সইফের বাড়ি থেকে বেরিয়ে হেডফোন কেনার সময় ধরা পড়ল হামলাকারী
মুম্বইয়ের বান্দ্রায় অভিনেতা সইফ আলি খানের বাড়িতে ছুরিকাঘাতের ঘটনা এখনও সারা দেশজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। ঘটনার ৪৮ ঘণ্টা পরও দুষ্কৃতী অধরা। তবে নতুন সিসিটিভি ফুটেজে পাওয়া গেল সেই ব্যক্তির আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ ছবি। জানা গেছে, সইফের ওপর আক্রমণ করার পর ভোরবেলা বান্দ্রা থেকে দাদরে গিয়ে একটি মোবাইল দোকান থেকে হেডফোন কিনেছেন অভিযুক্ত।
নতুন সিসিটিভি ফুটেজে চিহ্নিত দুষ্কৃতী
গত বুধবার গভীর রাতে এক অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি সইফ আলি খানের বান্দ্রার বাড়িতে ঢুকে পড়ে। বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে ওই ব্যক্তি সইফকে ছ’বার ছুরিকাঘাত করে। এই ঘটনা সারা বলিউডে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে। পুলিশ তখন থেকেই অভিযুক্তের খোঁজে তৎপর।
এবার দাদরের কবুতরখানা এলাকার একটি দোকানের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেল, সেই একই ব্যক্তিকে। ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, মাথা নিচু করে মোবাইলে কিছু দেখতে দেখতে তিনি ‘ইকরা’ নামের একটি মোবাইল ফোনের দোকানে ঢোকেন। এরপর দোকানে দাঁড়িয়ে একটি হেডফোন কেনেন।
ফুটেজ থেকে প্রাপ্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
নতুন সিসিটিভি ফুটেজের ভিত্তিতে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সামনে এসেছে।
- পরিচ্ছদ: অভিযুক্তের পরনে ছিল নীল শার্ট এবং কালো ট্রাউজার। পিঠে একটি ব্যাগ ঝুলানো ছিল।
- সময়: ফুটেজ অনুযায়ী, ১৬ জানুয়ারি সকাল ৯টার সময় অভিযুক্ত দাদরের মোবাইল দোকানে প্রবেশ করেন।
- আচরণ: দোকানে তিনি মাথা নিচু করে মোবাইলে কিছু দেখছিলেন এবং শান্ত স্বভাবেই হেডফোন কিনছিলেন, যা তার আত্মবিশ্বাসের প্রমাণ দেয়।
- অবস্থান: ফুটেজ থেকে অনুমান করা হচ্ছে যে, সইফের বাড়িতে হামলার পর ভোরের দিকে তিনি সরাসরি দাদরে পৌঁছান।
পুলিশের তদন্তের নতুন মোড়
মুম্বই পুলিশ ইতিমধ্যেই ফুটেজের ভিত্তিতে দুষ্কৃতীর সন্ধান শুরু করেছে। বান্দ্রার সিসিটিভি ফুটেজ এবং দাদরের নতুন ফুটেজকে একত্রিত করে তদন্তের পদ্ধতি আরও তীক্ষ্ণ করা হচ্ছে। তবে এই ঘটনায় শুক্রবার সকালে একজন সন্দেহভাজনকে আটক করেছিল পুলিশ, কিন্তু জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
নতুন ফুটেজে অভিযুক্তের পরিধান এবং তার আচরণ খুবই স্পষ্ট ধরা পড়েছে। পুলিশ দাবি করছে, এটি এখন তদন্তে বড় সুরাহা দিতে পারে।
সইফের পরিবারের প্রতিক্রিয়া
এই ঘটনার পর থেকে সইফ আলি খান এবং তার পরিবার মানসিক চাপে রয়েছেন। করিনা কাপুর এবং তাদের সন্তানরা সেই রাতে বাড়িতেই ছিলেন। করিনা জানিয়েছেন, সইফ তাদের রক্ষা করার সময় আহত হন। সইফ বর্তমানে চিকিৎসাধীন থাকলেও চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তিনি বিপদমুক্ত।
ঘটনার পুনরাবৃত্তি এবং আগাম পরিকল্পনা
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এই ঘটনা শুধুমাত্র ডাকাতির উদ্দেশ্যে করা হতে পারে, কিন্তু সিসিটিভি ফুটেজ থেকে সন্দেহ করা হচ্ছে, দুষ্কৃতীর কাজ পূর্বপরিকল্পিত।
অভিযুক্তের আচরণে কোনও ভীতির লক্ষণ না থাকায় পুলিশ আরও গভীরে তদন্ত করছে। ইতিমধ্যে মুম্বইয়ের বিভিন্ন জায়গায় তার ছবি ছড়িয়ে দিয়ে নাগরিকদের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।
জনসাধারণের প্রতি পুলিশের বার্তা
মুম্বই পুলিশ নাগরিকদের কাছে অনুরোধ জানিয়েছে, কেউ যদি এই অভিযুক্তকে চিহ্নিত করতে পারে, তবে তৎক্ষণাৎ স্থানীয় থানায় যোগাযোগ করতে। অভিযুক্তকে দ্রুত গ্রেফতার করার জন্য পুলিশের একটি বিশেষ দল তৎপর রয়েছে।
সইফ আলি খানকে আক্রমণকারী এই দুষ্কৃতী এখনও ধরা না পড়লেও নতুন সিসিটিভি ফুটেজ পুলিশের তদন্তকে গুরুত্বপূর্ণভাবে এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। মুম্বই পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, অভিযুক্তকে দ্রুত গ্রেফতার করে ঘটনার আসল কারণ উদ্ঘাটন করা হবে।
সইফ আলি খানকে কুপিয়েছে এই ব্যক্তি? সিসিটিভি-তে ধরা পড়ল অভিযুক্তের ছবি
