বিহারের কৃষিশিল্পে ফিরছে প্রাণ!
বিশ্বজুড়ে প্লাস্টিক বর্জন করে পরিবেশবান্ধব বিকল্পের দিকে ঝুঁকছে মানুষ। সেই প্রেক্ষাপটে ‘সোনালি আঁশ’ পাট আবার আলোচনায় এসেছে। এতে শুধু দড়ি বা বস্ত্র নয়, আধুনিক যুগেও তৈরি হচ্ছে পরিবেশবান্ধব পণ্য। পূর্ব ভারতবর্ষে—বাংলা, বিহার, অসম, ওড়িশা ও উত্তরপ্রদেশে পাট জন্মায় সহজে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে কাঠামোগত ও প্রশিক্ষণের ঘাটতির কারণে পাট চাষ কমে গিয়েছিল।
“ন্যাশনাল জুট বোর্ড” (NJB) এবার পাট চাষে নতুন প্রাণ ঢেলে দিয়েছে ‘জুট আই‑কেয়ার’ প্রকল্পের মাধ্যমে বলে দাবি করছে। একশ্রেণির BI-ANANDABAZAR স্পন্সর করা প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিহারের ঔরঙ্গাবাদ, অরওয়াল ও বেগুসরাই এলাকায় এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে ।
প্রকল্প সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত জানোয়ারী:
– উচ্চ ফলনশীল বীজ (HYV) ৫০% ভর্তুকিতে
– পাট পচানোর রাসায়নিক (retting accelerator) বিনামূল্যে
– মাঠ প্রদর্শন এবং আধুনিক চাষ পদ্ধতি শেখানো ছাড়া নিয়মিত পরামর্শ দিচ্ছে কৃষকদের ।
– এবার পর্যন্ত ১,৬২৪ জন কৃষক প্রকল্পে যুক্ত হয়েছেন।
– ৪০৭ হেক্টর জমিতে পাট রোপণ করা হয়েছে।
– ১৩ কুইন্টাল HYV বীজ বিতরণ করা হচ্ছে ।
এই উপকরণগুলি মূলত মৌসুমি পতিত জমিকে কাজে লাগিয়ে কৃষকদের আর্থিক ভাবে শক্তিশালী করছে। সাধারণত বর্ষাকালো জমি পড়ে থাকত, এখন সেখানে পাট চাষেই বাড়ছে আয় ও উৎসাহ। কৃষি দপ্তর আশাবাদী, এ উদ্যোগ পাট চাষে নতুন প্রাণ দেবে ও স্থানীয় কৃষিভিত্তিক অর্থনীতিতে গতি আনবে।
❇️ পাট আই‑কেয়ার প্রকল্প কী?
NJB ‘জুট ICARE’ বা Improved Cultivation and Advanced Retting Exercise ২০১৫ সালে শুরু করে। এর মূল লক্ষ্য ছাড়পত্র হল –
- সার্টিফাইড বীজ সরবরাহ করা,
- আধুনিক সোন্ড্রেড মেশিন ও ইকুইপমেন্ট দেওয়া,
- CRIJAF দ্বারা উন্নীত মাইক্রোবায়াল SONA-এর মাধ্যমে পাট জাত মান উন্নয়ন,
- কৃষকদের সময়মতো SMS ও মাঠে প্রশিক্ষণ দেওয়ার মাধ্যমে চাষ পদ্ধতি উন্নয়ন করা।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই প্রকল্পের মাধ্যমে:
– বীজ ও যন্ত্রপাতির ব্যবহার বেড়েছে,
– রিটিং সময় কমে এসেছে ২০ থেকে ১৩–১৪ দিনে,
– গুণগতভাবে ভালো পাট উৎপাদন হয়েছে,
– কৃষকের আয় প্রতি হেক্টর প্রায় ₹৭০০০ বৃদ্ধি পেয়েছে ।
✅ কেন এ উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ?
- পরিবেশ সুরক্ষা: প্লাস্টিক জাতীয় দ্রব্য রোধে গ্রিন-বিকল্প হিসেবে পাটের গুরুত্ব বাড়ছে।
- কৃষকের আয় বৃদ্ধি: পতিত জমিও কাজে লাগছে, তা থেকে নতুন আয় তৈরির সুযোগ পাচ্ছে।
- গুণগত উন্নতি: সার্টিফাইড বীজ ও আধুনিক কৌশলমূলক চাষে পাটের মান বেড়েছে।
- অভ্যন্তরীণ পারে মূল্যায়ন: যন্ত্র ও বীজ সরবরাহে সরকারি ভূমিকা কৃষকদের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে।
- টেকসই মডেল: প্রশিক্ষণ, কৌশল ও সময়মতো জ্ঞান আদানপ্রদানে সবচেয়ে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
প্রতিক্রিয়া ও ভবিষ্যৎ দৃষ্টি
এই প্রকল্প সরকারি উদ্যোগ হিসেবে পর্যাপ্ত প্রশংসা পাচ্ছে। যদি এখনকার মতো নিরলসভাবে এই প্রকল্প চালানো যায়, তবে দক্ষিণপূর্বীদের মতো আরও কয়েকটি রাজ্যেও এক্ষেত্রে সাফল্য দেখা যেতে পারে। প্লাস্টিক জাতীয় দ্রব্যের বিকল্প হিসেবে পাট শুধু পরিবেশবান্ধবই নয়, কৃষকদের আয়ের মাধ্যম হিসেবেও সংগঠিত হতে পারে।
এ ছাড়াও আইসিএআইআর-CRIJAF–সহ অন্যান্য কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে সমন্বয়ে আধুনিক প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণের ক্লাস্টার তৈরি হলে, আগামী দিনে পাট চাষ আবির্ভাব ঘটাতে পারে নতুন ‘সবুজ বিপ্লবের’।
গোপালগঞ্জে উত্তেজনা: ‘নাইন সিরকার’ ওসাম চারজনের মৃত্যু, কারফিউ জারি

