Saturday, February 22, 2025

বঙ্গ বিজেপিতে রদবদলের ছায়া, মোদীর ঘনিষ্ঠ বৃত্তে পৌঁছেছে সমীক্ষার রিপোর্ট!

Share

বঙ্গ বিজেপিতে রদবদলের ছায়া!

২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচন আর এক বছর দূরে। ঠিক এই সময়েই পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির সাংগঠনিক রদবদল নিয়ে জোর আলোচনা শুরু হয়েছে। কে হবেন নতুন রাজ্য সভাপতি? দলের মূল নেতৃত্ব কার হাতে থাকবে? সম্ভাব্য মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী কে? এই সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সমীক্ষা রিপোর্টের উপর বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে বলে খবর।

আগে শুধুমাত্র নির্বাচনী প্রার্থী বাছাইয়ে সমীক্ষা রিপোর্ট ব্যবহৃত হলেও এবার সাংগঠনিক রদবদলের ক্ষেত্রেও সমীক্ষার সুপারিশকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। বিজেপির শীর্ষ মহলের কাছে একাধিক সমীক্ষক সংস্থা তাদের রিপোর্ট পাঠিয়েছে, যা নিয়ে আলোচনা চলছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ঘনিষ্ঠ বৃত্তে।


শাহের তত্ত্বাবধানে রাজ্য বিজেপির পরিস্থিতির পর্যালোচনা

বঙ্গ বিজেপির উপর দীর্ঘদিন ধরেই বিশেষ নজর রেখেছেন অমিত শাহ। অন্যান্য রাজ্যের মতো এখানেও কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকদের মাধ্যমে তিনি নিয়মিত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন। তবে এবার শুধু শাহ নন, প্রধানমন্ত্রী মোদীর কাছেও বিশেষ সমীক্ষা রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে।

এই সমীক্ষাগুলি মূলত বিশ্লেষণ করছে—
কীভাবে দলকে আরও সংগঠিত করা যায়
নতুন সভাপতি ও গুরুত্বপূর্ণ পদগুলিতে কারা আসতে পারেন
দলীয় গঠনতন্ত্রের মধ্যে থেকেই শক্তিশালী নেতৃত্ব কাকে দেওয়া হবে

সূত্রের খবর, গুজরাতভিত্তিক সংস্থাগুলি নয়, বরং কর্নাটকের একটি নিরপেক্ষ সমীক্ষক সংস্থার রিপোর্ট মোদীর কাছে পৌঁছেছে।


নতুন নেতৃত্বে আসছে কি বড় পরিবর্তন?

বিজেপির অভ্যন্তরে বর্তমানে কয়েকটি শক্তিশালী গোষ্ঠী রয়েছে—
🔹 রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের নেতৃত্বাধীন গোষ্ঠী
🔹 বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর প্রভাবশালী দল
🔹 প্রাক্তন সভাপতি দিলীপ ঘোষের নিজস্ব অনুসারী গোষ্ঠী
🔹 সংগঠনের দায়িত্বপ্রাপ্ত দুই নেতার নিজস্ব বলয়

সমীক্ষক সংস্থার মতে, এতগুলো আলাদা নেতৃত্বের কারণে দল একত্রিত হতে পারছে না। তাই পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, একটি অভিন্ন কেন্দ্রবিন্দু তৈরি করতে হবে, যাতে সবাই একটি নেতৃত্ব মেনে চলে।

সমীক্ষা অনুযায়ী, সভাপতি পদে এমন কাউকে আনা উচিত—
যিনি দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে পারবেন
যিনি এক বছর পর বড় নেতৃত্ব হয়ে উঠবেন না
যিনি সাংগঠনিক ক্ষেত্রে দক্ষ এবং গ্রহণযোগ্য

সূত্রের খবর, জনজাতি বা প্রান্তিক শ্রেণি থেকে আসা একজন সাংসদকে সভাপতি করা হতে পারে।


শুভেন্দুর ভূমিকা কী হতে পারে?

বিজেপির অনেকেই মনে করছেন, শুভেন্দুকে রাজ্য সভাপতি করা হলে তিনি বিরোধী গোষ্ঠীগুলিকে দুর্বল করতে পারবেন। কিন্তু এখানে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে দলের “এক ব্যক্তি, এক পদ” নীতি। বিরোধী দলনেতা ও রাজ্য সভাপতি—দুই দায়িত্ব একসঙ্গে দেওয়া দলের নীতির বিরুদ্ধে যাবে।

তাই সমীক্ষার প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হয়েছে, শুভেন্দুকে প্রচার কমিটির প্রধান হিসেবে বসানো হোক। এতে—
🔹 তিনি দলের প্রধান প্রচার মুখ হবেন
🔹 এক ব্যক্তি, এক পদ নীতিও লঙ্ঘিত হবে না
🔹 দলীয় নেতৃত্বের ভারসাম্য বজায় থাকবে


দিলীপ ঘোষের ভূমিকা বাড়তে পারে

সমীক্ষার রিপোর্টে দিলীপ ঘোষের গুরুত্ব আরও বাড়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে রাঢ়বঙ্গ ও জঙ্গলমহলে বিজেপির পুরনো শক্তি ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে তাকে।

২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে এই অঞ্চলগুলোতে বিজেপির শক্ত অবস্থান ছিল, কিন্তু ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে সেই জায়গা অনেকটাই দুর্বল হয়ে যায়। দল এখন চাইছে, ২০২৬-এর আগে সেই জায়গা পুনরুদ্ধার করতে।


মোদী কি সরাসরি হস্তক্ষেপ করবেন?

সাধারণত সাংগঠনিক বিষয়গুলো নিয়ে অমিত শাহ ও জেপি নড্ডা সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে, ততই মোদীর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।

বিজেপি সূত্রে জানা গেছে, মোদী যখন কোনো রাজ্যে হস্তক্ষেপ করেন, তখন সেটা দলের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে বড় পরিবর্তন আনে। পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির বর্তমান পরিস্থিতি বিচার করে তিনি কি সরাসরি হস্তক্ষেপ করবেন?

🔹 সমীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী দলের নতুন নেতৃত্ব আসবে?
🔹 নির্বাচনের আগে সাংগঠনিক ক্ষমতার ভারসাম্য তৈরি হবে?
🔹 একাধিক গোষ্ঠীর মধ্যে ঐক্য ফেরানোর জন্য শীর্ষ নেতৃত্ব কঠোর সিদ্ধান্ত নেবে?

এখনই এসব প্রশ্নের উত্তর পাওয়া না গেলেও, রাজ্য বিজেপির বড় রদবদলের আভাস স্পষ্ট। দলকে শক্তিশালী করতে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব কড়া সিদ্ধান্ত নিলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না!

মাটির নীচ থেকে গর্জনের শব্দ! ভূমিকম্পের নতুন অভিজ্ঞতায় আতঙ্কিত দিল্লিবাসী— কেন হল এমন?

Read more

Local News