পাকিস্তানের উপর আকাশপথ বন্ধ করলে কী ঘটবে?
পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের উপর জঙ্গি হামলার ঘটনার পর ভারত যেভাবে কড়া পদক্ষেপ নিচ্ছে, তাতে দক্ষিণ এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশের সম্পর্কে আরও একবার চরম উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। পাকিস্তান পাল্টা ঘোষণা করেছে, ভারতের সঙ্গে সমস্ত বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করছে এবং ভারতীয় বিমানের জন্য আকাশসীমাও বন্ধ করেছে।
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, ভারত যদি একইভাবে পাকিস্তানের জন্য আকাশপথ বন্ধ করে দেয়, তাহলে তার প্রভাব কী হবে? বাস্তব বলছে, ক্ষতির মুখে পড়বে পাকিস্তানই।
ভারতীয় আকাশসীমা ব্যবহার করে কোন কোন পাক বিমান?
পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স (পিআইএ) সহ একাধিক বাণিজ্যিক ও পণ্যবাহী বিমান নিয়মিত ভারতের আকাশ ব্যবহার করে। বিশেষ করে আরব উপসাগর, মধ্যপ্রাচ্য এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াগামী বিমানগুলির রুট ভারতের উপর দিয়েই। ভারতের আকাশ বন্ধ হলে, সেই সব বিমানকে ঘুরপথে—ইরান, আফগানিস্তান বা মধ্য এশিয়ার আকাশ ব্যবহার করে যেতে হবে। ফলে বেড়ে যাবে যাত্রার সময়, জ্বালানি খরচ, আর সেইসঙ্গে টিকিটের দামও।
পিআইএ আরও সঙ্কটে
পিআইএ এমনিতেই তীব্র আর্থিক সংকটে। বিমানে অতিরিক্ত জ্বালানি বহন করতে হলে যাত্রীসংখ্যা বা পণ্য কমাতে হয়, ফলে আয় কমে যায়। ভারতের আকাশপথ বন্ধ হলে যে ঘুরপথ নিতে হবে, তাতে খরচ বাড়বে এবং আরও চাপ পড়বে তাদের উপর। এই পরিস্থিতিতে পিআইএর টিকে থাকা আরও কঠিন হয়ে পড়বে।
পাকিস্তানের বাণিজ্যেও পড়বে ধাক্কা
বিমানের মাধ্যমে পণ্য পরিবহণের সময় ও খরচ বৃদ্ধি পাক বাণিজ্যের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। ভারতের আকাশ ব্যবহার না করে আরও দীর্ঘপথে যাওয়া মানেই সময় ও অর্থ—দুটোরই অপচয়। এই ধাক্কা শুধু বিমান সংস্থাকে নয়, পরোক্ষভাবে প্রভাব ফেলবে পাকিস্তানের রফতানি ব্যবসায়েও।
আইসিএও-এর নিয়ম কি বলছে?
আন্তর্জাতিক অসামরিক বিমান চলাচল সংস্থা (ICAO)-এর নিয়ম অনুযায়ী, প্রতিটি সদস্য দেশ অন্য সদস্যদের আকাশসীমা ব্যবহারের অনুমতি দিতে বাধ্য। তবে জাতীয় নিরাপত্তার কারণে কোনও দেশ চাইলেই ওই নিয়ম থেকে সরে যেতে পারে। সুতরাং, পহেলগাঁও হামলার মতো ঘটনার পর ভারত যদি পাকিস্তানের জন্য আকাশসীমা বন্ধ করে দেয়, তাহলে তা নিয়মবিরুদ্ধ হবে না।
দুই দেশের টানাপোড়েন আরও বাড়ছে
পাকিস্তান ভারতের বিমান অবরোধের পাশাপাশি ভিসা বাতিল ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা দিয়েছে। ভারতও পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে সিন্ধু চুক্তি স্থগিত করেছে। এই অবস্থায় ভারত যদি বিমান চলাচলের পথ বন্ধ করে দেয়, তাহলে তা কেবল কূটনৈতিক বার্তা নয়, পাকিস্তানের অর্থনীতির উপর এক কষাঘাতও বটে।
উপসংহার
আকাশপথ বন্ধ করে দেওয়ার মতো কৌশলগত সিদ্ধান্ত শুধু প্রতীকী প্রতিবাদ নয়, বরং তা কার্যকরভাবে শত্রু দেশের অর্থনীতি এবং পরিকাঠামোয় চাপে ফেলতে পারে। পাকিস্তান এখন যে পথে চলছে, ভারত সেই একই পথে হাঁটলে সবচেয়ে বেশি ধাক্কা খাবে ইসলামাবাদই।
আপনার কী মনে হয়—ভারতের উচিত কি এবার পাল্টা আকাশপথ বন্ধ করে দেওয়া?
পহেলগাঁও হামলা: বলিউডের তারকাদের ক্ষোভের মুখে কেন্দ্রীয় সরকারকে তীব্র বার্তা

