বিয়ের মরসুমে সোনা
বিয়ের মরসুম মানেই সোনার চাহিদা থাকে তুঙ্গে। আর এবার তার সঙ্গে সোনার দামও লাগামছাড়া। কলকাতার বাজারে ১০ গ্রাম ২৪ ক্যারাট খাঁটি সোনার দাম ৮১ হাজার টাকা ছাড়িয়ে গেছে। সঙ্গে পণ্য ও পরিষেবা কর (জিএসটি) ধরে দাম দাঁড়িয়েছে প্রায় ৮৩,৪৩০ টাকা। এই পরিস্থিতি ক্রেতাদের কাছে যেমন চিন্তার, তেমনি বিনিয়োগকারীদের জন্য স্বর্ণযোগ এনে দিয়েছে।
কেন বাড়ছে সোনার দাম?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সোনার এই দাম বাড়ার পেছনে বেশ কিছু বৈশ্বিক ও অভ্যন্তরীণ কারণ রয়েছে।
- ডলারের মূল্যহ্রাস: সাম্প্রতিক সময়ে ডলারের মান কমছে, যার ফলে লগ্নিকারীরা নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে সোনাকে বেছে নিচ্ছেন।
- বৈশ্বিক অনিশ্চয়তা: আমেরিকান শুল্ক নীতি ও বিশ্ববাজারে অস্থিরতার কারণে বিনিয়োগকারীরা সোনার দিকে ঝুঁকছেন।
- ভারতে চাহিদা ও আমদানি খরচ: টাকার মান ডলারের তুলনায় দুর্বল হওয়ায় সোনার আমদানিতে খরচ বেড়েছে, যার প্রভাব পড়েছে খুচরো বাজারে।
সোনায় বিনিয়োগের বিকল্প পন্থা
যদিও সোনার দাম ঊর্ধ্বমুখী, তবে এতে বিনিয়োগ করে লাভবান হওয়া সম্ভব। এখানে কিছু উপায় উল্লেখ করা হলো:
- প্রথাগত বিনিয়োগ: গয়না, সোনার মুদ্রা বা শিল্পকর্ম কিনে বিনিয়োগ করা প্রচলিত পদ্ধতি।
- গোল্ড ইটিএফ (এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড): ডিম্যাট অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে সরাসরি গোল্ড ইটিএফ-এ লগ্নি করা যায়।
- গোল্ড মিউচুয়াল ফান্ড এবং ডিজিটাল গোল্ড: কম ঝুঁকিতে এবং সাশ্রয়ী মূল্যে সোনায় বিনিয়োগের আধুনিক পদ্ধতি।
- সোভারেন গোল্ড বন্ড: কেন্দ্রীয় সরকারের এই প্রকল্পে বিনিয়োগ করলে স্থিতিশীল রিটার্ন পাওয়া যায়।
গয়নার বাজারে প্রভাব
সোনার ক্রমবর্ধমান দামের ফলে গয়না বিক্রির ক্ষেত্রে ভাটা পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। অনেক ক্রেতা কম দামে ছোট গয়না কিনছেন বা পরিকল্পিত বাজেট কমাচ্ছেন। গয়না শিল্পের সঙ্গে জড়িত ছোট ব্যবসায়ী ও কারিগরদের জন্য এটি বিশেষ উদ্বেগের কারণ হতে পারে।
ভবিষ্যৎ পূর্বাভাস
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সোনার দাম আপাতত কমার সম্ভাবনা কম। তবে আমদানি শুল্ক হ্রাস করা হলে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হতে পারে।
পরামর্শ
যাঁরা সোনায় লগ্নি করতে চান, তাঁদের জন্য আর্থিক বিশ্লেষকদের সুপারিশ হলো লগ্নির ১০-১২ শতাংশ সোনার জন্য বরাদ্দ করা। তবে বিনিয়োগের আগে বাজারের অবস্থা এবং নিজের আর্থিক সক্ষমতা বিবেচনা করাই শ্রেয়।
সোনার এই ঊর্ধ্বমুখী দাম আপনার জন্য একটি সুযোগও হতে পারে। সঠিক পরিকল্পনা এবং জ্ঞান নিয়ে বিনিয়োগ করলে লাভবান হওয়া সম্ভব।
কারখানার আড়ালে মাদকচক্র গুজরাতে, ১০৭ কোটি টাকার মাদক বাজেয়াপ্ত করল এটিএস
