Thursday, January 30, 2025

পোষ্যের দায়িত্ব নেওয়ার মাধ্যমে সন্তানের জীবনে আসবে পাঁচ গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা

Share

পোষ্যের দায়িত্ব!

পোষ্যের সঙ্গে সন্তানের সম্পর্ক কেবল আনন্দ বা সময় কাটানোর বিষয় নয়, বরং এটি তাদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ পাঠ শেখার একটি মাধ্যমও। ছোট থেকেই যদি পোষ্যদের সান্নিধ্যে বড় হয়, তাহলে তারা জীবনের অনেক মূল্যবান শিক্ষা পেতে পারে। ২০১৭ সালে মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটি’র একটি গবেষণায় বলা হয়েছে, পোষ্যের সঙ্গ শিশুদের মধ্যে দায়িত্ববোধ, স্বাধীন চিন্তাভাবনা এবং সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা তৈরি করে। তবে, শিশুরা পোষ্যের দায়িত্ব নেওয়ার মাধ্যমে আরও কী কী গুরুত্বপূর্ণ জীবনবোধ শেখে? চলুন জেনে নেওয়া যাক।

১. দায়িত্ববোধের বিকাশ

একটি পোষ্যের সঠিক পরিচর্যা করতে গিয়ে শিশুর মধ্যে দায়িত্ববোধ এবং নিয়মানুবর্তিতা তৈরি হয়। পোষ্যকে খাবার দেওয়া, জল দেওয়া, তাদের স্নান করানো—এই সব ছোট কাজের মধ্যে দিয়ে তারা শিখবে কীভাবে অন্যের প্রতি যত্নশীল হতে হয়। পোষ্যের প্রতি দায়িত্ব নেওয়ার অভ্যাসে শিশুরা বুঝতে শেখে, দায়িত্বশীলতা কী, এবং অন্যকে দায়িত্বশীলভাবে সাহায্য করা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। ছোট থেকেই এই অভ্যস্ততা তাদের বড় হওয়ার পথে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারে।

২. কথোপকথন ও সামাজিক দক্ষতা

অনেক শিশুই সামাজিকভাবে একটু সংকোচী বা চুপচাপ থাকে। এর অনেক কারণ থাকতে পারে, তবে পোষ্যদের সঙ্গে সময় কাটালে তাদের মনোভাব অনেকটা বদলে যেতে পারে। শিশুরা যখন তাদের পোষ্যের সঙ্গে খেলাধুলা করে বা তাদের মানসিক অবস্থা বোঝার চেষ্টা করে, তখন তাদের মধ্যে সামাজিক দক্ষতা ও কথোপকথনে আগ্রহ বাড়ে। পোষ্যদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ওঠার ফলে শিশুর মধ্যে বন্ধুত্ব ও সহানুভূতির অনুভূতি জাগে, এবং পরবর্তী সময়ে অন্যদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলতে তারা আরও উৎসাহী হয়।

৩. ধৈর্য এবং একাগ্রতা

অনেক বাবা-মায়ের অভিযোগ থাকে যে, তাদের সন্তানদের ধৈর্য কম, কিংবা তারা একাগ্র হয়ে কোনো কাজ করতে পারে না। তবে, পোষ্যের দায়িত্ব নিতে শুরু করলে ধৈর্য ও একাগ্রতা স্বাভাবিকভাবেই বাড়ে। পোষ্যকে খাওয়ানো, তাদের স্নান করানো বা হাঁটাতে নিয়ে যাওয়া—এ সব ক্ষেত্রে শিশুরা ধৈর্যশীল হয়ে কাজ করতে শিখে। এর ফলে তারা নিজের পরিচর্যা করতে এবং ছোট কাজেও মনোযোগী হতে সক্ষম হয়।

৪. বিশ্বাস এবং ভরসার শিক্ষা

পোষ্য হয়ে উঠতে পারে শিশুর সবচেয়ে বিশ্বস্ত বন্ধু। বিশেষত, একক পরিবারে যেখানে শিশুরা একা বড় হয়, সেখানে পোষ্য তাদের একঘেয়েমি দূর করতে সহায়তা করে। পোষ্যের আনুগত্য ও বিশ্বাস শিশুকে শেখায়, কীভাবে নিজেকে বিশ্বাস করতে হয় এবং অন্যদের প্রতি ভরসা রাখতে হয়। পোষ্যের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন শিশুকে আত্মবিশ্বাসী করে তোলে এবং সম্পর্কের মূল্য বুঝতে শেখায়।

৫. শরীরচর্চার অভ্যাস গড়া

পোষ্যের সঙ্গে সময় কাটানোর আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হল শরীরচর্চার অভ্যাস গড়ে ওঠা। পোষ্য যদি খেলার সঙ্গী হয়ে ওঠে, তবে শিশুরা আরও বেশি শারীরিক কার্যকলাপে অংশগ্রহণ করবে। তাদের সঙ্গে খেলাধুলা করতে গিয়ে বা হাঁটতে বেরিয়ে শরীরচর্চার প্রতি আগ্রহ বাড়বে। এর ফলে শিশুর শারীরিক স্বাস্থ্যও ভালো থাকবে এবং প্রযুক্তির প্রতি আগ্রহ কমে যাবে।

পোষ্যের দায়িত্ব নেওয়ার মাধ্যমে শিশুর মধ্যে যে এই পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ জীবনবোধ তৈরি হয়, তা তাদের পরবর্তী জীবনে অত্যন্ত সহায়ক হতে পারে। তাই পোষ্যকে ভালোবাসা এবং তাদের সঙ্গী হওয়ার মাধ্যমে সন্তানের মনোভাব এবং স্বভাবের উন্নতি সম্ভব।

শ্রীদেবী-কন্যা খুশি কপূরের বদলে যাওয়া মুখ, নাক, ঠোঁটের গড়ন: অস্ত্রোপচারের গল্প নিজেই শেয়ার করলেন!

Read more

Local News