Monday, December 1, 2025

বাংলাদেশে বর্ষবরণে বাজি পোড়ানো নিষিদ্ধ: কঠোর শাস্তির বিধান

Share

বাংলাদেশে বর্ষবরণে বাজি পোড়ানো নিষিদ্ধ

বর্ষবরণের রাতে বাংলাদেশে আতশবাজি পোড়ানো কিংবা পটকা ফাটানোর মতো কাজ করলে কঠিন শাস্তির মুখোমুখি হতে হতে পারে সাধারণ মানুষ। শুধু মোটা অঙ্কের জরিমানাই নয়, এই অপরাধে জেলেও যেতে হতে পারে। ঢাকায় বিশেষ নজরদারির জন্য ভ্রাম্যমাণ আদালত মাঠে থাকবে, যাতে কেউ আইন ভঙ্গ করতে না পারেন।

কড়া আইন ও শাস্তি

বাংলাদেশের পরিবেশ, বন এবং জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সম্প্রতি জারি করা একটি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, “শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০০৬” অনুযায়ী আতশবাজি এবং পটকা ফাটানো একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। প্রথমবার কেউ এই আইন লঙ্ঘন করলে এক মাসের জেল কিংবা পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা হতে পারে। অপরাধের গুরুত্বের ভিত্তিতে এই দুই শাস্তিই একসঙ্গে প্রয়োগ করা হতে পারে।

পুনরায় একই কাজ করলে শাস্তি আরও কঠিন হবে। দ্বিতীয়বার এই অপরাধ করলে ছ’মাসের জেল কিংবা ১০ হাজার টাকা জরিমানা হতে পারে। এক্ষেত্রেও জরিমানা এবং জেল, উভয় শাস্তিই একসঙ্গে দেওয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

পরিবেশ ও সমাজের ক্ষতি

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে আতশবাজি ও পটকা ফাটানোর ক্ষতিকারক দিকগুলো।

  1. স্বাস্থ্যগত ক্ষতি: উচ্চমাত্রার শব্দ ও ধোঁয়া শিশু, বৃদ্ধ এবং হৃদ্‌রোগীদের স্বাস্থ্যের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে।
  2. পরিবেশের ক্ষতি: আতশবাজির রাসায়নিক নির্গমন পরিবেশ দূষণের প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
  3. জীববৈচিত্র্যের উপর প্রভাব: শব্দবাজির বিকট আওয়াজ পোষা প্রাণী থেকে শুরু করে বন্যপ্রাণীর উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে। বিশেষত, পাখিদের জীবনধারায় তা ব্যাঘাত ঘটায়।

কঠোর নজরদারি

বর্ষবরণে ঢাকার রাস্তায় ভ্রাম্যমাণ আদালত মোতায়েন থাকবে, যারা আইন প্রয়োগ নিশ্চিত করতে তৎপর থাকবে। অপরাধীদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাংলাদেশ সরকারের অন্তর্বর্তীকালীন মন্ত্রী মুহাম্মদ ইউনূসের প্রশাসন দেশের বিভিন্ন ক্লাব ও প্রতিষ্ঠানে এই বিষয়ে নির্দেশনা পাঠিয়েছে।

সামাজিক উদ্যোগ

সরকারি উদ্যোগ ছাড়াও পরিবেশ সচেতনতার জন্য বিভিন্ন সংগঠন সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার চালাচ্ছে। শব্দদূষণের ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করার চেষ্টা করছে তারা। ঢাকার অনেক ক্লাব এবং সংস্থা ইতোমধ্যে আতশবাজি ব্যবহার বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

বর্ষবরণের আনন্দ ও দায়িত্বশীলতা

বাংলাদেশ সরকার এই উদ্যোগের মাধ্যমে বর্ষবরণের আনন্দের সঙ্গে পরিবেশ সুরক্ষার বার্তা দিতে চায়। আইন লঙ্ঘনের শাস্তি যেমন কঠোর, তেমনি এটি সামাজিক দায়িত্ববোধ জাগিয়ে তুলতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। সচেতন নাগরিক হিসেবে এই আইন মেনে চলা এবং পরিবেশ রক্ষা করা আমাদের সবার কর্তব্য।

সুতরাং, আতশবাজি বা শব্দবাজি ছাড়াই বর্ষবরণ উদযাপনের পরিকল্পনা করুন। মোমবাতি, লাইটিং বা বন্ধুদের সঙ্গে সুরেলা আড্ডা দিয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানানো হোক আনন্দদায়ক এবং পরিবেশবান্ধব।

Read more

Local News