Sunday, February 23, 2025

বিজয়া সম্মিলনীতে মহিলাদের ভিড়, তৃণমূলের ‘স্বস্তি’ ফেরাতে চায়

Share

বিজয়া সম্মিলনীতে মহিলাদের ভিড়

বিজয়া সম্মিলনী উপলক্ষে তৃণমূল কংগ্রেসের বিভিন্ন জেলা শাখায় মহিলাদের উপস্থিতি বেড়েছে। নেতাদের দাবি, এর মাধ্যমে আরজি কর আন্দোলনের পর তৈরি হওয়া উদ্বেগ কাটিয়ে ‘স্বস্তি’ ফিরেছে। এ বিষয়ে দলের শীর্ষ নেতারা মনে করছেন, এবারের বিজয়া সম্মিলনীর আয়োজন তাদের মনোবল বৃদ্ধি করেছে।

আরজি কর আন্দোলন ও উদ্বেগ

গত অগস্ট-সেপ্টেম্বর মাসে কলকাতা এবং বিভিন্ন জেলায় সাধারণ মহিলাদের রাস্তায় নামা শাসকদলের অন্দরে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছিল। নাগরিক আন্দোলনে তৃণমূলের সমর্থক মহিলারাও শামিল হয়েছিলেন। শাসকদলের নেতারা মনে করেন, বিজয়া সম্মিলনীতে মহিলাদের জমায়েত দেখে তারা কিছুটা স্বস্তি পাচ্ছেন। নেতারা দাবি করছেন, ভোটের মাঠে লক্ষ্মী ও অন্যান্য মহিলারা অচল অবস্থায় আছেন।

মহিলাদের জমায়েতে আশাবাদী তৃণমূল

বিভিন্ন জেলা সফর করে তৃণমূলের নেতারা বিজয়া সম্মিলনীতে বক্তৃতা দিয়েছেন। তারা জানিয়েছেন, মহিলাদের উপস্থিতি পুরুষদের তুলনায় বেশি ছিল। রাজ্যের মন্ত্রী এবং মহিলা কংগ্রেসের সভানেত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, “বিজয়া সম্মিলনীর জমায়েতে মহিলাদের উপস্থিতি দুই-তৃতীয়াংশ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি বাংলার মহিলাদের সমর্থন অটুট রয়েছে।”

বিজেপির নেত্রী অগ্নিমিত্রা পাল বলছেন, আরজি কর আন্দোলন মহিলা ভোটে প্রভাব ফেলেছে। তিনি দাবি করেন, তৃণমূলের বিজয়া সম্মিলনীতে আসা মহিলাদের মধ্যে অনেকেই শাসকদলের ক্যাডার।

বিজয়া সম্মিলনীর সাফল্য

তৃণমূলের তরুণ নেতাদের নিয়ে জেলায় জেলায় বিজয়া সম্মিলনী আয়োজন করা হয়। উল্লেখযোগ্য নেতাদের মধ্যে ছিলেন টিএমসিপির সুদীপ রাহা এবং মন্ত্রী শশী পাঁজা। লক্ষ্মীপুজোর পর থেকে শুরু হয়ে বিজয়া সম্মিলনী বুধবার পর্যন্ত চলেছে। জেলা ও ব্লক স্তরে হাজার হাজার জমায়েত হয়েছে।

তৃণমূলের সেনাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশনায় আয়োজন করা হয়েছে। নেতারা বলেছেন, মহিলাদের জমায়েত বাড়াতে কোনও সাংগঠনিক নির্দেশ ছিল না, তবে মহিলাদের উপস্থিতি দলের জন্য ইতিবাচক।

নাগরিক আন্দোলনের প্রভাব

আরজি কর আন্দোলনের গোড়ায় তৃণমূলের নেতাদের মধ্যে উদ্বেগ ছিল। তবে জেলা নেতারা জানান, গ্রামীণ এলাকাগুলিতে শহরের মতো প্রভাব পড়েনি। সেপ্টেম্বরের গোড়ায় আন্দোলন কিছু গ্রামীণ এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। নেতারা তখন বলেন, এটি সাময়িক একটি ঘটনা। নাগরিক আন্দোলন যখন তুঙ্গে, তখন টিএমসিপি-র সভায় অভিষেক বলেছেন, তৃণমূল মহিলা আন্দোলনকে সম্মান জানায়।

ভবিষ্যতের প্রস্তুতি

বিজয়া সম্মিলনীতে মহিলাদের উপস্থিতি তৃণমূলের জন্য আশাব্যঞ্জক। দলের নেতারা মনে করছেন, মহিলাদের এই জমায়েত আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতির সূচক হতে পারে। ২০২৪ সালের নির্বাচনে বিজয়া সম্মিলনীতে অনেক নেতাই ২০২৬ সালের ভোটের প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা করেছেন।

যদিও গত লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল বিজেপিকে হারিয়েছিল, শহরাঞ্চলে তাদের কিছুটা ক্ষতি হয়েছিল। তবে গ্রামীণ শক্তির জোরেই তারা শহরের ক্ষত কাটিয়ে উঠতে পেরেছিল। বিজয়া সম্মিলনীতে মহিলাদের উপস্থিতি তাদের উদ্বেগ কমাতে পেরেছে বলেই মনে করছেন নেতারা।

অর্থাৎ, বিজয়া সম্মিলনীতে মহিলাদের উপস্থিতি তৃণমূলের জন্য একটি ইতিবাচক সিগন্যাল হিসেবে কাজ করছে। দলের নেতারা মনে করছেন, তারা আগামী নির্বাচনে আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবেন। মহিলাদের ভিড়ের মাধ্যমে তাদের প্রত্যাশা, লক্ষ্মীরা ভোটের মাঠে সক্রিয় হয়ে উঠবেন।

Read more

Local News