মানুষের সেবায় ‘সেবাশ্রয়’
মানুষের জন্য কাজ করার ক্ষমতাই প্রশাসনের আসল পরিচয়। কথার ফুলঝুরি দিয়ে প্রশাসন চলতে পারে না—তার জন্য চাই নিরলস প্রচেষ্টা, যা সাধারণ মানুষের জীবনে প্রকৃত পরিবর্তন আনতে পারে। এমনটাই বার্তা দিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ তাঁর লোকসভা কেন্দ্রে চালু করা বিশেষ স্বাস্থ্য পরিষেবা ‘সেবাশ্রয়’-এর সাফল্যের কথা তুলে ধরে এটাই প্রমাণ করলেন
‘সেবাশ্রয়’: অভিষেকের বিশেষ উদ্যোগ
গত ২ জানুয়ারি থেকে নিজের লোকসভা কেন্দ্রে বিশেষ স্বাস্থ্য পরিষেবা চালু করেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘সেবাশ্রয়’ নামক এই উদ্যোগের মাধ্যমে বিধানসভা ধরে ধরে সাধারণ মানুষকে বিনামূল্যে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে। চোখের সমস্যা থেকে ক্যানসারের মতো জটিল রোগ—প্রতিটি ক্ষেত্রেই স্বাস্থ্য পরিষেবা নিশ্চিত করছেন তিনি। বর্তমানে এই পরিষেবা চলছে ফলতা বিধানসভা কেন্দ্রে। মাত্র পাঁচ দিনে এখানে ৬৫,০০০-এর বেশি মানুষ বিনামূল্যে চিকিৎসা পেয়েছেন।
অভিষেক জানান, এই পরিষেবা শুরু হওয়ার পর থেকে এখনও পর্যন্ত ৩,৪১,০০০ মানুষ ‘সেবাশ্রয়’-এর মাধ্যমে উপকৃত হয়েছেন। শুধু বৃহস্পতিবারই ফলতার ৪০টি স্বাস্থ্য ক্যাম্পে চিকিৎসা পেয়েছেন ১৩,৪৯৩ জন। এখান থেকে বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং প্রয়োজনীয় ওষুধও দেওয়া হচ্ছে
মানুষের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা
‘সেবাশ্রয়’-এর সাফল্যের বিষয়ে বলতে গিয়ে অভিষেক বলেন, “এই পরিষেবা কেবল পরিসংখ্যানের গল্প নয়। এটি সেই সব মুখের গল্প, যাঁরা সাহায্য পেয়েছেন। যে শিশু সঠিক সময়ে চিকিৎসা পেয়েছে, যে প্রবীণ মানুষ স্বস্তি পেয়েছেন, তাঁদের জন্যই এই উদ্যোগ। আমরা একসঙ্গে প্রমাণ করছি, প্রশাসন শুধু কথা দিয়ে নয়, কাজ দিয়েও এগিয়ে চলতে পারে। এমন কাজ, যা মানুষের জীবন বদলে দিতে পারে।”
স্বাস্থ্য পরিষেবার নতুন দিগন্ত
অভিষেকের এই উদ্যোগ ইতিমধ্যেই দূরদূরান্তের মানুষকে আকৃষ্ট করেছে। জলপাইগুড়ি থেকে এক অসুস্থ শিশুকে নিয়ে আসেন তার পরিবার। সেই শিশুর চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দেন অভিষেক। খানাকুল থেকে মেরুদণ্ডের সমস্যায় ভোগা আরেকটি শিশুরও চিকিৎসার দায়িত্ব নেন তিনি।
অভিষেকের কথায়, “আমার লক্ষ্য ছিল প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে প্রতিটি মানুষের কাছে পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া। হয়তো কোনও গ্রাম পঞ্চায়েতে একটি হাসপাতাল আছে। আমি সেই জায়গায় একাধিক স্বাস্থ্য ক্যাম্পের ব্যবস্থা করেছি, যাতে গ্রামের প্রতিটি প্রান্তে চিকিৎসা পৌঁছায়।”
সমালোচনার জবাব
তবে, রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো থাকা সত্ত্বেও কেন আলাদা করে এই উদ্যোগ? এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে বিভিন্ন মহলে। এর উত্তরে অভিষেক বলেন, “রাজ্য সরকার তাদের মতো যথাসাধ্য করছে। কিন্তু আমি আমার নিজস্ব প্রচেষ্টা থেকে এই উদ্যোগ নিয়েছি। রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রকল্পের সঙ্গে এটি তুলনা করা ঠিক নয়। আমার কাজ মানুষের সেবা করা। এটাই প্রশাসনের আসল লক্ষ্য হওয়া উচিত।”
‘সেবাশ্রয়’-এর ভবিষ্যৎ
‘সেবাশ্রয়’-এর মতো উদ্যোগ শুধু মানুষের চিকিৎসা প্রয়োজন মেটাচ্ছে না, এটি প্রশাসনের প্রকৃত কাজের রূপক হিসেবেও কাজ করছে। সাধারণ মানুষ, বিশেষত দরিদ্র শ্রেণির মানুষের কাছে চিকিৎসা পরিষেবা সহজলভ্য করা অভিষেকের এই উদ্যোগকে অনন্য মাত্রা দিয়েছে। এটি আরও স্পষ্ট করে তুলেছে যে, প্রশাসনের আসল কাজ হলো মানুষের পাশে দাঁড়ানো এবং তাঁদের জীবনের উন্নয়ন ঘটানো।
নতুন বছরের শুরুতেই ‘সেবাশ্রয়’-এর জনপ্রিয়তা যেমন বাড়ছে, তেমনই এটি মানুষের মনে প্রশাসনের প্রতি আস্থা ফিরিয়ে আনছে। এই উদ্যোগ ভবিষ্যতে অন্যদের জন্যও দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। অভিষেকের এই প্রচেষ্টা প্রমাণ করছে, প্রশাসন শুধুমাত্র কথায় নয়, কাজেও মানুষের জীবন বদলাতে পারে।
সইফ আলি খান: ৬টা কোপ, শিরদাঁড়ার পাশেই গভীর ক্ষত সইফের, অবস্থা কি আশঙ্কাজনক?