Monday, December 1, 2025

“পাকিস্তানে বন্ধুবান্ধব থাকলে কি ফোনও করা যাবে না?” — মেয়ের পক্ষে সাফাই জ্যোতির বাবার, পুলিশের কাছে মোবাইল ফেরতের আবেদন

Share

মেয়ের পক্ষে সাফাই জ্যোতির বাবার!

পাকিস্তানি গুপ্তচরদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার অভিযোগে যখন গোটা দেশ তোলপাড়, তখন প্রকাশ্যে এল ইউটিউবার জ্যোতি মলহোত্রের পরিবারের প্রতিক্রিয়া। জ্যোতির বাবা হরিশ মলহোত্র মেয়ের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে সাফাই দিয়ে বলেন, “ও শুধুই ভ্রমণের জন্য পাকিস্তানে গিয়েছিল, ভিডিও বানানোর জন্য, গুপ্তচরবৃত্তির কোনও প্রশ্নই ওঠে না।”


হরিয়ানার হিসার থেকে ইউটিউব ট্রাভেল ভ্লগার জ্যোতি মলহোত্রকে গ্রেফতার করে পুলিশ। অভিযোগ, তিনি পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থার সঙ্গে গোপনে তথ্য আদানপ্রদানের কাজে জড়িত ছিলেন। তদন্তে জানা গেছে, ২০২৩ সালে পাকিস্তান সফরের সময় দিল্লিতে পাকিস্তান হাই কমিশনের ‘দানিশ’ নামে এক আধিকারিকের সঙ্গে জ্যোতির পরিচয় হয়। সম্প্রতি সেই দানিশকেই ভারত সরকার ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করেছে। অভিযোগ, দানিশের মাধ্যমেই পাক গুপ্তচর সংস্থার একাধিক আধিকারিকের সঙ্গে জ্যোতির যোগসূত্র তৈরি হয়।


এই পরিস্থিতিতে মেয়ের হয়ে মুখ খুলেছেন তাঁর বাবা। তিনি বলেন, “জ্যোতি ইউটিউবের জন্য ভিডিও বানাতেই বিদেশ যেত, পাকিস্তানও গিয়েছিল সে কারণে। এখন যদি সেখানে কারও সঙ্গে বন্ধুত্ব হয়, তাহলে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখাটাও কি অপরাধ?”

এখানেই থেমে থাকেননি হরিশ মলহোত্র। তিনি পুলিশের কাছে অনুরোধ করেছেন, “আমাদের মোবাইলগুলি তো বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। অন্তত সেগুলি আমাদের ফিরিয়ে দেওয়া হোক।”


জানা গেছে, জ্যোতির ইউটিউব চ্যানেল ‘ট্রাভেল উইথ জো’-তে প্রায় ১.৩২ লক্ষ সাবস্ক্রাইবার। তিনি নিয়মিতই বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করে ভিডিও পোস্ট করতেন। লাহোরের আনারকলি বাজার, কটাস রাজ মন্দির, এমনকি পাকিস্তানের খাবার এবং ভারত-পাক সংস্কৃতির তুলনামূলক ভিডিওও রয়েছে তাঁর চ্যানেলে। এইসব ভিডিওর মাধ্যমে অনেকেই জ্যোতির কাজকে ভ্রমণ ও সংস্কৃতি প্রচার হিসেবে দেখলেও, তদন্তকারীদের দাবি— এর আড়ালে চলছিল গোপন তথ্য বিনিময়।

পুলিশ সূত্রে আরও জানা গেছে, দেশে ফিরে আসার পরও জ্যোতি হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রাম ও স্ন্যাপচ্যাটের মাধ্যমে পাক চরদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন। পরিচয় গোপন রাখতে মোবাইলে নম্বর সেভ করতেন ছদ্মনামে। উদাহরণস্বরূপ, ‘জাট রানধাওয়া’ নামে সেভ করা একটি নম্বরের আসল মালিক ছিল পাক চর শাকির ওরফে রানা শাহবাজ।


তদন্তে আরও দাবি করা হয়েছে, এক পাকিস্তানি চর সঙ্গে জ্যোতির “ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক” ছিল এবং বিদেশ সফরেও তাঁরা একসঙ্গে গিয়েছিলেন। বালি ও ইন্দোনেশিয়ার মতো জায়গায় জ্যোতির ভ্রমণের সময় সেই ব্যক্তিও উপস্থিত ছিলেন বলে সন্দেহ।


এই ঘটনায় দেশজুড়ে উত্তেজনা ছড়ালেও, পরিবারের দাবি— জ্যোতির ভ্রমণই তাঁর একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল। তবে তদন্তের জাল যত গাঢ় হচ্ছে, ততই প্রশ্ন উঠছে— শুধুই কি ট্রাভেল ব্লগিং, নাকি তার আড়ালে চলছিল ভয়ানক কোনও ষড়যন্ত্র? এখন দেখার, তদন্ত কী দিক নেয় এবং সত্যি কতটা ভিন্ন জ্যোতির পর্দার সামনে আর পর্দার পেছনের জীবন।

সরস্বতী নদীর দূষণ নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনা কাগজেই সীমাবদ্ধ? বাস্তব কাজ এখনও অধরা

Read more

Local News