বিদায় অনুষ্ঠানের মঞ্চেই শেষ নিঃশ্বাস!
শেষ দিনের মঞ্চে দাঁড়িয়ে ছিল মেয়েটি, চোখে মুখে ছিল ভবিষ্যতের স্বপ্ন, বন্ধুদের জন্য ছিল হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া কথা। কিন্তু সেদিনই হয়ে উঠল তার জীবনের শেষ দিন। মাত্র ২০ বছর বয়সে কলেজের মঞ্চেই ঝরে গেল বর্ষা খারাটের প্রাণ— চোখের সামনে ঘটে যাওয়া এই হৃদয়বিদারক ঘটনা দেখে বাকরুদ্ধ সকলে।
ঘটনাটি ঘটেছে মহারাষ্ট্রের ধারাশিব জেলার আরজি শিন্দে কলেজে। কলেজের বিদায় অনুষ্ঠান চলছিল সেদিন। অন্যান্য পড়ুয়াদের মতোই বর্ষাও সেই অনুষ্ঠানে নিজের কলেজজীবনের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিতে উঠে এসেছিলেন মঞ্চে। প্রাণবন্ত হাসিমুখে মাইক হাতে নিজের কথা বলছিলেন তিনি, বন্ধুদের উদ্দেশে বলছিলেন স্মৃতির কথা। ছাত্রছাত্রীরা হাততালি দিচ্ছিল, গর্ব আর আবেগে ভরা ছিল পরিবেশ।
কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই বদলে যায় চিত্র। হঠাৎই মঞ্চে অচেতন হয়ে পড়ে যান বর্ষা। বন্ধুরা ছুটে আসে, শিক্ষকরা ছুটে যান তাঁর কাছে, চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে চিৎকার আর আতঙ্ক। সবার সামনে, চোখের নিমেষে যেন থেমে যায় সময়।
সঙ্গে সঙ্গেই বর্ষাকে পারান্দার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকেরা আর ফিরিয়ে দিতে পারেননি তাঁকে। তাঁরা জানান, হাসপাতালে পৌঁছনোর আগেই বর্ষার মৃত্যু হয়েছে।
বর্ষার পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মাত্র ৮ বছর বয়সে তাঁর হৃদ্যন্ত্রে অস্ত্রোপচার হয়েছিল। সেই সময় থেকেই এক রকম মনোবল নিয়ে স্বাভাবিক জীবন কাটাচ্ছিলেন তিনি। পরিবারের সদস্যদের দাবি, অস্ত্রোপচারের পরে আর কখনও তাঁর কোনও শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়নি, এমনকি নিয়মিত কোনও ওষুধও খেতে হয়নি তাঁকে। তাই হঠাৎ এমন মৃত্যুর ঘটনায় হতভম্ব পরিবার ও কলেজ কর্তৃপক্ষ।
চিকিৎসকদের প্রাথমিক অনুমান, হৃদ্রোগজনিত কারণেই মৃত্যু হয়েছে বর্ষার। তবে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে ময়নাতদন্তের প্রয়োজন রয়েছে।
ঘটনার পরপরই ভাইরাল হয়েছে অনুষ্ঠানস্থলের একাধিক ভিডিয়ো— যেখানে দেখা গিয়েছে বর্ষা মঞ্চে হাসিমুখে কথা বলছেন, হঠাৎই পড়ে যাচ্ছেন মাটিতে। যদিও এই ভিডিয়োগুলোর সত্যতা আনন্দবাজার অনলাইন যাচাই করেনি।
বর্ষার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। তাঁরা জানিয়েছেন, বর্ষা ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী এবং সবার প্রিয়। তাঁর আকস্মিক মৃত্যুতে শিক্ষক, বন্ধু, সহপাঠী— সকলেই ভেঙে পড়েছে। কলেজে একদিন ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে তাঁর স্মৃতির উদ্দেশ্যে।
এক বিদায়ী বক্তৃতা, যা হওয়ার কথা ছিল স্মরণীয় এক মুহূর্ত, সেটাই হয়ে উঠল এক ছাত্রীর জীবনের শেষ কথা। এমন মৃত্যু শুধু এক পরিবার নয়, গোটা সমাজকেই নাড়িয়ে দেয়। বর্ষার মতো তরুণ প্রাণের এমন করুণ পরিণতি যেন আর কারও ভাগ্যে না জোটে— এই প্রার্থনাতেই চোখ ভিজে উঠছে অসংখ্য মানুষের।
স্ট্রেস কমাতে ম্যাজিকের মতো কাজ করে মাসাজ, তবে সাবধানে নিতে হবে এই সিদ্ধান্ত