পুরো পুরী একেন
একেনবাবুর রহস্যভেদ নতুন কিছু নয়, আর ঘুরতে গিয়ে কোনো জটিল কেসে জড়িয়ে পড়া তো তাঁর কাছে যেন নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার! এই অষ্টম সিজ়নেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। একেনবাবুর এবারের গন্তব্য পুরী, যেখানে সমুদ্রের গর্জনের সঙ্গে মিশেছে রহস্যের ঘনঘটা।
পুরীতে একেনবাবু—ভ্রমণ না তদন্ত?
সুজন দাশগুপ্তের সৃষ্টি একেনবাবু তাঁর অদ্ভুতুড়ে স্বভাব, হাস্যরসাত্মক কৌশল আর ক্ষুরধার বিশ্লেষণী ক্ষমতার জন্য বরাবরই দর্শকদের প্রিয়। তবে ওড়িশার সমুদ্রসৈকত, সুস্বাদু খাবার আর প্রাচীন মন্দিরের মাঝে কি সত্যিই নিছক আনন্দযাত্রায় গিয়েছিলেন তিনি? মোটেই না! এক কথাকলি নৃত্যশিল্পী পারমিতা নিয়মিত মৃত্যুর হুমকি পাচ্ছেন, যার জট খুলতেই তাঁকে ডেকে পাঠিয়েছেন তাঁর ‘খোকামামা’।
রহস্য জমে উঠছে, ঘটছে পর পর খুন!
পুরীতে পৌঁছেই একেনবাবু, তাঁর সঙ্গী বাপি আর পরে যোগ দেওয়া প্রমথ, বুঝতে পারেন যে ব্যাপারটা এতটাও সহজ নয়। নাচের অনুষ্ঠানের মাঝেই খুন হতে থাকেন পারমিতার প্রিয়জনরা—তাঁর গুরু, ঘনিষ্ঠ বন্ধু, এমনকি মামাও! এই রহস্যের গভীরে ঢুকতেই একেনবাবু আবিষ্কার করেন এক ভয়ঙ্কর চক্রান্ত। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে পারমিতাকেও তিনি রক্ষা করতে ব্যর্থ হন।
একেনবাবুর ভূমিকায় অনির্বাণ—এবার কেমন অভিনয়?
আট নম্বর সিজ়নেও অনির্বাণ চক্রবর্তী যেন একেনবাবুর চরিত্রের সঙ্গে একাত্ম হয়ে গিয়েছেন। তাঁর অদ্ভুত সব অভ্যাস—অন্যের খাবার তুলে নেওয়া, ভুলভাল প্রবাদ বলা, আর হাস্যরসের মাধ্যমে তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাওয়া—সবই আগের মতোই প্রাণবন্ত। তাঁর দুই সহযোগী সুহোত্র মুখোপাধ্যায় (বাপি) ও সোমক ঘোষ (প্রমথ) যথেষ্ট ভালো পারফরম্যান্স দিয়েছেন, যদিও প্রমথের প্রবেশটা একটু আকস্মিক লেগেছে।
কাহিনির শক্তি ও দুর্বলতা
পরিচালক জয়দীপ মুখোপাধ্যায় যথারীতি টানটান উত্তেজনা ধরে রেখেছেন। তবে খুনির পরিচয় দর্শকেরা একটু আগেভাগেই আন্দাজ করতে পারেন, যা রহস্যের রোমাঞ্চ কিছুটা কমিয়ে দেয়। এছাড়া, একেনবাবুর কিছু হাসিঠাট্টা বেশ একঘেয়ে লাগতে পারে। তবে কাহিনির একটি বড় প্লাস পয়েন্ট হল পুরীর মনোরম দৃশ্যপট।
পুরীর অপূর্ব রূপ—চিত্রগ্রহণের প্রশংসা করতেই হয়!
এই সিজ়নের অন্যতম আকর্ষণ টুবানভ দাশগুপ্তের ক্যামেরার কাজ। ওড়িশার রঘুনাথপুর, উদয়গিরি, এবং পুরীর সমুদ্রতটের সৌন্দর্য রহস্যের আবহকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে। সেই সঙ্গে পটচিত্রের মাধ্যমে গল্প বলা ও স্থানীয় খাবারের উল্লেখ ওড়িশার সংস্কৃতিকে গল্পের সঙ্গে দারুণভাবে মিশিয়ে দিয়েছে।
শেষকথা—একেনবাবুর নতুন অভিযান দেখা উচিত?
কিছু ছোটখাটো খামতি থাকলেও, ‘পুরো পুরী একেন’ একবার দেখার মতোই। রহস্য, রোমাঞ্চ আর পুরীর অপূর্ব সৌন্দর্যের মিশেলে এটি যথেষ্ট উপভোগ্য। আর একেনবাবুর পরবর্তী অভিযান যে আরও জমজমাট হবে, সেই আশাতেই থাকলেন তাঁর অনুরাগীরা!
‘পুরো পুরী একেন’ এখন দেখা যাচ্ছে ‘হইচই’-এ।
শ্রীদেবী-কন্যা খুশি কপূরের বদলে যাওয়া মুখ, নাক, ঠোঁটের গড়ন: অস্ত্রোপচারের গল্প নিজেই শেয়ার করলেন!