ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার জনপ্রিয় ধারাবাহিক অভিনেতা আশীষ কপূর
টেলিভিশনের পরিচিত মুখ আশীষ কপূর এবার গুরুতর অভিযোগের জালে। হিন্দি ধারাবাহিক ‘ইয়ে রিশ্তা কেয়া কেহলাতা হ্যায়’-এ অভিনয়ের মাধ্যমে দর্শকদের মনে জায়গা করে নেওয়া এই অভিনেতাকে গ্রেফতার করেছে দিল্লি পুলিশ। অভিযোগ, দিল্লির এক হাউজ় পার্টিতে শৌচালয়ের ভিতরে এক মহিলাকে ধর্ষণ করেছিলেন আশীষ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ১১ অগস্ট দিল্লির সিভিল লাইন থানায় ওই মহিলা অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে তৎক্ষণাৎ তদন্ত শুরু করে পুলিশ। শুরু থেকেই আশীষ কপূরের গতিবিধির উপর কড়া নজর রাখা হয়। প্রথমে তাঁর অবস্থান শনাক্ত হয় গোয়ায়, তবে সেখান থেকে তিনি পালিয়ে যান। এরপর দীর্ঘ অনুসন্ধানের পর পুণেতে তাঁর খোঁজ মেলে। এক বন্ধুর বাড়িতে লুকিয়ে ছিলেন তিনি। সেখান থেকেই মঙ্গলবার তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
অভিযোগকারিণী জানিয়েছেন, ঘটনার দিন তিনি দিল্লির একটি পার্টিতে উপস্থিত ছিলেন। সেখানেই অভিযুক্ত অভিনেতা তাঁকে শৌচালয়ে ডেকে নেন এবং সেখানে তাঁর উপর যৌন নির্যাতন চালান। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রথম এফআইআরে আশীষের পাশাপাশি আরও এক অজ্ঞাত ব্যক্তির নাম উল্লেখ করা হয়েছিল। তবে তদন্তের অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে অভিযোগকারিণী তাঁর বয়ানে পরিবর্তন এনে শুধুমাত্র আশীষকেই অভিযুক্ত হিসেবে নাম উল্লেখ করেন।
পুলিশ সূত্রে খবর, এই মামলায় আইনি পরামর্শ নিয়ে তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। অভিযোগকারিণী বর্তমানে গুরুগ্রামে কর্মরত। মামলার গুরুত্ব এবং অভিযোগের জটিলতার কারণে তদন্তকারীরা প্রতিটি তথ্য খতিয়ে দেখছেন।
আশীষ কপূর হিন্দি টেলিভিশনের জগতে এক পরিচিত নাম। জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘লভ ম্যারেজ ইয়া অ্যারেঞ্জড ম্যারেজ’, ‘চাঁদ ছুপা বাদল মেঁ’, ‘বন্দিনী’ সহ আরও বেশ কিছু সিরিয়ালে তাঁর অভিনয় প্রশংসিত হয়েছে। ছোটপর্দায় তাঁর জনপ্রিয়তা থাকলেও বর্তমানে তিনি এক গুরুতর অপরাধের অভিযোগে জড়িত।
পুলিশ জানিয়েছে, অভিনেতাকে দিল্লিতে নিয়ে আসা হবে এবং বিস্তারিতভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। মামলার তদন্ত চলছে, এবং আশীষকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ঘটনার প্রকৃত সত্য উদ্ঘাটনের চেষ্টা করা হচ্ছে। অন্যদিকে, অভিযোগকারিণীর নিরাপত্তা ও মানসিক সহায়তার দিকেও নজর দিচ্ছেন তদন্তকারীরা।
এই ঘটনা একদিকে যেমন বিনোদন দুনিয়াকে নাড়া দিয়েছে, তেমনি নিরাপত্তা এবং নারী-সুরক্ষার বিষয়টি নিয়ে আবারও প্রশ্ন উঠেছে। জনপ্রিয় মুখদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ সবসময় আলোচনার কেন্দ্রে থাকে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কিছু নিশ্চিত না হলেও আশীষ কপূরের ক্যারিয়ারে এর প্রভাব পড়তে চলেছে তা বলাই বাহুল্য।
দর্শকের প্রিয় তারকা হয়েও আইন এড়িয়ে যাওয়া সহজ নয়—এই ঘটনাই তার বড় প্রমাণ। পালানোর চেষ্টা করেও শেষমেশ গ্রেফতার হয়েছেন অভিনেতা। এখন সকলের নজর দিল্লি পুলিশের পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে।
ওড়িশায় ব্যবসায়ীর বাড়িতে ইডির তল্লাশি, ১৩৯৬ কোটির প্রতারণা মামলায় উদ্ধার কোটি টাকার সম্পদ

