Friday, February 7, 2025

প্রতিরক্ষা বাজেট: চিন-পাকিস্তানকে মোকাবিলায় কি যথেষ্ট?

Share

চিন-পাকিস্তানকে মোকাবিলায় কি যথেষ্ট?

২০২৫-’২৬ অর্থবছরের কেন্দ্রীয় বাজেটে প্রতিরক্ষা খাতে ৬.৮১ লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, এই বিশাল অঙ্কের টাকা দিয়ে কি ভারতকে চিন এবং পাকিস্তানের মতো শক্তিশালী প্রতিবেশী দেশের বিরুদ্ধে যথাযথভাবে প্রতিরক্ষা সক্ষমতা গড়ে তোলা সম্ভব? বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, যদিও এই বাজেট পাকিস্তানের মতো একক দেশকে মোকাবিলা করার জন্য যথেষ্ট হতে পারে, কিন্তু চিনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করলে বা উভয় দেশ একযোগে আক্রমণ করলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে।

চিন এবং পাকিস্তান দুই দেশই সামরিক শক্তি বৃদ্ধি করছে। পাকিস্তান, বিশেষত, চিনের সাথে তার প্রতিরক্ষা সম্পর্ক শক্তিশালী করছে। এরই মধ্যে, পাকিস্তান গত বছরের ডিসেম্বরে চিনের কাছ থেকে জে-৩৫ স্টেলথ যুদ্ধবিমান পেয়েছে, যা তাদের বিমানবাহিনীকে অনেক শক্তিশালী করবে। অন্যদিকে, ভারতের বিমানবাহিনীতে এই মুহূর্তে এমন কোনো পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান নেই। বর্তমানে ভারতের বিমানবাহিনীতে প্রায় ৩২ স্কোয়াড্রন যুদ্ধবিমান রয়েছে, যা প্রয়োজনের তুলনায় কম। বিশেষজ্ঞদের মতে, চিন এবং পাকিস্তানকে মোকাবিলা করার জন্য কমপক্ষে ৪২ স্কোয়াড্রন যুদ্ধবিমান থাকা প্রয়োজন।

এছাড়া, পাকিস্তান নতুন নতুন চুক্তির মাধ্যমে আরও শক্তিশালী হচ্ছে। তারা চিনের কাছ থেকে ড্রোন, যুদ্ধজাহাজ, সাবমেরিন, এবং আধুনিক অস্ত্র সরঞ্জাম পাচ্ছে। এমনকি, পাকিস্তানের নৌবহর এবং বিমানবাহিনীও আধুনিক হচ্ছে। চিনের কাছ থেকে প্রচুর সাহায্য পাচ্ছে ইসলামাবাদ, যা তাদের সামরিক শক্তি বাড়াচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে, ভারতীয় সেনাবাহিনীর জন্য কেবল বাজেট বরাদ্দই যথেষ্ট নয়, আধুনিকীকরণের জন্য নতুন প্রযুক্তি ও অস্ত্র সংগ্রহের জন্য আরও বেশি বিনিয়োগ প্রয়োজন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতকে চিন এবং পাকিস্তানকে মোকাবিলা করার জন্য একটি শক্তিশালী নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, এবং স্থলসেনা গঠন করতে হবে। চিন বর্তমানে বিশ্বের বৃহত্তম নৌবহর এবং ষষ্ঠ প্রজন্মের যুদ্ধবিমান তৈরি করছে। তাদের অস্ত্রাগারে রয়েছে অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং বোমারু বিমান, যা ভারতের জন্য এক বড় চ্যালেঞ্জ। এছাড়া, ড্রোন প্রযুক্তির ক্ষেত্রে চিন ক্রমেই অগ্রসর হচ্ছে, যা ভারতীয় সেনাবাহিনীর জন্য একটি গুরুতর উদ্বেগের বিষয়।

এক্ষেত্রে, বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারতের প্রতিরক্ষা বাজেটের পরিমাণ কমপক্ষে তার মোট জিডিপির আড়াই শতাংশ হওয়া উচিত ছিল, যা বর্তমানে ১.৯ শতাংশ। এই পরিমাণ বাজেট দিয়ে ভারতকে কেবল আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব, তবে আন্তর্জাতিক স্তরে প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য আরো বেশি অর্থের প্রয়োজন। ২০২৪-’২৫ অর্থবছরের তুলনায় এবারের বাজেট বৃদ্ধির পরিমাণ প্রায় ৯ শতাংশ, তবে এটি এখনও বেশ কম বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

অন্যদিকে, ভারতীয় সরকারের উদ্যোগে কিছু অস্ত্র এবং সামরিক সরঞ্জাম বিদেশে রফতানির পথে এগিয়ে চলেছে, যা দেশের প্রতিরক্ষা শিল্পকে আরও শক্তিশালী করতে সহায়তা করবে। এর মধ্যে পিনাকা মাল্টিব্যারেল রকেট লঞ্চার আর্মেনিয়া এবং ব্রহ্মস সুপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ফিলিপিন্সকে বিক্রি করা হয়েছে। এই ধরনের প্রতিরক্ষা চুক্তি ভারতের সামরিক শক্তিকে আরও দৃঢ় করবে।

শেষপর্যন্ত, যদিও ভারতকে দ্বিমুখী যুদ্ধের পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হতে পারে, বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন যে পাকিস্তানে বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং সামরিক চাপের কারণে পশ্চিম সীমান্তে আক্রমণের আশঙ্কা কিছুটা কমেছে। তবে, চিনের সঙ্গে একটি বৃহৎ যুদ্ধ মোকাবিলার জন্য ভারতের প্রতিরক্ষা বাজেট এবং সামরিক প্রস্তুতি আরও শক্তিশালী করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।

শাড়ি-পাঞ্জাবিতে অঞ্জলি, দুরুদুরু বুকে প্রেমপ্রস্তাব, বসন্ত-বিলাস, আফসোস আর সরস্বতী বন্দনা

Read more

Local News