Monday, December 1, 2025

বাংলাদেশে বদলাচ্ছে প্রশাসনিক রীতি: মহিলা আধিকারিকদের আর ‘স্যর’ বলা চলবে না, ইউনূস সরকারের নতুন নির্দেশ

Share

বাংলাদেশে বদলাচ্ছে প্রশাসনিক রীতি!

বাংলাদেশের প্রশাসনিক ব্যবস্থায় দীর্ঘদিন ধরেই চলে আসা একটি প্রচলিত নিয়ম ভাঙতে চলেছে মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার। এত দিন সরকারি দফতর ও প্রশাসনিক স্তরে মহিলা পদাধিকারীদেরও পুরুষ সহকর্মীদের মতো ‘স্যর’ বলে সম্বোধন করতে হত। শেখ হাসিনার প্রায় ১৬ বছরের শাসনে এটি একটি প্রতিষ্ঠিত রীতি হয়ে উঠেছিল। কিন্তু ইউনূস সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এই নিয়ম অবিলম্বে বাতিল করা হচ্ছে।

গত বৃহস্পতিবার ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয় ইউনূসের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক। সেই বৈঠকেই ‘স্যর’ সম্বোধন সংক্রান্ত নিয়ম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। পরে ইউনূসের সচিবালয় থেকে একটি সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, শেখ হাসিনার সময়কালীন এই নির্দেশিকা আর বলবৎ থাকবে না। বিজ্ঞপ্তিতে পরিষ্কার বলা হয়েছে, “লিঙ্গ-সমতার যুগে মহিলা আধিকারিকদের পুরুষ আধিকারিকদের মতো ‘স্যর’ বলা সামাজিক ও প্রতিষ্ঠানগত ভাবে ঠিক নয়। এটি পরিবর্তন করার সময় এসে গেছে।”

এ বিষয়ে কী নতুন সম্বোধন ব্যবহার করা হবে, তা নির্ধারণ করতে একটি বিশেষ কমিটি গঠিত হয়েছে। এই কমিটির নেতৃত্বে রয়েছেন বাংলাদেশের শক্তি, সড়ক, পরিবেশ, রেল ও জলসম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজ়ওয়ানা হাসান। এক মাসের মধ্যে এই কমিটি তাদের প্রস্তাব ইউনূসের উপদেষ্টা পরিষদের কাছে জমা দেবে। কমিটির কাজ হবে মহিলা আধিকারিকদের সম্বোধনের জন্য এমন একটি শব্দ বেছে নেওয়া, যা লিঙ্গ-সমতা বজায় রাখে এবং সম্মানজনক হয়।

শুধু ‘স্যর’ শব্দ নিয়েই নয়, হাসিনা আমলে প্রবর্তিত আরও কিছু ‘পুরনো এবং জটিল’ আইন-নিয়ম নিয়েও নতুন করে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে। উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে সেই সমস্ত আইনগুলিও খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জানা গিয়েছে, প্রয়োজন হলে সেগুলিতেও সংশোধন আনা হতে পারে।

ইউনূস সরকারের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানাচ্ছে, শেখ হাসিনার আমলে শুধু সরকারি দফতরের কর্মচারীরাই নন, সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদেরও মহিলা আধিকারিকদের ‘স্যর’ বলে সম্বোধন করতে হতো। এমনকি যদি কেউ লিঙ্গপরিচয়ের দিকটি মাথায় রেখে এই সম্বোধন এড়াতে চাইতেন, তাহলেও প্রশাসনিক চাপের মুখে পড়তে হতো। এই নিয়ম নিয়ে বহু দিন ধরেই অসন্তোষ ছিল সমাজের বিভিন্ন স্তরে।

নতুন সরকারের এই সিদ্ধান্তে অনেকেই স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। সমাজতাত্ত্বিক এবং লিঙ্গ-সমতা বিষয়ক গবেষকরা মনে করছেন, এটি শুধু একটি শব্দ বদল নয়, এটি একটি মনোভাবের বদল। পুরুষতান্ত্রিক রীতি থেকে বেরিয়ে এসে প্রশাসনিক ভাষায়ও সমতা ও সম্মান বজায় রাখার দিকেই এগোচ্ছে বাংলাদেশ।

এখন দেখার, নতুন কমিটি ঠিক কী ধরনের শব্দ বা সম্বোধন প্রস্তাব করে এবং সেই নিয়ম কত দ্রুত বাস্তবায়িত হয়। তবে এতটুকু নিশ্চিত, হাসিনা সরকারের ‘স্যর’ বলা বাধ্যতামূলক রীতি এ বার অতীত হতে চলেছে।

গুগ্‌ল ড্রাইভের জায়গা শেষ? টাকা না খরচ করেও ১৫ জিবির বাইরে স্টোরেজ বাঁচানোর ৫টি কার্যকরী উপায়

Read more

Local News