পাকা পেয়ারার জাদু
আমসত্ত্ব খাওয়া হয়নি এমন বাঙালি পাওয়া দুষ্কর। কিন্তু আমের মতো সুস্বাদু সত্ত্ব পেয়ারাও যে তৈরি করা যায়, তা অনেকেই জানেন না। পাকা পেয়ারা ফেলে না দিয়ে কী ভাবে তাকে রূপ দেওয়া যায় আকর্ষণীয় মিষ্টান্নে? সেই দিশাই দেখালেন রন্ধনশিল্পী পঙ্কজ ভাদুড়িয়া। তাঁর বিশেষ রেসিপিতে পেয়ারার স্বাদ বদলে যায় একেবারে নতুন রূপে—টক, ঝাল আর মিষ্টির মিশেলে তৈরি হয় মনকাড়া ‘পেয়ারাসত্ত্ব’। এক বার চেখে দেখলে কোনোভাবেই বুঝতে পারবেন না যে এটি সাধারণ পাকা পেয়ারার থেকেই তৈরি।
বাজার থেকে আনা পেয়ারাগুলি ফ্রিজে পড়ে থাকতে থাকতে অনেক সময়ই নরম হয়ে যায়। নরম পেয়ারায় অধিকাংশেরই আর খিদে থাকে না—উপভোগ করে কেবল বাড়ির পোষা পাখিরাই। কিন্তু পাখিটা একা কতই বা খাবে! ফলে অনেকেই সেই ফল ফেলে দিতে বাধ্য হন। এ সমস্যারই সহজ সমাধান খুঁজে দিয়েছেন পঙ্কজ—বাড়িতেই বানিয়ে নিন মজাদার পেয়ারাসত্ত্ব। পাকা পেয়ারাকে সংরক্ষণের এই উপায় যেমন সুস্বাদু, তেমনই স্বাস্থ্যকর।
আবশ্যিক উপকরণ
- পাকা পেয়ারা — ৩টি
- চিনি — আধ কাপ
- লেবুর রস — ১টি লেবুর
- গোলমরিচ গুঁড়ো — ১ চা চামচ
- লঙ্কাগুঁড়ো — ১ চা চামচ
- বিটনুন — স্বাদমতো
- ফুড কালার (ঐচ্ছিক) — ২-৩ ফোঁটা
- মাখন — ১ চা চামচ
প্রস্তুত প্রণালি
১. পেয়ারা সেদ্ধ করা:
প্রথমে পেয়ারাগুলি ধুয়ে ছোট ছোট টুকরো করে কেটে কুকারে আধ কাপ জল দিয়ে সেদ্ধ করতে হবে। পেয়ারা নরম হয়ে এলে জল ঝরিয়ে আলাদা করে ঠান্ডা করুন।
২. মিশ্রণ তৈরি:
ঠান্ডা পেয়ারা মিক্সিতে ভালো করে ব্লেন্ড করে একটি মিহি পিউরি তৈরি করুন। এরপর ছাঁকনির সাহায্যে ছেঁকে নিন যাতে বীজের অংশ বাদ পড়ে।
৩. ফুটিয়ে নেওয়া:
ননস্টিক কড়াই বা প্যানে পেয়ারার পিউরি ঢেলে দিন। তাতে চিনি, বিটনুন, গোলমরিচ গুঁড়ো, লঙ্কাগুঁড়ো এবং লেবুর রস মেশান। মাঝারি আঁচে নাড়তে থাকুন যতক্ষণ না মিশ্রণটি ফুটে ওঠে।
৪. রঙ ও মাখন যোগ:
মিশ্রণ ঘন হতে শুরু করলে ফুড কালার ও মাখন দিন। মাখন দিলে সত্ত্বটি প্যান থেকে সহজে ছাড়ে এবং টেক্সচারও মোলায়েম হয়।
৫. শুকিয়ে নেওয়া:
কড়াই থেকে মিশ্রণ ছাড়তে শুরু করলে গ্যাস বন্ধ করুন। একটি স্টিলের থালা বা ট্রেতে হালকা তেল মেখে পেয়ারার মিশ্রণ পাতলা করে ছড়িয়ে দিন। পুরোপুরি ঠান্ডা হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন।
৬. কাটা ও রোল তৈরি:
জমে গেলে ছুরি দিয়ে চৌকো টুকরো করুন। এক একটি টুকরো রোল করে নিলে দেখতে আরও আকর্ষণীয় লাগবে।
কেন বিশেষ এই পেয়ারাসত্ত্ব?
- পাকা ফল সংরক্ষণের দারুণ উপায়
- শিশুদের জন্য স্বাস্থ্যকর এবং টিফিন-সুলভ খাবার
- শীতের দুপুরে টক-ঝাল-মিষ্টির নিখুঁত মিল
- অতিথি আপ্যায়নেও ব্যবহার করা যায় বাড়তি চমক হিসেবে
ফ্রিজে রেখে কয়েক দিন সহজেই সংরক্ষণ করা যায়। খাবার সময় টক-মিষ্টি সুবাসে ভরে উঠবে মুখ।

