Monday, December 1, 2025

বাজার খুলতেই ধস: বিনিয়োগকারীদের ৩ লক্ষ কোটির লোকসান, স্টক মার্কেটে বড় পতন

Share

বাজার খুলতেই ধস

আজ বৃহস্পতিবার শেয়ারবাজারে বড়সড় পতন লক্ষ্য করা গেছে। বাজারের সূচনা থেকেই সেনসেক্স ও নিফটিতে তীব্র দরপতন দেখা দিয়েছে। বিনিয়োগকারীদের প্রায় ৩ লক্ষ কোটি টাকার লোকসান হয়েছে সকালেই। মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভের সুদের হারের পরিবর্তনজনিত সিদ্ধান্ত এবং এর বৈশ্বিক প্রভাব ভারতীয় শেয়ারবাজারে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।

সেনসেক্স এবং নিফটির পতন

আজকের শুরুর বাজারে সেনসেক্স সূচক এক ধাক্কায় ১০০০ পয়েন্ট কমে গেছে, যা ৮০,০০০ পয়েন্টের নিচে চলে এসেছে। অন্যদিকে নিফটি ৫০ সূচকেও ২৯১ পয়েন্ট পতন ঘটে। বর্তমান স্তরে নিফটি ২৩,৯০৭ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই দরপতনের অন্যতম কারণ ফেডারেল রিজার্ভের সিদ্ধান্ত, যা ২০২৫ সালে সুদের হার কমানোর প্রতিশ্রুতি দিলেও তা বর্তমান বাজারে অনিশ্চয়তার জন্ম দিয়েছে। এর প্রভাবে মার্কিন বাজার থেকে শুরু করে ভারতের শেয়ারবাজারেও নেতিবাচক প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।

আইটি এবং ব্যাঙ্কিং সেক্টরের বড়সড় ক্ষতি

আজকের বাজারে সেনসেক্সের ৩০টি স্টকের মধ্যে ২৮টি স্টকেই পতন হয়েছে। নিফটির ৫০টি স্টকের মধ্যে ৪৭টি স্টক পতনের সঙ্গে ট্রেড করছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আইটি সেক্টর।

পতনের হার:

  • ইনফোসিস: ২.৪৯%
  • এসবিআই: ২.১৪%
  • এইচসিএল টেক: ১.৯৩%
  • টেক মহিন্দ্রা: ১.৮৫%
  • টাটা স্টিল: ২.০১%
  • বাজাজ ফিনসার্ভ: ১.৬৭%

এর পাশাপাশি ব্যাঙ্কিং, অটো, এফএমসিজি, অয়েল অ্যান্ড গ্যাস, এবং কনজিউমার ডিউরেবলস সেক্টরেও বড়সড় পতন লক্ষ্য করা গেছে।

কারা মুনাফা করেছে?

পতনের মধ্যে কেবলমাত্র হিন্দুস্তান ইউনিলিভার এবং আইটিসি-র মতো কয়েকটি স্টক মুনাফা প্রদর্শন করেছে। অন্যদিকে, ফার্মা এবং হেলথকেয়ার সেক্টরে ইতিবাচক প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে।

বাজারের সামগ্রিক চিত্র

আজ বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জে মোট ৩৩০৬টি শেয়ারের লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৮৪১টি শেয়ারের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে, বাকি প্রায় ২৪৬৫টি শেয়ারের দাম কমেছে।

গতকাল বাজার মূলধন ছিল ৪৫২.৬০ লক্ষ কোটি টাকা। আজ তা কমে দাঁড়িয়েছে ৪৪৯.৩৪ লক্ষ কোটি টাকায়। অর্থাৎ বিনিয়োগকারীদের ৩.২৬ লক্ষ কোটি টাকার লোকসান হয়েছে।

বাজার পতনের কারণ

বাজারের এই পতনের প্রধান কারণ হিসেবে মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভের সুদের হারের বিষয়ে নেওয়া সিদ্ধান্তকে চিহ্নিত করা হয়েছে। ২০২৫ সালের মধ্যে সুদের হার কমানোর পরিকল্পনা হলেও বর্তমান পরিস্থিতিতে তা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে।

এছাড়া, ভারতীয় মুদ্রার দরপতন এই পরিস্থিতিকে আরও গুরুতর করেছে। প্রথমবার ডলারের বিপরীতে রুপির মূল্য ৮৫ টাকায় পৌঁছায়, যা পরে ৮৫.০৭ টাকায় স্থিত হয়।

বিনিয়োগকারীদের করণীয়

এই পরিস্থিতিতে বিশেষজ্ঞরা বিনিয়োগকারীদের ধৈর্য ধরে বাজার পর্যবেক্ষণ করার পরামর্শ দিচ্ছেন। স্টক কেনার আগে সংশ্লিষ্ট সেক্টরের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা এবং বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনা করা জরুরি।

উপসংহার

আজকের শেয়ারবাজারে পতন বিনিয়োগকারীদের জন্য বড় ধাক্কা। তবে এই অবস্থাকে কিছু ক্ষেত্রে সুযোগ হিসেবেও দেখা যেতে পারে। ফার্মা এবং হেলথকেয়ার সেক্টরের মতো স্থিতিশীল স্টকগুলিতে বিনিয়োগ লাভজনক হতে পারে। বর্তমান পরিস্থিতিতে বিনিয়োগের আগে পুঙ্খানুপুঙ্খ গবেষণা অপরিহার্য।

4o

Read more

Local News