Sunday, February 23, 2025

পাহাড়ে যাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়: দু’দিনের সফরে জিটিএর সঙ্গে প্রশাসনিক বৈঠক ও ‘সরস মেলা’র উদ্বোধন

Share

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

আগামী সপ্তাহের শুরুতে দু’দিনের জন্য পাহাড়ে সফরে যাচ্ছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই সফরে তিনি গোয়ালপাড়া থেকে দার্জিলিং পর্যন্ত প্রশাসনিক বৈঠক করবেন, এবং দার্জিলিঙে ‘সরস মেলা’র উদ্বোধন করবেন। সফরের কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি থাকবে না বলে নবান্ন সূত্রে জানা গেছে।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই সফর শুরু হবে সোমবার রাতেই, যখন তিনি দার্জিলিং পৌঁছাবেন। মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর, দুপুর সাড়ে ৩টায় জিটিএ (গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন) এর সঙ্গে একটি প্রশাসনিক বৈঠক করবেন। পরের দিন, বুধবার ১৩ নভেম্বর, দুপুর ৩টায় দার্জিলিং চৌরাস্তায় ‘সরস মেলা’ উদ্বোধন করবেন তিনি। এই মেলা উত্তরবঙ্গের পঞ্চায়েত দফতরের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হচ্ছে এবং এটি দার্জিলিং শহরের প্রথম ‘সরস মেলা’।

পাহাড় সফরের পর, মুখ্যমন্ত্রী বৃহস্পতিবার শিলিগুড়িতে ফিরে আসবেন। কলকাতায় ফিরে আসার পর শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর, রাজারহাটে বিরসা মুন্ডা দিবস উপলক্ষে আদিবাসী ভবনে অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন তিনি। ১৫০তম জন্মদিন উপলক্ষে রাজ্য সরকার বিভিন্ন জেলা ও এলাকায় সপ্তাহব্যাপী বিরসা মুন্ডা দিবস পালন করবে, যা চলবে ২১ নভেম্বর পর্যন্ত।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাহাড় সফরের মূল উদ্দেশ্য হল জিটিএর সঙ্গে প্রশাসনিক আলোচনা এবং ‘সরস মেলা’র উদ্বোধন। সফরে কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি নেই, তবে এর মধ্যে পাহাড়ে কিছু প্রশাসনিক পরিকল্পনার বিস্তারিত আলোচনা হতে পারে। জিটিএ এখন ক্ষমতায় রয়েছে ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার (আইজিপিএম) অনীত থাপার নেতৃত্বে, এবং রাজ্যের শাসকদলের সঙ্গে তাদের সম্পর্কও অত্যন্ত ভালো। রাজ্য সরকার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের মাধ্যমে গোর্খাল্যান্ড এলাকার সাথে সহযোগিতা করছে। গত বছরের বাণিজ্য সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, পাহাড়ে একটি তথ্যপ্রযুক্তি (আইটি) কেন্দ্র তৈরি করবেন। এই প্রকল্পের জন্য ইতিমধ্যে প্রস্তুতিও শুরু হয়ে গেছে।

নবান্ন সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে দুই জায়গায় তথ্যপ্রযুক্তি কেন্দ্র গড়ার পরিকল্পনা চলছে। একটি দার্জিলিঙের কার্শিয়াঙে, যেখানে একটি বহুতল কার পার্কিংকে আইটি হাব হিসেবে রূপান্তর করা হচ্ছে। অন্যটি কালিম্পঙের গরুবাথানে, যেখানে তথ্যপ্রযুক্তি কেন্দ্র স্থাপনের জন্য জমি চিহ্নিত করা হয়েছে। আগামী সপ্তাহে এই বিষয়ের উপর জিটিএর সঙ্গে কোনো আলোচনা হতে পারে কিনা, তা নিয়ে কৌতূহল রয়েছে।

এছাড়া, পাহাড়ে তিনটি পুরসভার ভোটের বিষয়ও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এই তিন পুরসভায় দ্রুত ভোট গ্রহণের জন্য একটি জনস্বার্থ মামলা কলকাতা হাই কোর্টে করা হয়েছে। হাই কোর্ট গত সেপ্টেম্বর মাসে রাজ্য সরকারকে এক মাসের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে নির্দেশ দিয়েছিল, আর তার প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাহাড় সফরে এই পুরভোটের বিষয় নিয়ে কোনো আলোচনা হয় কিনা, সেটিও লক্ষ্য করা হচ্ছে।

এ বছরই প্রথমবারের মতো পাহাড়ে ‘সরস মেলা’ বসছে। প্রতি বছর কলকাতার নিউটাউন মেলা প্রাঙ্গণে এই মেলা অনুষ্ঠিত হয়, এবং উত্তরবঙ্গের জন্য একটি আলাদা ‘সরস মেলা’ শিলিগুড়িতে আয়োজিত হয়। তবে এই বছর, উত্তরবঙ্গের ‘সরস মেলা’ দার্জিলিং শহরে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে, যা পাহাড়ের মানুষদের জন্য একটি বিশেষ উদ্যোগ।

মুখ্যমন্ত্রীর এই সফর একদিকে যেমন প্রশাসনিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি এটি পাহাড়ের মানুষের জন্য নতুন সুযোগ ও উন্নয়নের দিকেও উন্মোচিত হতে পারে।

Read more

Local News