বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টে কঠোর নিরাপত্তা
বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির উত্তেজনার মধ্যেই সুপ্রিম কোর্ট চত্বরে নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়েছে। শনিবার সকাল থেকেই সুপ্রিম কোর্টের আশপাশে মোতায়েন করা হয়েছে সেনাবাহিনী, পুলিশ এবং র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। এমনকি, সাঁজোয়া যানও দেখা গেছে কোর্ট প্রাঙ্গণে। দেশটির আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানিয়েছে, উদ্ভূত পরিস্থিতি বিবেচনা করেই এই বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
নিরাপত্তার বাড়তি ব্যবস্থা কেন?
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) নিরাপত্তা বিভাগের উপ-কমিশনার মিনহাজ-উল-ইসলাম জানান, সাম্প্রতিক ঘটনাবলির পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট চত্বরে পুলিশি নিরাপত্তা আরও বাড়ানো হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনীও পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং আদালত চত্বরে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছে। এছাড়াও, শাহবাগ থানার ওসি খালিদ মনসুর জানান, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রেক্ষাপট
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি ভার্চুয়াল ভাষণের পর বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা নতুন মাত্রা পেয়েছে। ঢাকার ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাসভবনের কিছু অংশ জনতার আক্রোশের শিকার হয়। এরপর দেশের বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগের নেতাদের বাড়িতে হামলা, অগ্নিসংযোগ এবং ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
শুক্রবার রাতে গাজীপুরে এই অস্থিরতা আরও তীব্র হয়। সেখানে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সাবেক মন্ত্রী মোজাম্মেল হকের বাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে। তবে স্থানীয় বাসিন্দারা প্রতিরোধ গড়ে তুললে হামলাকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। এতে কমপক্ষে ১৫ জন আহত হন, যাদের মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্ট চত্বরে সেনা মোতায়েন
এই ঘটনাগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোর নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। ‘প্রথম আলো’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শনিবার সকাল থেকেই সুপ্রিম কোর্টের প্রবেশপথে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সেনাবাহিনীও সেখানে টহল দিচ্ছে এবং সাঁজোয়া যান প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
একজন পুলিশ কর্মকর্তা জানান, “আমরা জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চাই। আদালত প্রাঙ্গণে যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সে জন্য সর্বোচ্চ সতর্কতা নেওয়া হয়েছে।”
জনসাধারণের উদ্বেগ ও প্রশাসনের বার্তা
বাংলাদেশের রাজনৈতিক উত্তেজনা জনমনে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সাধারণ মানুষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছে এবং গুজবে কান না দেওয়ার অনুরোধ করেছে।
বাংলাদেশ সরকারের একজন মুখপাত্র বলেছেন, “আমরা নিশ্চিত করতে চাই যে জনগণের জান-মালের নিরাপত্তা অক্ষুণ্ণ থাকে। কেউ অরাজকতা সৃষ্টি করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
পরবর্তী পরিস্থিতি
বিশ্লেষকদের মতে, সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা আরও বাড়তে পারে। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। সুপ্রিম কোর্ট চত্বরে সেনা মোতায়েন ও নিরাপত্তা বাড়ানোর বিষয়টি সরকারের সতর্ক দৃষ্টিভঙ্গিরই প্রতিফলন।
জনগণের প্রত্যাশা, রাজনৈতিক দলগুলো সংলাপের মাধ্যমে চলমান সংকট সমাধানে এগিয়ে আসবে, যাতে দেশের স্থিতিশীলতা বজায় থাকে এবং সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক হয়।
নিজেরাই শূন্য, কেজরীবাল ও সিসৌদিয়ার পতন, আতিশীর কান ঘেঁষে জয়!