রবীন্দ্রনাথের অপমান
কালীপুজোর রাতে সোশ্যাল মিডিয়ায় এক ক্ষোভজনক পোস্টে বলিউডে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অপমানের অভিযোগ তুললেন কবি ও পরিচালক শ্রীজাত। তাঁর অভিযোগ, কপিল শর্মার একটি কৌতুক শো-তে অভিনেত্রী কাজল উপস্থিত ছিলেন। সেখানে ক্রুষ্ণা অভিষেক রবীন্দ্রনাথের ‘যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে’ গানটির অপব্যাখ্যা করেন। শ্রীজাত জানান, “কাজলকে বাঙালি হিসেবে পেয়েই রবীন্দ্রনাথের গানকে মস্করার বিষয় হিসেবে বেছে নেয়া হয়েছে। এটি পরিকল্পিতভাবে করা হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “ক্রুষ্ণা অভিষেকের ব্যঙ্গাত্মক অঙ্গভঙ্গি ও কথাবার্তা সম্মান ও শালীনতার সীমা ছাড়িয়েছে।”
শ্রীজাতের এই বক্তব্য শেয়ার করেছেন পরিচালক ও সুরকার ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্ত। তিনি আনন্দবাজার অনলাইনকে জানিয়েছেন, “এই ঘটনাটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। এটি একটি অশিক্ষার প্রতিফলন।” তাঁর মতে, সঠিক শিক্ষার অভাবের কারণেই এমন ঘটনার জন্ম হচ্ছে।
কপিল শর্মার শোতে বিভিন্ন তারকারা বিভিন্ন উদ্দেশ্যে আসেন, কখনও ছবির প্রচারে, কখনও বিনোদনের জন্য। কিন্তু কাজলের আগমনে কীভাবে ঘটনাটি ঘটেছে তা নিয়ে শ্রীজাতের বক্তব্য স্পষ্ট। তিনি জানিয়েছেন, “যাঁরা এই কৌতুক দৃশ্য তৈরি করেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আমার অভিযোগ রয়েছে। এই কদর্য উপস্থাপনার বিরুদ্ধে আমি আমার আপত্তি জানাচ্ছি।”
এদিকে, শ্রীজাত কপিল শর্মার শোয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট চ্যানেল কর্তৃপক্ষকে ক্ষমা চাইতে বলেছেন। তিনি বলেছেন, “এক সপ্তাহ, অর্থাৎ ৭ নভেম্বর ২০২৪-এর মধ্যে আমার দাবিগুলি গৃহীত না হলে আমি আইনি পথে হাঁটব।” এটি প্রমাণ করে, তিনি বিষয়টিকে খুবই গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছেন।
শ্রীজাতের বক্তব্যকে সমর্থন জানিয়ে ইন্দ্রদীপ বলেছেন, “বলিউডের সকলেই অশিক্ষিত নয়, কিন্তু সামগ্রিকভাবে এই অশিক্ষার অভাব রয়েছে। এর ফলে অনেকেই কাকে নিয়ে কতটা কৌতুক করা যায়, তা বুঝতে পারছেন না।” তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে, “জাতীয় সঙ্গীত কে লিখেছে, সেটাও অনেকেই জানেন না!”
এছাড়া, শ্রীজাতের প্রতিবাদে কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, সৃজিত মুখোপাধ্যায়, রাজ চক্রবর্তী, আবীর চট্টোপাধ্যায়, সুমন ঘোষ, ইমন চক্রবর্তীসহ মোট ২১ জন বাংলা বিনোদন জগতের খ্যাতনামী ব্যক্তিত্ব যুক্ত হয়েছেন। তারা সকলেই শ্রীজাতের বক্তব্যকে সমর্থন জানিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেদের মতামত প্রকাশ করেছেন।
এখন দেখার বিষয় হলো, শ্রীজাত কপিল শর্মার কাছে সত্যিই কোনো জবাব পান কিনা, কিংবা তিনি তাঁর আইনি পদক্ষেপের পথে হাঁটবেন কিনা। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মতো একজন মহান কবির সম্মান রক্ষায় এই ঘটনার প্রভাব কতটা বৃহৎ হবে, সেটিও সময়ই বলে দেবে।