Thursday, May 15, 2025

বিচ্ছেদ শব্দেই মেয়েদের জীবনে ঝড় ওঠে, রাতাশ্রীর চোখে সমাজের নির্মম রূপ

Share

বিচ্ছেদ শব্দেই মেয়েদের জীবনে ঝড় ওঠে!

“মেয়েটি যদি মানুষ না হয়ে বাঁদরিও হয়, তাতেও পুরুষের কোনও সমস্যা নেই! মেয়ে হলেই হল।” — এমনই তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করলেন অভিনেত্রী রাতাশ্রী দত্ত।

গত বছর রাতাশ্রীর বিবাহবিচ্ছেদের গুঞ্জন ছড়িয়েছিল। সে গুঞ্জন কীভাবে ছড়াল, কেন ছড়াল, সে সবের হিসাব এখন আর রাখেন না তিনি। তবে এই গুজবের ফল ভোগ করতে হয়েছে আজও। আনন্দবাজার ডট কমের অনুরোধে নিজের জীবনের রুক্ষ বাস্তবতার কথা ভাগ করে নিলেন তিনি।

রাতাশ্রীর মতে, বিচ্ছেদের খবর পুরুষের ক্ষেত্রে যেন জলভাত, কিন্তু মেয়েদের জন্য তা যেন জীবনভর তীক্ষ্ণ বিদ্রুপ। পুরুষ বিচ্ছিন্ন হলে সমাজ বলে, “সোনার আংটি বাঁকা হলেও চলে।” কিন্তু মেয়েরা? তাদের দিকে কটাক্ষ, প্রশ্নবাণ আর অবজ্ঞা ছুড়ে দেওয়া হয়, এমনকি নিজের পরিবার থেকেও।

রাতাশ্রীর বিচ্ছেদ হয়নি, শুধু গুঞ্জন ছড়িয়েছিল। সেই গুজবের নেপথ্যে ছিল তার মায়ের গুরুতর অসুস্থতা। মায়ের কিডনির সমস্যা শুরু হওয়ার পর থেকেই তিনি মায়ের সঙ্গে থাকতে বাধ্য হন। স্বামীর সঙ্গে থাকা সম্ভব হয়নি। এখান থেকেই সমাজ তৈরি করেছিল ‘ফিরে আসা মেয়ের’ কল্পকাহিনি।

মফস্বলের মেয়ের জীবনে গুজবের বিষ আরও তীব্র। পেশাগত দিক থেকেও অসহ্য অবস্থা— বিয়ের পরে বিনোদন দুনিয়ায় কাজের দাম কমে যায়, আর বিচ্ছেদের গুজব ছড়ালে সব গল্প হয়, কেবল কাজের কথা বাদ পড়ে।

রাতাশ্রী আক্ষেপ করে বলেন, “ঘুরে বেড়ানো, গল্প করা— সব দিব্য চলবে, কিন্তু মেয়েটির দায়িত্ব নিতে কেউ এগোবে না। উল্টে রূপ থাকলে সেটা যেন অভিশাপ হয়ে দাঁড়ায়।” তাঁর কথায়, মেয়েটি সুন্দর হোক বা না হোক, সমাজের মনোভাব একই— মেয়ে তো মেয়ে!

সবচেয়ে কষ্ট দিয়েছে কাছের বন্ধুদের বিশ্বাসঘাতকতা। মন খারাপের মুহূর্তে কাউকে বিশ্বাস করে কিছু বললে, তা আধঘণ্টার মধ্যে হয়ে যায় চায়ের সঙ্গে চানাচুর! ফলে মেয়েরা এখন নিজের ব্যথা মনেই চেপে রাখে। ভাগ করে নেয় না কাউকে।

রাতাশ্রী আরও জানান, প্রতিবাদী মিছিলে যোগ দেওয়ার সময় পর্যন্ত তিনি গুজবের শিকার হয়েছিলেন। মায়ের চিকিৎসার খরচ, নিজের মানসিক লড়াইয়ের মধ্যে থেকেও অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু দেখেছেন, যাঁদের সবচেয়ে কাছের মনে করতেন, তাঁরাই তাঁর দুর্বলতার সুযোগ নিতে চেয়েছেন।

এখন রাতাশ্রী নিজের জগৎ সীমিত করে ফেলেছেন— মা, বোন আর স্বামীই তাঁর আপনজন। বন্ধু বলতে আর কেউ নেই। তবুও তিনি শান্ত। তিনি বলেন, “আমি আজ খুব ভাল আছি। কাউকে নিয়ে আর কোনও প্রত্যাশা নেই।”

একটিমাত্র ছবিতে অভিনয়! কেন অভিনয় ছাড়লেন মৌসুমী চট্টোপাধ্যায়ের মেয়ে মেঘা?

Read more

Local News