Wednesday, February 12, 2025

বারে নাচা বা ছোট পোশাক পরা অপরাধ নয়, জানিয়ে দিল আদালত

Share

বারে নাচা বা ছোট পোশাক পরা!

পাহাড়গঞ্জের এক পানশালায় নাচগান করার অভিযোগে সাত যুবতীর বিরুদ্ধে অশ্লীলতার মামলা হয়েছিল। কিন্তু দিল্লির আদালত সাফ জানিয়ে দিল, ছোট পোশাক পরে নাচা কোনও অপরাধ নয়, যতক্ষণ না তা জনসাধারণের অনুভূতিতে আঘাত করে।

একটি পানশালায় নাচগান করা কি অপরাধ হতে পারে? ছোট পোশাক পরে বার বা ক্লাবে যাওয়া কি শাস্তিযোগ্য অপরাধ? এই প্রশ্নের উত্তর দিল দিল্লির আদালত। সম্প্রতি এক মামলার রায়ে বিচারক স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, শুধু মাত্র ছোট পোশাক পরা বা পানশালায় নাচা অশ্লীলতার মধ্যে পড়ে না। যতক্ষণ না তা জনসাধারণের বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়, ততক্ষণ পর্যন্ত এই ধরনের কাজকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা যাবে না।

কী ছিল মামলার বিষয়?

গত বছর মার্চ মাসে দিল্লির পাহাড়গঞ্জ এলাকার এক পানশালায় কয়েকজন মহিলার বিরুদ্ধে অশ্লীল নাচগানের অভিযোগ ওঠে। অভিযোগকারীদের দাবি ছিল, ওই যুবতীরা এমনভাবে নাচছিলেন, যা সমাজের ওপর খারাপ প্রভাব ফেলতে পারে এবং ভারতীয় সংস্কৃতির পরিপন্থী। এরপর ভারতীয় দণ্ডবিধির ২৯৪ ধারায় মামলা রুজু করা হয়, যা প্রকাশ্যে অশ্লীল কাজ এবং জনসাধারণের বিরক্তির অভিযোগের আওতায় পড়ে।

আদালতের পর্যবেক্ষণ কী বলছে?

দিল্লির তিসহাজারি আদালতে মামলাটি ওঠার পর বিচারক নীতু শর্মা সমস্ত তথ্যপ্রমাণ খতিয়ে দেখেন। পানশালার সিসিটিভি ফুটেজও আদালতে পেশ করা হয়েছিল। সেই ফুটেজ বিশ্লেষণ করে বিচারক রায়ে জানান—

✔ অভিযুক্ত মহিলারা কোনওভাবেই শরীর অনাবৃত করেননি।
✔ তাঁদের নাচকে অশ্লীল বলা যায় না।
✔ যে গানে তাঁরা নাচছিলেন, সেটাও কোনও ভাবেই আপত্তিকর ছিল না।

এরপরই সাত মহিলাকে বেকসুর খালাসের নির্দেশ দেন আদালত। একই সঙ্গে ওই পানশালার ম্যানেজারের বিরুদ্ধেও সমস্ত অভিযোগ খারিজ করা হয়।

আদালতের গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য

রায়ে বিচারক বলেন, “ছোট পোশাক পরা কোনও অপরাধ নয়। পানশালায় নাচ করাও আইনের পরিপন্থী নয়। যতক্ষণ না তা জনসাধারণের বিরক্তির কারণ হচ্ছে বা প্রকাশ্যে কোনও আপত্তিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করছে, ততক্ষণ এটি কোনও অপরাধ হতে পারে না।”

এই রায়ের গুরুত্ব কতটা?

ভারতে অনেক সময় মহিলাদের পোশাক বা সামাজিক আচরণ নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। ছোট পোশাক পরা, পানশালায় যাওয়া বা পারফর্ম করা নিয়ে নানা সামাজিক ট্যাবু রয়েছে। আদালতের এই রায় স্পষ্ট করে দিল, ব্যক্তিগত পছন্দ এবং স্বাধীনতাকে সম্মান করা উচিত। কারও পোশাক বা তাঁর পেশাগত কাজকে অশ্লীল বলে দাগিয়ে দেওয়া যাবে না, যতক্ষণ না তা সমাজের বড় অংশের বিরক্তির কারণ হচ্ছে।

সমাজের প্রতিক্রিয়া

এই রায়ের পর সমাজের বিভিন্ন মহল থেকে নানা প্রতিক্রিয়া এসেছে। কেউ বলছেন, এটি ব্যক্তি স্বাধীনতার সপক্ষে একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। আবার কেউ মনে করছেন, এর ফলে ভবিষ্যতে অশ্লীল কাজের সংজ্ঞা আরও নরম হয়ে যেতে পারে। তবে আদালতের সিদ্ধান্ত একথাই বলছে—একজন মহিলা কী পরবেন বা কোথায় নাচবেন, তা নিয়ে আইনি রায়ের প্রয়োজন নেই, যতক্ষণ না সেটা সত্যিই কারও সমস্যার কারণ হচ্ছে।

শেষ কথা

ছোট পোশাক পরা বা পানশালায় নাচগান করা সামাজিকভাবে কিছু মানুষের পছন্দ না-ও হতে পারে, তবে তা আইনের চোখে অপরাধ নয়—এই বার্তাই দিল্লির আদালতের রায়ে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। এই রায় যে ভবিষ্যতে অনেক বিতর্কের রাস্তাও বন্ধ করবে, তা বলাই যায়।

৬২ লাখ টাকায় মায়ামির রাজকীয় ভিলা ভাড়া! ওনলি ফ্যানস মডেলদের মাসিক আয় শুনলে চমকে যাবেন

Read more

Local News