পুতিন সাময়িক যুদ্ধবিরতিতে রাজি!
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ তিন বছর পেরিয়ে গেলেও শান্তির আলো এখনো সুদূর। তবে নতুন মোড় নিয়েছে কূটনৈতিক পরিস্থিতি। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সাময়িক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছেন, যদিও তিনি বেশ কিছু শর্ত জুড়তে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে।
বিশ্বজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রে এখন ডোনাল্ড ট্রাম্পের নীতি। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি রাশিয়ার সঙ্গে সমঝোতার বার্তা দিয়েছেন এবং ইউক্রেনকে কূটনৈতিক পথ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি সেই পথে হাঁটতে নারাজ।
রাশিয়ার সাময়িক যুদ্ধবিরতির পরিকল্পনা
একাধিক ইউরোপীয় সংবাদমাধ্যমের দাবি, মস্কো এবং ওয়াশিংটনের মধ্যে এই বিষয়ে গোপন আলোচনা হয়েছে। সূত্রের খবর, রাশিয়া সাময়িক যুদ্ধবিরতিতে রাজি হলেও তাদের কিছু নির্দিষ্ট শর্ত থাকবে।
এই চুক্তি রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে একটি স্থায়ী শান্তির আলোচনার পথ খুলে দিতে পারে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি শুধুমাত্র কৌশলগত পদক্ষেপ হতে পারে, যার মাধ্যমে রাশিয়া নিজেদের সুবিধা বাড়ানোর চেষ্টা করবে।
ট্রাম্পের নরম-গরম নীতি: রাশিয়ার প্রতি সমর্থন নাকি কৌশল?
ডোনাল্ড ট্রাম্প শুরু থেকেই রাশিয়া নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। কখনো তিনি পুতিনের প্রশংসা করেছেন, আবার কখনো রাশিয়ার উপর আরও কড়া নিষেধাজ্ঞার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
শুক্রবার হোয়াইট হাউসে এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেছেন, তিনি পুতিনকে বিশ্বাস করেন এবং মনে করেন রাশিয়া যুদ্ধ থামাতে আগ্রহী। এমনকি তিনি বলেছেন,
“ইউক্রেনের সঙ্গে বোঝাপড়া করার চেয়ে রাশিয়ার সঙ্গে বোঝাপড়া করা অনেক সহজ।”
এই মন্তব্যে ইউক্রেন ও তার ইউরোপীয় মিত্রদের মধ্যে উদ্বেগ বেড়েছে। অনেকে আশঙ্কা করছেন, ট্রাম্প ইউক্রেনকে চাপে ফেলে রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তি করতে বাধ্য করতে পারেন।
জ়েলেনস্কির অনড় অবস্থান: স্বাধীনতা অক্ষুণ্ণ রাখার লড়াই
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কি স্পষ্ট করেছেন, তিনি শান্তি চান, তবে নিজের দেশের সার্বভৌমত্ব বিসর্জন দিতে রাজি নন। তিনি বলেছেন,
“আমরা রাশিয়ার সাথে শান্তি চাই, কিন্তু নিজেদের স্বাধীনতার মূল্য চুকিয়ে নয়।”
তবে রাশিয়া যদি সত্যিই শান্তিরক্ষা মিশনের অংশ হিসেবে কিছু নির্দিষ্ট দেশকে অন্তর্ভুক্ত করতে চায়, তাহলে এটি ইউক্রেনের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে।
ইউরোপের উদ্বেগ ও ভবিষ্যতের সমীকরণ
ট্রাম্পের রাশিয়ার প্রতি নরম মনোভাব ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। তারা আশঙ্কা করছে, ট্রাম্প হয়তো রাশিয়ার বিরুদ্ধে নেওয়া নিষেধাজ্ঞাগুলি ধীরে ধীরে প্রত্যাহার করে নেবেন।
জ়েলেনস্কির সঙ্গে ট্রাম্পের প্রকাশ্য বাকযুদ্ধের পর, ইউক্রেনের সামরিক সাহায্যও স্থগিত রেখেছে আমেরিকা। ফলে ইউক্রেনের উপর চাপ বাড়ছে।
এখন সব চোখ আগামী মঙ্গলবারের সৌদি আরব বৈঠকের দিকে, যেখানে মার্কিন ও ইউক্রেনীয় আধিকারিকদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হতে চলেছে। যদিও জ়েলেনস্কি সেখানে সরাসরি থাকছেন না, তবে তার প্রতিনিধিরা আলোচনায় অংশ নেবেন।
শান্তি আসবে নাকি নতুন যুদ্ধের ছক?
এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে—
- পুতিনের শর্ত কী হতে পারে?
- ট্রাম্প সত্যিই রাশিয়ার পক্ষে ঝুঁকছেন, নাকি এটি তার কৌশলগত চাল?
- ইউক্রেন কি পশ্চিমা মিত্রদের সমর্থন ধরে রাখতে পারবে?
বিশ্ববাসী এখন এই অস্থিরতার শেষ পরিণতি দেখার অপেক্ষায়।
ভারতের উপর পাল্টা শুল্ক চাপাচ্ছেন ট্রাম্প! ঘোষণা করলেন নির্দিষ্ট তারিখও

