Friday, February 7, 2025

পার্লামেন্টের আপত্তি উড়িয়ে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে খেলবে ইংল্যান্ড

Share

আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে খেলবে ইংল্যান্ড!

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে খেলবে ইংল্যান্ড, এমনটাই জানিয়েছে ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড (ECB)। যদিও ব্রিটেনের প্রায় ১৬০ জন রাজনৈতিক নেতা আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে ম্যাচ বয়কটের ডাক দিয়েছিলেন। তালিবান সরকারের অধীনে আফগানিস্তানে মহিলাদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণের প্রতিবাদে পার্লামেন্টের দুই কক্ষ— হাউস অফ কমন্স এবং হাউস অফ লর্ডস—সরকারি বিবৃতিতে এই দাবি জানিয়েছিল। তবে সেই দাবিকে গুরুত্ব না দিয়ে নিজেদের অবস্থানে অনড় থাকল ইসিবি।

২৬ ফেব্রুয়ারি লাহোরে অনুষ্ঠিত হবে ইংল্যান্ড বনাম আফগানিস্তান ম্যাচ। ইসিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা ম্যাচ খেলবে ঠিকই, তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) ওপর চাপ তৈরি করবে, যাতে আফগানিস্তানের মহিলারা আবার ক্রিকেট খেলার সুযোগ পান।

ইসিবির অবস্থান কী?
ইসিবির চেয়ারম্যান রিচার্ড থম্পসন বলেন, “বিশ্বের অন্যান্য দেশও আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে খেলছে। আমাদের মনে হয় না, একা ইংল্যান্ড বয়কট করলে খুব বেশি কিছু পরিবর্তন হবে। বরং আফগান জনগণের জন্য ক্রিকেটই একমাত্র বিনোদন, তাই আমরা ম্যাচটি খেলব। তবে আমরা আইসিসির উপর চাপ সৃষ্টি করব, যাতে ভবিষ্যতে আফগানিস্তানে মেয়েদের ক্রিকেট খেলার অধিকার নিশ্চিত হয়।”

তিনি আরও বলেন, “আফগানিস্তানে যা ঘটছে তা নিন্দনীয়। যখন বিশ্বজুড়ে মহিলা ক্রিকেট এগিয়ে চলেছে, তখন আফগান মহিলাদের সেই সুযোগ না পাওয়াটা সত্যিই হতাশার।”

কেন বয়কটের দাবি উঠেছিল?
তালিবান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে আফগানিস্তানে মহিলাদের ক্রিকেট খেলার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। শুধু ক্রিকেট নয়, মেয়েদের শিক্ষা এবং খেলাধুলার অধিকারের ওপরও কড়াকড়ি চালাচ্ছে তারা। ব্রিটিশ পার্লামেন্টের নেতাদের মতে, এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে কড়া অবস্থান নেওয়া উচিত।

ইসিবির সিইও রিচার্ড গোল্ডের কাছে পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, “তালিবানের অধীনে আফগান মহিলাদের ওপর যে নিষ্ঠুরতা চালানো হচ্ছে, তার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে ম্যাচ বয়কটের মাধ্যমে আমাদের বার্তা দেওয়া উচিত যে, এই ধরনের বৈষম্যমূলক আচরণ আমরা বরদাস্ত করব না।”

তবে ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড এই অনুরোধ মানেনি। তারা জানিয়েছে, খেলার ময়দানে থাকলেও এই ইস্যুতে তারা আইসিসির সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাবে।

অন্য দেশগুলোর প্রতিক্রিয়া
ইংল্যান্ডের মতোই আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলতে অস্বীকার করেছে অস্ট্রেলিয়া। তবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মতো বড় টুর্নামেন্টে তারা অংশ নিচ্ছে। দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রীড়ামন্ত্রীও দেশটির ক্রিকেট বোর্ডকে বয়কটের অনুরোধ করেছিলেন, কিন্তু তারাও সেই দাবি মানেনি।

ফলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে:

  • ২১ ফেব্রুয়ারি: দক্ষিণ আফ্রিকা বনাম আফগানিস্তান
  • ২৬ ফেব্রুয়ারি: ইংল্যান্ড বনাম আফগানিস্তান
  • ২৮ ফেব্রুয়ারি: অস্ট্রেলিয়া বনাম আফগানিস্তান

এটার ভবিষ্যৎ প্রভাব কী হতে পারে?
বিশ্লেষকদের মতে, ইংল্যান্ডের এই সিদ্ধান্ত বিশ্ব ক্রিকেটে নতুন এক বিতর্কের জন্ম দিতে পারে। অনেকেই মনে করছেন, আইসিসির উচিত আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া, যাতে তারা মহিলাদের ক্রিকেটের অনুমতি দিতে বাধ্য হয়।

তবে, ক্রিকেট কেবল একটি খেলা নয়, এটি রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রভাবও ফেলে। ইংল্যান্ড খেললেও বা না খেললেও, আফগানিস্তানের মহিলাদের ভবিষ্যৎ কী হবে, সেই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

শিবলিঙ্গে দুগ্ধস্নান, মহাকুম্ভে কি এবার পুণ্যের পথে ভিকি কৌশল?

Read more

Local News