Sunday, November 30, 2025

পুলওয়ামা থেকে দিল্লি বিস্ফোরণ—উমরের শেষ যাত্রাপথের রহস্য, ভাইয়ের হাতে মোবাইলেই মিলল আত্মঘাতী বার্তা

Share

পুলওয়ামা থেকে দিল্লি বিস্ফোরণ!

দিল্লির লালকেল্লার কাছে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনার পর তদন্ত যত এগোচ্ছে, ততই সামনে আসছে নতুন নতুন তথ্য। বিশেষত এই ঘটনার অন্যতম মূল চক্রী, চিকিৎসক উমর মহম্মদ ওরফে উমর-উন-নবির রহস্যময় গতিবিধি নিয়ে নানান প্রশ্ন উঠছে। আত্মঘাতী বিস্ফোরণে তাঁর মৃত্যু হলেও, মৃত্যুর আগে রেকর্ড করা একটি ভিডিয়ো এখন তদন্তের কেন্দ্রে। আর সেই ভিডিয়োই উদ্ধার হয়েছে তাঁর ভাইয়ের কাছ থেকে পাওয়া একটি মোবাইল ফোন থেকে—যা ঘটনার মাত্র কয়েক দিন আগে ভাইকেই দিয়ে গিয়েছিলেন উমর।

নভেম্বরের শুরুতে উমর পুলওয়ামার বাড়িতে গিয়েছিলেন। কয়েক দিনের সেই সফর শেষ করে তিনি ফিরে যান ফরিদাবাদের আল-ফালাহ্‌ বিশ্ববিদ্যালয়ে, যেখানে তিনি কর্মরত ছিলেন। তদন্তকারীদের সূত্রের দাবি, বাড়ি ছাড়ার আগে নিজের দুটি মোবাইলের একটি তিনি ভাইকে দিয়ে যান। সেই মোবাইলেই ছিল তাঁর শেষ বার্তা—একটি ভিডিয়ো, যেখানে উমর আত্মঘাতী বোমারুদের নিয়ে নিজের মতামত তুলে ধরেছেন।

১০ নভেম্বর দিল্লির লালকেল্লার কাছে বিস্ফোরণের ফলে ১৩ জনের মৃত্যু হয়। ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান উমরও। পরে তাঁর সহকর্মী একে একে গ্রেফতার হতে শুরু করলে উমরের ভাই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। সূত্রের দাবি, তিনি প্রথম জানতে পারেন ৭ নভেম্বর শ্রীনগরে পোস্টার সাঁটাতে গিয়ে ধরা পড়েছেন উমরের সহকর্মী চিকিৎসক আদিল আহমেদ রাথের। তার পরে ৯ নভেম্বর গ্রেফতার হন মুজাম্মিল শাকিল। এরপর শাহিন শাহিদও ধরা পড়ায় ভাইয়ের মনে আরও ভীতি জন্মায়।

এই পরিস্থিতিতে উমরের ভাই নিজের কাছে থাকা মোবাইলটি বাড়ির পাশের একটি পুকুরে ফেলে দেন। তবে তদন্তকারীরা ফোনটিতে আড়ি পাতার পর যখন দেখেন সেটি পুলওয়ামায় নিষ্ক্রিয় অবস্থায় রয়েছে, তখনই তাঁরা পুলওয়ামায় যান। পরিবারের জিজ্ঞাসাবাদে ফোনের তথ্য সামনে আসে। পরে পুকুর থেকে উদ্ধার করা হয় ফোনটি, আর তাতেই মেলে সেই গুরুত্বপূর্ণ ভিডিয়ো।

ভিডিয়োয় দেখা যায়, একটি ঘরে বসে উমর আত্মঘাতী হামলা নিয়ে বক্তব্য রাখছেন। তাঁর দাবি—সমাজ আত্মঘাতী বোমারুদের ভুল ভাবে দেখে। তাঁদের ‘শহিদ’ বলেই ব্যাখ্যা করেন তিনি। উমরের কথায়, ‘‘আত্মঘাতী হামলা মানে শুধু প্রাণ দেওয়া নয়, বরং এক বিশেষ পরিস্থিতিতে একটি ‘লক্ষ্য পূরণ’ করা। সমাজ তাঁদের শুধু বোমারু বলে দাগিয়ে দেয়।’’
ভিডিয়োয় আরও শোনা যায়—”মার্টারডম অপারেশন” শব্দবন্ধ, যা গোয়েন্দাদের মতে উগ্রপন্থী মতাদর্শ ছড়ানোর জন্যই উদ্দেশ্যমূলকভাবে ব্যবহার করা হয়েছে।

তদন্তকারীদের আশঙ্কা, এই ভিডিয়োর মাধ্যমে উমর একটি ভয়াবহ মগজধোলাইয়ের চেষ্টা করেছিলেন। তাঁর চিন্তাভাবনা, বক্তব্য এবং হামলার আগে তাঁর কার্যকলাপ—সবই এখন এনআইএ-র তদন্তের আওতায়। বিস্ফোরণের আগে ঠিক কী পরিকল্পনা ছিল উমরের, কারা তাকে সাহায্য করেছিল, আর কবে থেকে এই ষড়যন্ত্র চলছিল—সবটাই এখন তলিয়ে দেখছে তদন্তকারী সংস্থা।

দিল্লি বিস্ফোরণ দেশজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। এখন প্রশ্ন—উমর কি শুধু একটি বড় নেটওয়ার্কের অংশ ছিলেন? নাকি তিনিই ছিলেন মূল ষড়যন্ত্রকারী? উদ্ধার হওয়া মোবাইল ও ভিডিয়োই পারে সেই রহস্যের জট খুলতে।

Read more

Local News