পাকিস্তানে ফের রক্তঝরা রাত!
পাকিস্তানে আবারও রক্তাক্ত হামলা! ধর্মীয় মৌলবাদী রাজনৈতিক দল জামিয়াত উলেমা-ই-ইসলামের (জেইউআই) নেতা মুফতি আব্দুল বাকি নুরজ়াইকে বালোচিস্তানের কোয়েটায় প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। রবিবার রাতে কোয়েটা বিমানবন্দরের কাছে এই নির্মম হত্যাকাণ্ড ঘটে। আততায়ীরা নির্বিচারে গুলি চালিয়ে পালিয়ে যায়, এখনও তাদের শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।
হত্যাকাণ্ডের বিবরণ
জানা গেছে, রবিবার রাতে বিমানবন্দরের দিকে যাচ্ছিলেন মুফতি নুরজ়াই। এয়ারপোর্ট রোডে পৌঁছানোর পরই আততায়ীরা তাঁকে লক্ষ্য করে একাধিক রাউন্ড গুলি চালায়। পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু চিকিৎসকদের সব চেষ্টা ব্যর্থ হয়, শেষ পর্যন্ত মৃত্যু হয় তাঁর।
এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে কারা রয়েছে, তা এখনো নিশ্চিত নয়। তবে রাজনৈতিক শত্রুতার কারণে নাকি কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর ষড়যন্ত্রে এই হামলা হয়েছে, তা খতিয়ে দেখছে তদন্তকারীরা। নিরাপত্তা বাহিনী ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে।
একটি অস্থির পরিস্থিতি
সাম্প্রতিক সময়ে পাকিস্তানের বালোচিস্তান প্রদেশ বারবার সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের শিকার হচ্ছে। কয়েকদিন আগেই বিদ্রোহী গোষ্ঠী জাফর এক্সপ্রেস অপহরণ করেছিল, যেখানে প্রাণ হারিয়েছিলেন অনেক যাত্রী। তারপরই পাকিস্তানের সেনাবাহিনী দাবি করে, তারা ৩৩ জন বিদ্রোহীকে হত্যা করেছে। তবে বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো পাল্টা দাবি করেছে, তারা ২১৪ জন পণবন্দিকে হত্যা করেছে।
এরই মধ্যে রবিবার আরও একটি ভয়াবহ হামলার ঘটনা ঘটে। কোয়েটা থেকে টাফটানের দিকে যাচ্ছিল সেনাবাহিনীর একটি কনভয়, যা সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়। এই হামলায় সাতজন নিহত হন এবং অন্তত ২১ জন আহত হন। বালোচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) হামলার দায় স্বীকার করেছে এবং তাদের মতে, এই হামলায় ৯০ জন পাক সেনা নিহত হয়েছেন।
টানা হত্যাকাণ্ডে আতঙ্কিত পাকিস্তান
এই হত্যাকাণ্ডের আগেই রবিবার রাতে পাকিস্তানে খুন হন লশকর-এ-তৈয়বার জঙ্গি আবু কাতাল। তিনি ভারতের মুম্বই হামলার মূল পরিকল্পনাকারী হাফিজ সইদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন। আততায়ীরা তাঁকেও গুলি করে হত্যা করে।
সাম্প্রতিক সময়ে পাকিস্তানের বিভিন্ন অংশে বারবার এ ধরনের হত্যাকাণ্ড ঘটে চলেছে। রাজনৈতিক অস্থিরতা, জঙ্গি কার্যকলাপ এবং বিদ্রোহীদের হামলায় দেশটির নিরাপত্তা পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতি হচ্ছে। বিশেষ করে বালোচিস্তান প্রদেশে এই ধরনের হামলার সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে চলেছে।
কী হতে পারে পরবর্তী পদক্ষেপ?
এত পরপর হত্যাকাণ্ড ও হামলা পাকিস্তানের নিরাপত্তা ব্যবস্থার ওপর বড়সড় প্রশ্ন তুলেছে। রাজনৈতিক নেতারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন, আর সাধারণ মানুষ আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। সরকার ও সেনাবাহিনী কীভাবে এই সংকটের মোকাবিলা করবে, তা নিয়ে দেশজুড়ে উদ্বেগ বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পাকিস্তান যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে এ ধরনের সহিংসতা আরও বৃদ্ধি পাবে।
ন’মাস পর পৃথিবীতে ফিরছেন সুনীতা উইলিয়ামস! নাসা জানাল অবতরণের নির্দিষ্ট সময়