বর্ধমান শহরে ‘দ্রোহের কার্নিভাল’
বর্ধমান শহরে মঙ্গলবার বিকেলে প্রবল বৃষ্টির মাঝেও উদযাপিত হলো ‘দ্রোহের কার্নিভাল’। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র ডাক্তাররা প্রাকৃতিক দুর্যোগ উপেক্ষা করে অংশ নেন এই প্রতিবাদী কর্মসূচিতে। কিন্তু এই কার্নিভালে শুধু জুনিয়র ডাক্তাররাই অংশগ্রহণ করেননি, বরং সিনিয়র চিকিত্সক, প্রাক্তন ছাত্রছাত্রী এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বরাও উপস্থিত ছিলেন। তাদের সবার উপস্থিতি এই আন্দোলনকে এক নতুন মাত্রা দেয়।
এই সময়ে সারা পশ্চিমবঙ্গে দুর্গাপুজোর আনন্দ উচ্ছ্বাস চলছে, কিন্তু তার মধ্যেও জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলন ও অনশন অব্যাহত। মঙ্গলবার কলকাতার রেড রোডে যখন সরকারি পুজো কার্নিভাল চলছিল, তখনই অন্যদিকে রানি রাসমনি রোডে সিনিয়র ডাক্তাররা পাল্টা কর্মসূচি হিসেবে আয়োজন করেন এই ‘দ্রোহের কার্নিভাল’। এটি মূলত সরকারের বিরুদ্ধে তাদের প্রতিবাদ জানানোর একটি অভিনব পদ্ধতি।

তবে এই ‘দ্রোহের কার্নিভাল’-এর অনুমতি নিয়ে শুরু থেকেই বিতর্ক ছিল। পুলিস স্পষ্ট জানিয়ে দেয় যে পুজো কার্নিভালের দিনে কোনোভাবেই এই ধরনের প্রতিবাদ কর্মসূচি করা যাবে না। মুখ্যসচিব নিজেও ডাক্তারদের ইমেল করে অনুরোধ করেন, যাতে তারা এই দিনটিতে কোনো প্রতিবাদ কর্মসূচি না করেন। কিন্তু চিকিৎসকরা নিজেদের অবস্থানে অনড় ছিলেন।
মঙ্গলবার সকালে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে যখন কলকাতা পুলিস ১৬৩ ধারা জারি করে, যা অনুযায়ী জনসমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়। এই নির্দেশিকা প্রকাশের পর ডাক্তারদের পক্ষ থেকে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করা হয়।

অবশেষে, কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে পুলিসের ১৬৩ ধারার নির্দেশিকা খারিজ করা হয় এবং ‘দ্রোহের কার্নিভাল’ আয়োজনের অনুমতি দেওয়া হয়। ফলে রানি রাসমনি রোডে এই প্রতিবাদ কর্মসূচি সফলভাবে সম্পন্ন হয়।
এই ‘দ্রোহের কার্নিভাল’ শুধু একটি প্রতিবাদ নয়, বরং সরকারের নীতির বিরুদ্ধে ডাক্তারদের ক্ষোভের প্রতিফলন। বর্ধমানের মতো শহরেও এই কার্নিভালের সফল আয়োজন প্রমাণ করে যে আন্দোলনের আগুন আরও তীব্র হয়েছে, যা চিকিৎসা ক্ষেত্রের বিভিন্ন সমস্যা ও অব্যবস্থাপনার প্রতি মনোযোগ আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে।

