বিয়ের পিচে চার মেরে দিলীপ!
অবশেষে জীবনের নতুন ইনিংস শুরু করতে চলেছেন ‘চিরকুমার’ দিলীপ ঘোষ। রাজনীতির মাঠে বহু লড়াইয়ের সৈনিক দিলীপ এবার জীবনের সবচেয়ে ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তে শট খেললেন একেবারে বাউন্ডারি মেরে। শুক্রবার সন্ধ্যায় নিউ টাউনের বাড়িতে ঘরোয়া পরিবেশে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতে চলেছেন প্রাক্তন বিজেপি সভাপতি ও প্রাক্তন সাংসদ দিলীপ ঘোষ এবং রিঙ্কু মজুমদার।
এই বিয়ে কোনও চমক নয়, বরং দীর্ঘদিনের এক মানসিক বন্ধনের পরিণতি। বিজেপির রাজনীতিতে কাজ করতে গিয়েই দিলীপ-রিঙ্কুর পরিচয়। ঘনিষ্ঠ মহল বলছে, গত লোকসভা নির্বাচনে পরাজয়ের পর কিছুটা বিষণ্ণ ছিলেন দিলীপ। সেই সময় রিঙ্কুই তাঁকে সংসার করার প্রস্তাব দেন। প্রথমে দিলীপ রাজি না হলেও মায়ের ইচ্ছা, ঘনিষ্ঠদের পরামর্শ ও সময়ের সঙ্গে নিজের উপলব্ধিই তাঁকে রাজি করায়।
জানা যাচ্ছে, গত ৩ এপ্রিল ইডেন গার্ডেনে কেকেআর বনাম সানরাইজ়ার্স হায়দরাবাদ ম্যাচ চলাকালীন ক্লাব হাউসের এক বক্সে বসেই হয় ‘পাকা কথা’। সেদিন দিলীপ, রিঙ্কু এবং তাঁর হবু শ্বশুরবাড়ির লোকেরা একসঙ্গে খেলা দেখতে এসেছিলেন। ঘটনাচক্রে, রিঙ্কুর ছেলে— যিনি সেক্টর ফাইভে আইটি সংস্থায় কর্মরত— তিনিও উপস্থিত ছিলেন। সেখানেই নাকি দুই পরিবারের মধ্যে কথাবার্তা চূড়ান্ত হয়।
তবে এই বিয়েকে ঘিরে রয়ে গেছে কিছু নাটকীয়তা। সূত্রের দাবি, সঙ্ঘ পরিবারের একাংশ দিলীপকে বিয়ে না করতে অনুরোধ জানায়। এমনকি দু’জন সদস্য তাঁর বাড়িতেও গিয়েছিলেন। কিন্তু দিলীপ স্পষ্ট জানিয়ে দেন— সিদ্ধান্ত একবার নিয়েছেন, আর ফিরবেন না। দিলীপের ঘনিষ্ঠমহল বলছে, বরাবরের মতোই এবারও তিনি সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন নিজের মতো করেই।
রিঙ্কু একজন বিবাহবিচ্ছিন্না, একজন সন্তানসম্ভবা মা এবং একজন গৃহবধূ। তাঁর ছেলে যথেষ্ট প্রতিষ্ঠিত। দিলীপের মা বহুদিন ধরেই চাইছিলেন ছেলের সংসার হোক। বৃদ্ধ বয়সে পুত্রবধূর সঙ্গ পেতে চেয়েছিলেন। দিলীপের রাজনৈতিক জীবন ভীষণ ব্যস্ততায় ঘেরা— বিধানসভা নির্বাচনে তাঁকে আবারও ময়দানে দেখা যেতে পারে। ফলে মায়ের সঙ্গ ও দেখাশোনার জন্যও একজন পরমাত্মীয় থাকা জরুরি হয়ে উঠেছিল।
ঘটনাটির সংবাদ বাইরে আসতেই দিলীপকে সরাসরি প্রশ্ন করা হয়। উত্তরটা আসে তাঁর সিগনেচার স্টাইলে: “কেন, আমি কি বিয়ে করতে পারি না নাকি?” যদিও ‘হ্যাঁ’ বা ‘না’ কিছু বলেননি, তবু তাঁর অভিব্যক্তিই বলে দিচ্ছিল, বিষয়টি একদম সত্যি।
দিলীপের ঘরোয়া বিয়েতে অতিথির তালিকাও ছোট— কেবলমাত্র পরিবারের লোকজন ও কয়েকজন ঘনিষ্ঠ। এখন প্রশ্ন একটাই, এই বিয়ের পরে কি আরও বড় কোনও সামাজিক অনুষ্ঠান হবে? যদিও দিলীপ বরাবরই আড়ম্বরের বাইরে থাকা মানুষ, তাই বড় আয়োজনের সম্ভাবনা কম। তবে রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন শুরু হয়েছে— সংসারী দিলীপ কতটা বদলাবেন? ভোট রাজনীতির ফাঁকে নতুন জীবনে কতটা সময় দিতে পারবেন তিনি?
একটা বিষয় নিশ্চিত— দিলীপ ঘোষ এবার শুধু রাজনীতির ‘ফ্রন্ট ফুট প্লেয়ার’ নন, এবার জীবনের খেলায়ও হাঁকালেন এক দুর্দান্ত ইনিংসের সূচনা।
জয়ী সিংহ ফতেহ্সিন! ৮ বছরের অপেক্ষার পর বাবা হলেন জাহির খান, খুশির হাওয়া লখনউ শিবিরে