Friday, January 31, 2025

বাজির শব্দে গমগম কলকাতা: পুলিশের কার্যক্রমে অব্যবস্থার চিত্র

Share

বাজির শব্দে গমগম কলকাতা

কালীপুজোর রাতে কলকাতায় বাজির শব্দবাজি ক্রমশ বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নগর পুলিশের কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। শহরের বিভিন্ন জায়গায় বেআইনি বাজির চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং ডিজের শব্দ তাণ্ডবও অব্যাহত রয়েছে। এই অবস্থায়, শহরের নিরাপত্তা এবং পরিবেশ সংরক্ষণ নিয়ে নাগরিকদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে। তাহলে কি পুলিশের কার্যক্রমে কোনও গলদ আছে?

বেআইনি বাজির বাজার

গত ২৪ ঘণ্টায় শহরের নানা জায়গায় বেআইনি বাজি বিক্রি হতে দেখা গেছে। গলিঘুঁজির মাঝে টেবিল পেতে বাজি বিক্রি করা হচ্ছে এবং এসব নির্দেশ উপেক্ষা করে মানুষের উপচে পড়া ভিড় জমে উঠছে। তীব্র শব্দে ডিজে বাজাতে বাজাতে কালী প্রতিমাকে মণ্ডপে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এই পরিস্থিতি নিয়ে অনেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। তারা প্রশ্ন তুলছেন, যদি এভাবে চলতে থাকে, তাহলে পরবর্তীতে কী হবে?

পুলিশের কার্যক্রমের ব্যর্থতা

বৃহস্পতিবার রাত গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বাজির আওয়াজ শহরের কোণে কোণে প্রতিধ্বনিত হতে শুরু করেছে। যদিও পুলিশের পক্ষ থেকে কিছু অভিযান চালানো হয়েছে, তবে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আসেনি। পরিবেশকর্মী নব দত্ত অভিযোগ করেন, “পুলিশের কার্যক্রম ছেলেখেলা হয়ে গেছে। যদি আমাদের কাছে এই পরিমাণ অভিযোগ আসে, তাহলে পুলিশের কাছে নিশ্চয়ই আরও অনেক বেশি অভিযোগ জমা পড়েছে।”

কসবায় ঘটনার চিত্র

কসবায় পুলিশের কার্যক্রমের গাফিলতি ধরা পড়েছে। রাসবিহারী কানেক্টরে বাজি বসিয়ে আগুন ধরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে এবং সেখান দিয়ে দ্রুত গতিতে যাওয়া একটি গাড়ি দুর্ঘটনা এড়িয়েছে। এমনকি, কয়েকটি গাড়িতে চকলেট বোমা জ্বালিয়ে ছোঁড়ারও ঘটনা ঘটেছে। অথচ, পুলিশ সদস্যরা স্রেফ দর্শকের ভূমিকায় ছিলেন। এমন পরিস্থিতি কালীঘাট, বেহালা, বালিগঞ্জের কিছু অংশ, তপসিয়া, কাশীপুর এবং অন্যান্য এলাকায় দেখা গেছে।

নাগরিকদের হতাশা

হাজরা মোড়ের কাছে এক প্রবীণ নাগরিক বাজির আওয়াজে অতিষ্ঠ হয়ে পুলিশে অভিযোগ জানান। কিন্তু অভিযোগের কোনো সুরাহা না পেয়ে তিনি উল্টো শাসনের শিকার হন। এমন পরিস্থিতিতে লালবাজারের কর্তারা প্রকাশ্যে কোনো প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি। ১০০ ডায়ালে ফোন করলে পুলিশ বলেছে, “অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পুলিশ এলাকার নিরাপত্তা রক্ষা করতে চেষ্টা চালাচ্ছে।”

পুলিশের ভাবমূর্তি রক্ষা?

এদিন বিভিন্ন জায়গায় বেআইনি বাজির বিষয়ে পুলিশের একজন কর্তা মন্তব্য করেন, “পুলিশের ভাবমূর্তি যাতে খারাপ না হয়, সেজন্য ধরপাকড়ের চেয়ে বোঝানোর চেষ্টা হচ্ছে।” কিন্তু প্রশ্ন উঠে, এই ভাবমূর্তি রক্ষা করতে গিয়ে শহরের নিরাপত্তা এবং নাগরিকদের নিরাপত্তা কি খর্ব হচ্ছে? এদিন রাত ৮টা পর্যন্ত ৩৩ জনকে আটক করা হয়েছে, কিন্তু এর মধ্যে মাত্র সাতজনকে নিষিদ্ধ শব্দবাজি ফাটানোর অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

Read more

Local News