বিশ্বকাপের পরই ফ্রান্স দলের দায়িত্ব
২০২৬ সালের বিশ্বকাপ ফুটবল আয়োজন হতে চলেছে আমেরিকা, মেক্সিকো এবং কানাডায়। এই প্রতিযোগিতার পরেই ফ্রান্সের প্রধান কোচের পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছেন দিদিয়ে দেশঁ। বুধবার সাংবাদিক বৈঠকে তিনি নিজেই এ কথা জানান। দেশঁর পরে ফ্রান্সের কোচ হওয়ার দৌড়ে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছেন কিংবদন্তি জ়িনেদিন জ়িদান—এমনটাই দাবি করছে ফরাসি সংবাদমাধ্যম।
দিদিয়ে দেশঁ বলেন, “২০২৬ সালেই আমি দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেব। আমার কাছে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে আর কোনো দ্বিধা নেই। প্রথম দিন থেকেই সমান ইচ্ছাশক্তি এবং সর্বোচ্চ সাফল্যের তৃষ্ণা নিয়ে দলকে এগিয়ে নিয়ে গেছি। তবে একটা সময় আসে, যখন থামতে হয়। আমার মনে হয়েছে, ২০২৬ সালেই সেটা করার সঠিক সময়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, আমার দল এখন ফিফা ক্রমতালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে, যা আমার কাজের একটি বড় স্বীকৃতি।”
এক দশকের কোচিং ক্যারিয়ারে অসাধারণ সাফল্য
২০১২ সালে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে দিদিয়ে দেশঁ ফ্রান্সের ফুটবল দলের সঙ্গে একের পর এক সফল মুহূর্ত উপহার দিয়েছেন। তাঁর নেতৃত্বে ২০১৬ সালে ইউরো কাপে ফ্রান্স রানার্স-আপ হয়। ২০১৮ সালে রাশিয়া বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হয় ফ্রান্স, যা দেশঁর কোচিং ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় সাফল্য। এমনকি ২০২২ সালে কাতার বিশ্বকাপেও ফ্রান্স রানার্স-আপ হয়।
বিশ্বফুটবলের ইতিহাসে মাত্র তৃতীয় ব্যক্তি হিসেবে কোচ এবং খেলোয়াড়, দুই ভূমিকাতেই বিশ্বকাপ জয়ের বিরল কৃতিত্ব অর্জন করেছেন দেশঁ। ১৯৯৮ সালে ফ্রান্সের প্রথম বিশ্বকাপ জয়ী দলের অধিনায়ক ছিলেন তিনি। এছাড়াও, ৫৬ বছর বয়সি দেশঁ জাতীয় দলে সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে কোচিং করার নজির গড়েছেন।
ফরাসি ফুটবল ফেডারেশনের প্রতিক্রিয়া
ফ্রান্সের ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি ফিলিপ দিয়ালো বলেন, “আমরা সবাই জানি যে ২০২৬ সালের বিশ্বকাপের পরেই দেশঁর চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে। তবে বিষয়টা হলো, দেশঁ নিজেই চুক্তি নবায়নের বিষয়ে কোনো আগ্রহ প্রকাশ করেননি।” দেশঁর এই ঘোষণার পর থেকেই ফ্রান্সের পরবর্তী কোচ হিসেবে কে আসতে চলেছেন, তা নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা।
চর্চার কেন্দ্রে জ়িনেদিন জ়িদান
ফরাসি সংবাদমাধ্যমের মতে, দিদিয়ে দেশঁর উত্তরসূরি হিসেবে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছেন জ়িনেদিন জ়িদান। ফুটবলবিশ্বে এক কিংবদন্তি নাম জ়িদান। ফ্রান্সের হয়ে ১৯৯৮ সালের বিশ্বকাপ জয়ী দলের একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন তিনি। পাশাপাশি, রিয়াল মাদ্রিদের কোচ হিসেবে তিনবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতার অনন্য নজির গড়েছেন জ়িদান।
জ়িদানের ফুটবল জ্ঞান, অভিজ্ঞতা, এবং দল পরিচালনার দক্ষতা তাঁকে ফ্রান্সের কোচের পদে সবচেয়ে যোগ্য প্রার্থী করে তুলেছে। ফরাসি ফুটবলপ্রেমীদের প্রত্যাশা, দেশঁর পর জ়িদানই দলের দায়িত্ব নিয়ে ফ্রান্সকে আরও সাফল্যের দিকে নিয়ে যাবেন।
দেশঁর অবসর: এক যুগের অবসান
দিদিয়ে দেশঁর বিদায়ের সঙ্গে সঙ্গে ফ্রান্স জাতীয় দলের কোচিংয়ে একটি যুগের অবসান ঘটতে চলেছে। দেশঁর নেতৃত্বে ফ্রান্স দল শুধু সাফল্যের শিখরেই পৌঁছায়নি, দল হিসেবে তারা এক নতুন পরিচিতি পেয়েছে। তার কর্মজীবনের সেরা মুহূর্ত হিসেবে রাশিয়া বিশ্বকাপ জয়কে বিবেচনা করা হয়।
উৎসুক ফুটবলবিশ্ব
২০২৬ সালের বিশ্বকাপ শেষ হলে দিদিয়ে দেশঁ দায়িত্ব ছাড়বেন, এটি নিশ্চিত। তবে পরবর্তী কোচ কে হবেন, তা নিয়ে ফুটবলবিশ্বে শুরু হয়েছে তীব্র আলোচনা। ফ্রান্সের পরবর্তী কোচ জ়িদান হবেন কি না, তা নিশ্চিত হতে কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। তবে জ়িদানের প্রতি ফুটবলপ্রেমীদের আশা এবং ফরাসি সংবাদমাধ্যমের ইঙ্গিত দেখে মনে হচ্ছে, তাঁর দায়িত্ব নেওয়াটা কেবল সময়ের অপেক্ষা।
বিশ্বফুটবলের এই উত্তেজনাপূর্ণ পরিবর্তনের দিকে এখন নজর সবার। দেশঁর বিদায় এবং সম্ভাব্য জ়িদানের আগমন ফ্রান্সের ফুটবল ইতিহাসে একটি নতুন অধ্যায় শুরু করতে চলেছে।
‘সত্যি সামনে আসবেই’: যুজবেন্দ্র চহাল এবং ধনশ্রী বর্মার বিবাহবিচ্ছেদের জল্পনার মাঝে ধনশ্রীর পোস্ট