মেধাবী ছাত্রীর ট্র্যাজেডি
বর্ধমানের কাটোয়া থানার অন্তর্গত দাঁইহাটে ঘটে গেল এক মর্মান্তিক ঘটনা। মাস পাঁচেক আগে বাবা-মায়ের বিবাহবিচ্ছেদের পর থেকেই ১৭ বছরের দ্বাদশ শ্রেণির মেধাবী ছাত্রী তৃষিকা চক্রবর্তী ক্রমশ বিষাদগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল। এই বিষণ্নতা তাকে এমনভাবে গ্রাস করেছিল যে শেষ পর্যন্ত সে নিজের জীবন শেষ করার সিদ্ধান্ত নেয়। পাড়ার সকলের প্রিয় এবং প্রতিভাবান এই তরুণী সোমবার সন্ধ্যায় নিজের বাড়িতে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হয়।
স্থানীয় দাঁইহাট গার্লস হাই স্কুলের বিজ্ঞান বিভাগের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী তৃষিকা ছোট থেকেই পড়াশোনায় ছিল অত্যন্ত মেধাবী। নাচ, গান এবং আবৃত্তিতে তাঁর ছিল বিশেষ পারদর্শিতা। পাড়ার লোকজনের ভালোবাসা ও প্রশংসা ছিল তার প্রতি, যেকোনো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সে সহজেই প্রথম স্থান অর্জন করত।
তৃষিকার এই আত্মঘাতী সিদ্ধান্তে শোকস্তব্ধ তার বাবা-মা এবং এলাকাবাসী। তৃষিকার বাবা তরুণ চক্রবর্তী প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক এবং মা তনুকা গৃহবধূ। তাঁদের পারিবারিক অশান্তি করোনাকালীন সময়ে শুরু হয় বলে দাবি করেছেন তৃষিকার বাবা। তিনি বলেন, “করোনা পরিস্থিতিতে স্ত্রীর সঙ্গে আমার সম্পর্কের অবনতি ঘটে। স্ত্রীর একটি আয়ুর্বেদিক চিকিৎসাকেন্দ্রে যাতায়াতের সময় পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন বলে আমি জানি। এর ফলে আমাদের সম্পর্ক ক্রমে তিক্ত হয়ে ওঠে এবং অবশেষে আমরা বিচ্ছেদের পথ বেছে নিতে বাধ্য হই।’’ ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে আদালতে ডিভোর্সের আবেদন করেন তিনি, যা চলতি বছরের ৪ জুন চূড়ান্ত হয়।
বিচ্ছেদের পর তৃষিকা তার মায়ের সাথে দাঁইহাটের বকুলতলার বাড়িতে থাকতে শুরু করে। তবে পিতার সাথে সম্পর্কও বজায় ছিল। বাবার মতে, মায়ের অত্যাচারেই তার মেয়ে এমন কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
তৃষিকার মৃত্যুর ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কেউ লিখিত অভিযোগ দায়ের করেননি। তবে পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, তারা প্রয়োজনীয় তদন্ত করছে।