বকেয়ার দাবিতে বিদ্রোহ মহমেডান ফুটবলারদের
বাগানে ফুটবল বল ছড়ানো, অনুশীলনের সরঞ্জাম সাজানো। তবে, সেখানে ফুটবলারদের দেখা যাচ্ছে না। মাঠের মাঝে যেন গুমোট একটা পরিস্থিতি, যেখানে কেউ মাঠে নামতে ইচ্ছুক নয়। মহমেডান স্পোর্টিং ক্লাবের ফুটবলাররা, যারা কিছুদিন আগেই বেঙ্গালুরু এফসি-কে পরাজিত করে একটি উল্লেখযোগ্য জয় পেয়েছিলেন, তাদের মধ্যে হঠাৎ বিদ্রোহের সুর দেখা দিয়েছে।
এটি ছিল মঙ্গলবার বিকেল, যুবভারতীর অনুশীলন মাঠে। কোচ আন্দ্রে চের্নিশভ সহকারীদের নিয়ে মুখ থুবড়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন, তবে ফুটবলাররা কেউ মাঠে নামছিল না। পরিস্থিতি এতটাই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যে ড্রেসিংরুমে ঢোকার আগে এক ফুটবলার জানান, ‘‘বকেয়া না মেটালে আমরা অনুশীলনেই নামব না।’’ তাদের অভিযোগ, তারা গত দু’মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না এবং তাদের অ্যাপার্টমেন্টের ভাড়াও বাকি। যদিও দীর্ঘ সময় ধরে মুখ বুজে তারা অপেক্ষা করছিলেন, তবে বেঙ্গালুরুকে হারানোর পর তাদের忍耐 ভেঙে যায়। সুতরাং, এর পরেই বিদ্রোহের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এমনকি ফুটবলারদের দাবির কারণে টিম বাস চালকও সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, বাস চালাবেন না যতক্ষণ না তাদের বকেয়া মেটানো হয়। পরে কিছু অর্থ দিয়ে পরিস্থিতি সামালানো হয়।
এই মুহূর্তে, চেন্নাইয়িন এফসি-র বিরুদ্ধে ম্যাচের আগে মহমেডানের ফুটবলারদের বিদ্রোহ থামানোর জন্য ক্লাবের সিইও রজত মিশ্র এগিয়ে আসেন। তিনি রুদ্ধদ্বার ড্রেসিংরুমে এক ঘণ্টার বেশি বৈঠক করেন এবং ফুটবলারদের আশ্বাস দেন যে, বুধবার সকালের মধ্যে বকেয়া মিটিয়ে দেওয়া হবে। এমনকি, কিছু ফুটবলার স্পষ্ট জানিয়ে দেন যে, তারা ম্যাচ খেলবেন না যদি তাদের বেতন না দেওয়া হয়। এর পরেই অবশেষে অনুশীলনে অংশ নেন মিরজালল কাশিমভ ও অন্যান্য ফুটবলাররা।
এই পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন উঠছে, মহমেডান কি আদৌ চেন্নাইয়িন এফসি-র বিরুদ্ধে ম্যাচে মনোযোগ রাখতে পারবে? এছাড়া, আলেক্সিস গোমেসের চোটও পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলেছে। তবে কোচ আন্দ্রে চের্নিশভ আশাবাদী, তিনি বলেছেন, ‘‘আমরা যেমন ব্যর্থতা ভুলে এগিয়েছি, তেমনই বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে জয়কে ভুলে যেতে হবে।’’ তিনি মনে করেন, দলের সদস্যরা শীঘ্রই স্বাভাবিক মনোভাব নিয়ে ফিরে আসবে এবং নিজেদের সেরাটা দিতে প্রস্তুত হবে।
আজ, আইএসএলে মহমেডান স্পোর্টিং চেন্নাইয়িন এফসি-র মুখোমুখি হবে। ম্যাচটি কিশোর ভারতী স্টেডিয়ামে সন্ধ্যা ৭.৩০-এ শুরু হবে এবং স্পোর্টস ১৮ নেটওয়ার্কে সম্প্রচারিত হবে।
ফুটবলারদের এই বিদ্রোহ, ক্লাবের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক এবং বকেয়া পরিশোধের প্রশ্ন—এই সবকিছুই মাঠের বাইরে মহমেডানের চলমান পরিস্থিতিকে আরও চাপের মধ্যে ফেলে দিচ্ছে। যদিও কোচ এবং সিইওদের আশ্বাসের পরেও, ফুটবল মাঠে প্রতিযোগিতা চালিয়ে যাওয়ার জন্য একটা স্থিতিশীল পরিবেশ প্রয়োজন, যা এখনও মহমেডান স্পোর্টিংয়ের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।