Sunday, November 30, 2025

প্রসবযন্ত্রণায় অবিচল ঐশ্বর্যা— পুত্রবধূর মানসিক শক্তির প্রশংসায় অমিতাভ বচ্চন

Share

পুত্রবধূর মানসিক শক্তির প্রশংসায় অমিতাভ বচ্চন!

২০১১ সালে মাতৃত্বের স্বাদ পেয়েছিলেন ঐশ্বর্যা রাই বচ্চন। সে সময় হাসপাতালের প্রসবকক্ষে যে কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছিলেন অভিনেত্রী, তা পরে জানিয়েছেন তাঁর শ্বশুর অমিতাভ বচ্চন নিজেই। বচ্চন পরিবারের আয়োজিত এক সাংবাদিক বৈঠকে উঠে আসে সেই অভিজ্ঞতার কথা— যেখানে স্পষ্ট ধরা পড়ে ঐশ্বর্যার অসামান্য সহনশক্তি, মানসিক বল আর মাতৃত্বের প্রতি তাঁর গভীর প্রস্তুতি।


২–৩ ঘণ্টা টানা প্রসবযন্ত্রণা— কোনও ওষুধ নেননি ঐশ্বর্যা

ঐশ্বর্যার সন্তানজন্মের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন অমিতাভ। সেখানে তিনি জানান, বিশ্বসুন্দরী অভিনেত্রী প্রসবের সময়ে প্রবল যন্ত্রণা সহ্য করেও ব্যথানাশক বা অবশ করার কোনও ওষুধ নেননি।

অমিতাভের ভাষায়—
“ওকে সত্যিই প্রচণ্ড কষ্ট পেতে হয়েছিল। কিন্তু অবিশ্বাস্যভাবে টানা ২ থেকে ৩ ঘণ্টা যন্ত্রণা সহ্য করেছে ঐশ্বর্যা। ও নিজেই নর্মাল ডেলিভারির সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। ওষুধ নেওয়ার ব্যাপারে একেবারেই রাজি হয়নি।”

একজন মা হওয়ার পথে যে মানসিক ও শারীরিক দৃঢ়তার প্রয়োজন, ঐশ্বর্যা সেই শক্তিকেই সামনে এনেছিলেন। পরিবারের সকলেরই কথা ছিল— ঐশ্বর্যা এই অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে নিজেকে আরও পরিণত, আরও দৃঢ় করে তুলেছেন।


২০১০ সালের বিতর্ক— ‘মা হতে পারবেন না’ দাবি করে প্রতিবেদন

ঐশ্বর্যা মা হওয়ার এক বছর আগেই একটি জনপ্রিয় ম্যাগাজিনে প্রকাশিত হয়েছিল, নায়িকার নাকি এমন শারীরিক সমস্যা আছে, যার কারণে তিনি সন্তান ধারণ করতে পারবেন না। এই দাবি পড়ে ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন অমিতাভ। তিনি সরাসরি প্রতিবাদ করে বলেছিলেন—

“এ সবই ভিত্তিহীন, রুচিহীন এবং সম্পূর্ণ মিথ্যা তথ্য।”

পরবর্তীতে আরাধ্যার জন্ম সেই অযাচিত বিতর্ককে চিরতরে নিশ্চুপ করে দেয়।


অভিষেক–ঐশ্বর্যার প্রেম, বিয়ে ও পরিবার

অভিষেক বচ্চন ও ঐশ্বর্যার সম্পর্ক শুরু হয় ‘গুরু’ ছবির শুটিংয়ের সময়। দু’জনেই তখন বলিউডে নিজেদের জমিয়ে নিচ্ছেন। এর আগে ‘ঢাই অক্ষর প্রেম কে’ ও ‘কুছ না কহো’-তে তাঁরা একসঙ্গে কাজ করেছিলেন।

২০০৭ সালে জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানে বিয়ে করেন দু’জন। বলিউডের অন্যতম হাই-প্রোফাইল এই দম্পতির জীবনে খুশির স্রোত বইতে শুরু করে ২০১১ সালে, যখন জন্ম হয় তাঁদের কন্যা আরাধ্যার।


ঐশ্বর্যার বিরতি, অভিষেকের ব্যস্ততা

গত কয়েক বছরে ঐশ্বর্যা অভিনয় থেকে কিছুটা দূরে। মাঝে ‘পোন্নিয়িন সেলভান’-এ তাঁকে দেখা গেলেও নিয়মিত কাজ করেন না। অন্য দিকে অভিষেক বচ্চন নিজের কেরিয়ারে আবার গতি এনেছেন— ওয়েব প্ল্যাটফর্ম থেকে সিনেমা, সব জায়গাতেই তাঁর উপস্থিতি স্পষ্ট।


মাতৃত্বের শক্তির এক অনন্য উদাহরণ

ঐশ্বর্যা রাই বচ্চনের মাতৃত্বের এই গল্প শুধু বচ্চন পরিবারের ব্যক্তিগত স্মৃতি নয়— এটি এক নারীর মানসিক দৃঢ়তার, মাতৃত্বের প্রতি অঙ্গীকারের এবং শরীর–মনকে প্রস্তুত রাখার বিরল উদাহরণ।

অমিতাভের মুখে তাঁর প্রশংসা যেন আরও একবার মনে করিয়ে দেয়— আলো–ঝলমলে দুনিয়ার আড়ালেও জীবনের এমন মুহূর্ত আছে, যা সবচেয়ে সত্য, সবচেয়ে মানবিক।

Read more

Local News