Saturday, February 22, 2025

বিহারে গোপন অস্ত্র কারখানার সন্ধান: কলকাতা পুলিশের অভিযানে ধৃত দুই

Share

বিহারে গোপন অস্ত্র কারখানার সন্ধান

বিহারের তারাপুর অঞ্চলে গোপনে একটি অবৈধ অস্ত্র কারখানা চালানো হচ্ছিল। পুলিশি তদন্তে দেখা গেছে, এই অস্ত্র কারখানা একটি খাবারের থালা তৈরির কারখানার আড়ালে পরিচালিত হচ্ছিল। কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ) বিহারের স্থানীয় পুলিশ ও বিহার পুলিশের বিশেষ টিমের সহযোগিতায় বুধবার রাতে এই কারখানায় অভিযান চালায়।

অভিযানের রহস্যঘেরা শুরু ও গোপন চেম্বারের খোঁজ

বুধবার রাতে গোপন সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, বিহারের তারাপুর এলাকায় অস্ত্র কারখানাটিতে পুলিশ দল অভিযান চালায়। খাবারের থালা তৈরির কারখানার নীচে, মাটির গভীরে লুকানো একটি গোপন চেম্বারে এই অস্ত্র তৈরি হচ্ছিল বলে জানা গেছে। দীর্ঘদিন ধরে এই গোপন কুঠুরিতে অবৈধভাবে বন্দুক ও পিস্তল তৈরির কাজ চালানো হচ্ছিল, যা রাজ্যের সীমানা পেরিয়ে অন্যত্র ছড়িয়ে দেওয়া হতো।

ধৃত ও উদ্ধারকৃত সামগ্রী

অভিযানে ধরা পড়েছেন এই অস্ত্র কারখানার মালিক মহম্মদ মোনাজির হুসেন ও তাঁর শ্যালক মহম্মদ নাসিম। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে, এবং আরও কেউ এই বেআইনি কার্যকলাপে জড়িত কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ৭ এমএম পিস্তলের ছয়টি যন্ত্রাংশ, ছয়টি পিস্তলের বাট, একটি লেদ মেশিন, ড্রিল মেশিন এবং অস্ত্র তৈরির কাজে ব্যবহৃত কাঁচামাল উদ্ধার করেছে। এসব জিনিসপত্র বাজেয়াপ্ত করার পাশাপাশি কারখানাটিতে অস্ত্র তৈরির সবরকম প্রমাণ সংগ্রহ করা হয়েছে।

বিহার ও ঝাড়খণ্ডের বেআইনি অস্ত্র কারখানা এবং পুলিশের ক্রমাগত অভিযান

পুলিশের মতে, বিহার ও ঝাড়খণ্ডে দীর্ঘদিন ধরেই অবৈধ অস্ত্র তৈরির কারখানা চালু রয়েছে। এসব অস্ত্র পরে পশ্চিমবঙ্গসহ বিভিন্ন রাজ্যে পাচার করা হয়। এই অস্ত্র সরবরাহ ক্রমশই বিভিন্ন অপরাধমূলক কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়েছে এবং তাই কলকাতা পুলিশ ধারাবাহিকভাবে এসব কারখানার বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছে। গত তিন বছরে এটি কলকাতা পুলিশের ১৪তম অস্ত্র কারখানা উদ্ধার।

সমাজে বেআইনি অস্ত্রের প্রভাব ও পুলিশের পদক্ষেপ

এই ধরনের অস্ত্র কারখানাগুলির কার্যকলাপ বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজকর্মকে আরও শক্তিশালী করছে, যা সমাজের শৃঙ্খলার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে বেআইনি অস্ত্রের ব্যবহার ক্রমশ বাড়ছে, যা প্রতিনিয়ত ছোটখাটো অপরাধ থেকে বড় ধরনের অপরাধেও জড়িয়ে পড়ছে। কলকাতা পুলিশের এসটিএফ এমন কাজের মূল শিকড়ে পৌঁছে এ ধরনের অপরাধ চক্রকে নির্মূল করার চেষ্টা করছে।

অস্ত্র কারখানা বন্ধে পুলিশ ও প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা

বৈধ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় এই ধরনের অভিযানগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কলকাতা পুলিশ এবং স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় এই ধরনের বেআইনি অস্ত্র কারখানার কার্যক্রম বন্ধ করে সেগুলোকে সমাজের ক্ষতি থেকে দূরে রাখা জরুরি।

অবৈধ অস্ত্রের বাজার ও এর চক্র ভেঙে দেশের নিরাপত্তা আরও সুরক্ষিত করা পুলিশের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য।

Read more

Local News