ধর্ষণ-খুনের অভিযোগে ধৃত যুবকের রহস্যমৃত্যু জেলে
মহারাষ্ট্রের তালোজা জেলে রবিবার ভোরে ঘটে গেল এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা। গত ডিসেম্বরে ১৩ বছরের এক কিশোরীকে ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া বিশাল গাউলি নামে এক যুবকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়েছে জেলের শৌচাগার থেকে। এখন প্রশ্ন উঠছে—এটা আত্মহত্যা, না কি সাজানো মৃত্যু?
অপরাধের অভিযোগে বিচারাধীন বন্দি
ঠাণে জেলার কল্যাণ এলাকা থেকে এক নাবালিকাকে অপহরণ করে ধর্ষণ ও পরে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার হয় বিশাল। এই ঘটনায় তার স্ত্রী সাক্ষীকেও গ্রেফতার করা হয়েছিল মৃতদেহ লোপাটে সাহায্য করার অপরাধে। বিশালকে রাখা হয়েছিল নভি মুম্বইয়ের তালোজা জেলে, আর সাক্ষী বন্দি ছিলেন বাইকুল্লা মহিলা জেলে।
শৌচাগারে মিলল ঝুলন্ত দেহ
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার ভোর চারটে নাগাদ শৌচাগারে প্রবেশ করেন বিশাল। কিছুক্ষণ পরে তাঁকে গলায় তোয়ালে পেঁচানো অবস্থায় ঝুলন্ত পাওয়া যায়। প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, শৌচাগারে থাকা লোহার শিক ব্যবহার করে আত্মহত্যা করেন তিনি। তবে এই ঘটনায় একাধিক প্রশ্ন উঠেছে, কারণ তালোজা জেলের শৌচাগারে কোনও দরজা নেই—সুরক্ষার স্বার্থে সব বন্দিদের কার্যকলাপের উপর নজর রাখার কথা জেল কর্মীদের।
নজরদারির গাফিলতি?
যেখানে এমন এক ভয়ঙ্কর মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তি বন্দি, সেখানে নিরাপত্তা ও নজরদারির ঘাটতি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। অভিযোগ উঠছে, ভোরবেলা রক্ষীদের অনেকে গভীর ঘুমে ছিলেন, ফলে নজরদারির ফাঁকে ঘটে যায় এই মৃত্যু। বিশালের মৃত্যুর খবর পেয়েছেন স্ত্রী সাক্ষী, যিনি এখনও বিচারাধীন বন্দি হিসেবে রয়েছেন বাইকুল্লার মহিলা জেলে।
আত্মহত্যা না সাজানো মৃত্যু?
আইনগত বিচার শুরু হওয়ার আগেই এমন মৃত্যু শুধু বিশালের পরিবার নয়, প্রশ্ন তুলছে গোটা ব্যবস্থার উপরেও। আদৌ কি এটি আত্মহত্যা, নাকি জেলের ভিতরে ঘটে যাওয়া অন্য কোনও অশুভ ঘটনা? এর তদন্ত এখন পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হাতে।
ন্যায়বিচারের অপেক্ষা অসমাপ্ত
এই ঘটনার পর বিশালের বিরুদ্ধে চলা মামলাটির আর কোনও বিচার হবে না। যদিও মৃত ব্যক্তি অপরাধী ছিলেন কিনা, তা প্রমাণ হবার আগেই তাঁর মৃত্যু বিচার ব্যবস্থাকে অসমাপ্ত রেখে দিল। পাশাপাশি, এই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ স্পষ্ট না হওয়া পর্যন্ত আশঙ্কা, আতঙ্ক এবং প্রশ্ন থেকেই যাবে।
এই এক মর্মান্তিক ঘটনার মধ্যে দিয়ে আবারও স্পষ্ট হল—জেলের চার দেওয়ালের ভেতরে কত কিছু ঘটে যায় যা বাইরের জগৎ জানতেই পারে না। তবে একটি প্রশ্ন জেগে থাকে—এই মৃত্যু কি শেষ রায়, নাকি আরও এক অমীমাংসিত মামলা?