বিজেপির প্রস্তুতির অভাব
রাজ্যের ছ’টি আসনে উপনির্বাচন হতে চলেছে, এর মধ্যে একটি বিজেপির এবং বাকি পাঁচটি তৃণমূল কংগ্রেসের দখলে ছিল। দুই দলই তাদের প্রার্থী ঘোষণা করেছে, কিন্তু বিজেপির মধ্যে উপনির্বাচন নিয়ে তেমন কোনো তৎপরতা নেই। এই পরিস্থিতিতে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেছেন যে, মানুষ ভোট দিতে পারলে তারা মাদারিহাট ও মেদিনীপুরে জয়ী হতে পারেন। তবে রাজ্যের বিজেপি নেতাদের বেশিরভাগই মনে করছেন, তাদের মধ্যে নির্বাচনে লড়ার জন্য ‘উৎসাহের অভাব’ রয়েছে।
সাধারণ নির্বাচন এবং উপনির্বাচনের মধ্যে পার্থক্য আছে। উপনির্বাচনে শূন্যস্থান পূরণ হয় এবং সরকার বদলায় না। ফলে ভোটারদের বুথমুখী হওয়ার আগ্রহও কম থাকে। শাসকদলের ভোট পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে, কারণ সাধারণ ভোটাররা নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চান। এই উপনির্বাচনেও সেই একই ঘটনা ঘটতে পারে বলে বিজেপির নেতারা মনে করছেন।
আগামী ১৩ নভেম্বর ছ’টি বিধানসভা আসনে ভোট অনুষ্ঠিত হবে। লোকসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণার পরেই এই উপনির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল। রাজ্য বিজেপির নেতাদের মতে, তখন থেকেই প্রস্তুতি নেওয়া উচিত ছিল। তবে প্রার্থী ঘোষণা হওয়ার আগে পর্যন্ত বিজেপির দিক থেকে কোন পরিকল্পনা প্রকাশ্যে আসেনি।
মাদারিহাট বিজেপির জন্য একটি সম্ভাব্য ইতিবাচক আসন। ২০১৬ এবং ২০২১ সালে এখানে মনোজ টিগ্গা ভালো ব্যবধানে জয়ী হন। যদিও বিজেপি আগে কখনও এখানে উপনির্বাচন করেনি। মনোজ টিগ্গা আশাবাদী হলেও দলের মধ্যে আশঙ্কা রয়েছে যে, ভোটের ফলাফল ৬-০ হয়ে যেতে পারে।
রাজ্য বিজেপির নেতারা অনির্ধারিতভাবে বলেছেন যে, মেদিনীপুর, নৈহাটি এবং তালড্যাংরাতেও তারা লড়াইয়ের জায়গায় রয়েছেন, কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস ভোট হতে দেবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। যদিও মেদিনীপুরে বিজেপির ‘নিজস্ব ভোট’ রয়েছে, সেখানে শহরের ভোটার সংখ্যা উল্লেখযোগ্য।
প্রার্থী শুভজিৎ রায় আশাবাদী, কিন্তু তাঁকে এবং জেলার নেতাদের প্রার্থী হওয়ার খবরও শেষ মুহূর্তে জানানো হয়েছে। ফলে প্রস্তুতির অভাবে বিজেপি ভোটের ময়দানে নামছে। গত নির্বাচনে বিজেপি হারলেও তারা আশা করছে, এইবার পরিস্থিতি ভিন্ন হবে।
নির্বাচনের আগে প্রস্তুতির অভাব নিয়ে বিজেপির মধ্যে আলোচনা এখনও পর্যন্ত হয়নি। দেখা যাক, আসন্ন উপনির্বাচনে তারা কিভাবে নিজেদের দাঁড় করায়!