হয়েছে।
আলাদাভাবে, কোর কমিটিতে জেলা সভাপতি কেষ্ট মণ্ডলের ভূমিকা নিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় পরিষ্কার বক্তব্য রেখেছেন। তিনি বলেন, ‘‘কেষ্টদা কোর কমিটিকে পরিচালনা করবেন’’। এর মানে হলো, কেষ্ট মণ্ডল দলের কার্যক্রমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন এবং তার নেতৃত্বেই বীরভূমের সংগঠন চলবে। এদিকে, অনুব্রত নিজেও কোর কমিটি গঠনের পক্ষে মত দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘এই কমিটির সদস্য সংখ্যা বাড়ানো যেতে পারে, তা নিয়ে আমি দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে কথা বলব।’’
এখন প্রশ্ন উঠছে, কেষ্ট মণ্ডল কীভাবে কোর কমিটির নেতৃত্বে দলের কাজ করবেন, এবং তার ভূমিকা কী হবে তা নিয়ে দলের ভেতরে আলোচনা চলছে। অন্যদিকে, দলীয় শীর্ষ নেতৃত্ব এই কমিটিকে আরও কার্যকরী এবং শক্তিশালী করার জন্য নানা পরিকল্পনা গ্রহণ করছে।
এছাড়া, অনুব্রতের জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর সঠিক সময়ে কোর কমিটি চালু হওয়ার মাধ্যমে দলীয় রাজনীতিতে এক নতুন দিগন্তের সূচনা হতে চলেছে। দলের নেতারা মনে করছেন, কোর কমিটির মাধ্যমে বীরভূমে দলকে আরও শক্তিশালী করা সম্ভব হবে এবং এতে দলের রাজনীতির স্বচ্ছতা বজায় থাকবে।
এই বৈঠকটি দলের অন্দরে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান তৈরি করতে পারে, বিশেষ করে কেষ্ট মণ্ডলের নেতৃত্বে কোর কমিটির ভবিষ্যৎ কী হতে চলেছে, তা জানতে দলের সব স্তরের নেতাকর্মী অপেক্ষা করছেন।